বাড়ির জানলা দিয়ে অ্যাসিড হামলা, জখম

দিনদুপুরে অ্যাসিড হামলার ঘটনায় উত্তেজনা ছড়ালো শিয়ালদহ-বনগাঁ শাখায় বিরাটি স্টেশন সংলগ্ন বস্তিতে। গ্লাস ভর্তি অ্যাসিড গায়ে লাগায় গুরুতর জখম তিন জনকে প্রথমে উত্তর দমদম পুরসভার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৬ ০১:৩৬
Share:

দিনদুপুরে অ্যাসিড হামলার ঘটনায় উত্তেজনা ছড়ালো শিয়ালদহ-বনগাঁ শাখায় বিরাটি স্টেশন সংলগ্ন বস্তিতে। গ্লাস ভর্তি অ্যাসিড গায়ে লাগায় গুরুতর জখম তিন জনকে প্রথমে উত্তর দমদম পুরসভার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁদের স্থানান্তরিত করা হয় আরজিকরে। গ্রেফতার করা হয়েছে অ্যাসিড হামলায় অভিযুক্ত দিলীপ কর্মকার ওরফে পল্টুকে।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, শুক্রবার দুপুর পৌনে তিনটে নাগাদ বিরাটি স্টেশনের এক নম্বর প্লাটফর্ম লাগোয়া বস্তি কমল পার্কের এক কামরার ঘরে শুয়েছিলেন বছর তিরিশের গীতা কামাল। বিছানার এক পাশে বসে বন্ধু রাকেশ মজুমদারের সঙ্গে লুডো খেলছিল গীতাদেবীর ছোট ছেলে সুরজিৎ। অভিযোগ, ঠিক তখনই খোলা জানালা দিয়ে গ্লাস ভর্তি অ্যাসিড ছোড়ে দিলীপ। সুরজিতের শরীরের অনেকটা অংশ পুড়ে যায়। রাকেশেরও গায়ে লাগে। অ্যাসিড ছিটকে গিয়ে লাগে শুয়ে থাকা গীতাদেবীর মুখে ও শরীরের উপরের অংশে। যন্ত্রণায় চিৎকার করতে থাকেন তাঁরা। প্রতিবেশীরা চিৎকার শুনে ঘরে ঢুকে দেখেন অ্যাসিডে পুড়ে গিয়েছে তিন জনেরই শরীরের বেশ কিছুটা অংশ। দিলীপকে পালাতে দেখে তাড়া করে ধরে ফেলেন কয়েক জন। এক নম্বর প্ল্যাটফর্মের ধারে মাটিতে ফেলে তাকে মারধরও করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, মারের সময়ে বিরাটির একটি সোনার দোকানের কর্মী দিলীপ স্বীকার করেছে, যে দোকানে সে কাজ করে, সেখান থেকেই নাইট্রিক অ্যাসিড চুরি করে এনেছিল।

পুলিশের অনুমান, গীতাদেবীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তৈরির চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েই আক্রোশের জেরে এই ঘটনা ঘটিয়েছে ওই ব্যক্তি। অভিযোগ, এর আগেও এক বার গীতাদেবীর উপরে আক্রমণের চেষ্টা করেছিল মধ্য পঞ্চাশের দিলীপ। বছর দুয়েক আগে গীতাদেবীর স্বামী রং মিস্ত্রী মন্টুবাবুর সঙ্গে বন্ধুত্ব হয় দিলীপের। মন্টুবাবুর সঙ্গে গল্প করতে বাড়িতে যাতায়াতও বাড়ে দিলীপের। মন্টু রঙের কাজে বাইরে গেলেও দিলীপের ওই বাড়িতে যাতায়াতটা প্রথম দিকে নিয়মিত ছিল বলেই জানান প্রতিবেশীরা।

Advertisement

এ দিন ঘটনার পরে গীতাদেবীর বড় ছেলে শুভজিৎ বলে, ‘‘ওই কাকুটা বাবার বন্ধু ছিল। বাবা না থাকলেও মাঝেমাঝে বাড়িতে চলে আসত। মা বিরক্ত হতো। এক দিন তো রাতে বিছানা করার পরে লোকটা এসে শুয়েও পড়েছিল। মা খুব বকাবকি করায় চলে গিয়েছিল। পরে আবার এক দিন বাড়িতে এলে বাবা জানতে পেরে বকাবকি করে ওকে বার করে দিয়েছিল। সেই থেকেই আমাদের উপরে রাগ।’’ অভিযোগ, মাস ছয়েক আগেও এক বার অ্যাসিড হামলা চালিয়েছিল দিলীপ। কিন্তু সে বার ঘরে কেউ না থাকায় কারও ক্ষতি হয়নি।

ব্যারাকপুর কমিশনারেটের এক কর্তা বলেন, ‘‘ওই মহিলা লোকটিকে পল্টুদা বলে ডাকতেন। কিন্তু দাদা সম্বোধনটি পছন্দ ছিল না অভিযুক্তের। অ্যাসিড হামলায় অভিযুক্ত পল্টু আদতে বাংলাদেশি কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, বছর দুয়েকের মধ্যে ওই এলাকায় বেশ কয়েক বার বাড়ি বদলেছে দিলীপ। সম্প্রতি ওই এলাকায় একটি ঘরে একাই থাকছিল। ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের গোয়েন্দা প্রধান অজয় ঠাকুর বলেন, ‘‘লোকটির বিষয়ে বিশদে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। অ্যাসিড হামলার অভিযোগ হয়েছে। আইনি পদক্ষেপ করা হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন