বিক্রমের ঠিকানা প্রেসিডেন্সি জেল

পুলিশ সূত্রের খবর, রাত দু’টো থেকে চারটে অবধি লেক মার্কেটের কাছের শপিং মল ও কসবার সুইনহো লেনের কাছে বিক্রমকে নিয়ে ঘোরাঘুরি করেন তদন্তকারীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৭ ০৪:০২
Share:

বন্দি: পুলিশ ভ্যানে অভিনেতা বিক্রম চট্টোপাধ্যায়। আলিপুর কোর্ট থেকে প্রেসিডেন্সি জেলের পথে। সোমবার। ছবি: সুমন বল্লভ

সাদা গেঞ্জি, কালো প্যান্টের ছিপছিপে যুবককে কোর্ট-চত্বরে যে খুব ক্লান্ত দেখাচ্ছিল তা নয়। তবে রবিবার রাতটা কার্যত ঘুমোনোর সুযোগই পাননি বিক্রম চট্টোপাধ্যায়। পুলিশ তাঁকে নিয়ে বেরিয়েছিল দুর্ঘটনাস্থল ও তার আশপাশের এলাকা ঘুরে দেখতে।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, রাত দু’টো থেকে চারটে অবধি লেক মার্কেটের কাছের শপিং মল ও কসবার সুইনহো লেনের কাছে বিক্রমকে নিয়ে ঘোরাঘুরি করেন তদন্তকারীরা। ওই রাতের মোবাইল টাওয়ার লোকেশন অনুযায়ী, তাঁরা কোথায় কোথায় গিয়েছিলেন, তা বিক্রমকে সঙ্গে নিয়ে যাচাই করার চেষ্টা করে পুলিশ। সোমবার আলিপুর কোর্টে বিক্রমকে ২৪ জুলাই পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। সন্ধেয় তাঁকে প্রেসিডেন্সে জেলে নিয়ে যাওয়া হয়। এ দিন পুলিশের তরফে তাঁকে আর হেফাজতে চাওয়া হয়নি।

এ দিন বিক্রমের জামিনের পক্ষে-বিপক্ষে চাপান-উতোর চলে মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট সৌগত রায়চৌধুরীর এজলাসে। বিক্রমের আইনজীবী রাজদীপ মজুমদার এবং অনির্বাণ গুহঠাকুরতা প্রশ্ন তোলেন, হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন এবং শুনানির দিন ধার্য হওয়া সত্ত্বেও বিক্রমকে গ্রেফতারের কারণ কী? ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জামিন মঞ্জুর করার আবেদনও জানান আইনজীবীরা।

Advertisement

সরকারি কৌঁসুলি সৌরীন ঘোষাল সেই আবেদনের বিরোধিতা করে বলেন, বিক্রম প্রভাবশালী। তাঁকে জামিন দেওয়া হলে তিনি সাক্ষীদের প্রভাবিত করতে পারেন। জবাবে বিক্রমের আইনজীবীরা বলেন, তদন্তে বিক্রম সহযোগিতা করেছেন। কিন্তু সরকারি কৌঁসুলির বক্তব্য, বিক্রম জিজ্ঞাসাবাদের সময় পুলিশকে বারবার বিপথে চালিত করেছেন। যেমন, প্রথমে তিনি মদ খাওয়ার কথা স্বীকার করেননি। তিনি বলেছিলেন অন্য একটি গাড়িকে পাশ কাটাতে গিয়েই দুর্ঘটনা ঘটে। পরে তিনি বলেন, ট্রাম লাইনে পিছলে দুর্ঘটনা ঘটেছে। বিক্রম দাবি করেছিলেন, গাড়ি জোরে চালাচ্ছিলেন না। অথচ ফরেন্সিক রিপোর্ট বলছে, গাড়ির গতি ছিল ঘণ্টায় ১০৫ কিলোমিটার।

আরও পড়ুন: মমতা-গুরুঙ্গ বৈঠক চায় দিল্লি

শেষ পর্যন্ত বিক্রমকে জেল হেফাজতে পাঠানোরই নির্দেশ আসে। তাতে সন্তোষ প্রকাশ করে সোনিকার মা-বাবার তরফে আইনজীবী সঞ্জয় বসু বলেন, ‘‘সুবিচারের পথে আরও কয়েক কদম আমরা এগোলাম।’’

তদন্তকারী এক অফিসার পরে বলেন, ‘‘দুর্ঘটনার রাতে বিক্রম-সোনিকার ৃমন কষাকষি হয়েছিল কি না, সেটা জানতে চেষ্টা করছি। বিষয়টায় এখনও ধোঁয়াশা আছে। তবে বিক্রম যে মদ্যপান করে বেপরোয়া গাড়ি চালাচ্ছিলেন, তার জোরালো তথ্যপ্রমাণ হাতে রয়েছে।’’

প্রেসিডেন্সি জেল সূত্রের খবর, বিক্রমকে আর পাঁচজন নতুন বন্দির সঙ্গে আমদানি ওয়ার্ডেই রাখা হয়েছে। বরাদ্দ হয়েছে কম্বল, থালা ও গেলাস। রাতে জেলের রুটি-তরকারিই দেওয়া হয়েছে তাঁকে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement