বিক্রম চট্টোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
আম-বন্দিরা যে-খাবার পান, সেই খাবার খেয়েই প্রেসিডেন্সি জেলের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে প্রথম দিনটা কাটালেন অভিনেতা বিক্রম চট্টোপাধ্যায়। দুপুরে খেলেন আলু, পেঁপে, বেগুন ও করলা দিয়ে তৈরি শুক্তো, মটর ডাল ও ভাত এবং রাতে রুটির সঙ্গে কাঁকরোল-আলুর তরকারি আর মটর ডাল। এ ছাড়া সকালে-বিকেলে বন্দিদের জন্য বরাদ্দ চা-বিস্কুটও খেয়েছেন বিক্রম।
আদালতের নির্দেশে সোমবার সন্ধ্যা থেকে বিক্রমের ঠিকানা হয়েছে প্রেসিডেন্সি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার। নতুন বন্দিরা এলে যেখানে রাখা হয়, সোমবার রাতে তাঁকে সেই ‘আমদানি ওয়ার্ড’-এ রাখা হয়েছিল। এ দিন সেখানেই ছিলেন। যা আসলে প্রেসিডেন্সি জেলের ৫ নম্বর ওয়ার্ড। সঙ্গী বলতে দু’টি কম্বল, বিছানার চাদর, একটি থালা, গ্লাস এবং বাড়ি থেকে পাঠানো কিছু শুকনো খাবার, জামাকাপড় ও জিনিসপত্র।
প্রেসিডেন্সি জেলের রক্ষীরা জানান, দিনভর কারও সঙ্গে বিশেষ কথাবার্তা বলেননি বিক্রম। ওই ওয়ার্ড থেকে বাইরেও খুব একটা বেরোননি। শুধু এক বার তাঁকে ওখান থেকে বার করে জেল সুপারের ঘরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানে বেশ কিছু ক্ষণ বসে ছিলেন তিনি। এক কারারক্ষীর কথায়, ‘‘ওঁকে দেখে খুবই মনমরা মনে হয়েছে। নিজের থেকে কারও সঙ্গে কথা তো বলছেনই না। কেউ কথা বলতে গেলে প্রয়োজন ছাড়া খুব একটা উত্তরও দিচ্ছেন না।’’ কারা দফতরের কর্তারা জানান, অন্য বন্দিরা একটু-আধটু ওয়ার্ডের আশেপাশে ঘোরাফেরা করেন। অনেকে ক্যান্টিনে গিয়ে নিজের টাকায় কিছু খাবার কিনেও খান। বিক্রম কিন্তু ও-সবের ধার দিয়েও যাননি।
আরও পড়ুন: তিন মিছিল আর সভায় আজ জট কলকাতায়
জেলে বিক্রমের সঙ্গে দেখা করতে যান তাঁর বাড়ির লোকেরা। কিন্তু জেলের নিয়ম মেনে এ দিন তাঁরা দেখা করতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেন জেল-কর্তৃপক্ষ। কিছু ক্ষণ অপেক্ষা করার পরে তাঁরা ফিরে যান।
এক কারারক্ষী বলেন, ‘‘জেলে ঢোকার সময়ে কর্তৃপক্ষের তরফে বলে দেওয়া হয়েছিল, ভিতরে অনেক প্রলোভন আছে। সে-সবে উনি যেন পা না-দেন। সে-সবের জন্যই বোধ হয় উনি একটু জড়সড় হয়ে রয়েছেন। সাবলীল হতে একটু সময় লাগবে।’’
কারা দফতর সূত্রের খবর, জেলে ঢোকার পরে বিক্রমের রুটিন মেডিক্যাল চেক-আপ বা স্বাস্থ্যপরীক্ষা হয়েছে। উনি এমনিতে ভালই আছেন। তবে ওঁর উপরে ২৪ ঘণ্টা নজরদারির ব্যবস্থা হয়েছে। কোনও উটকো বন্দি কিংবা কুখ্যাত কেউ যাতে কোনও ভাবেই বিক্রমকে বিরক্ত করতে না-পারে, সে-দিকে নজর রাখতে বলা হয়েছে ওই জেলের রক্ষীদের।