ভেজাল মশলা তৈরির যন্ত্র। (ডান দিকে) এ ভাবেই প্যাকেট করে বাজারে বিকোচ্ছিল ভেজাল মশলা। নিজস্ব চিত্র
ভেজাল দুধ, ভেজাল ঘিয়ের পরে এ বার শহরে খোঁজ মিলল ভেজাল গুঁড়ো মশলা তৈরির কারখানার।
পুলিশ জানিয়েছে, জোড়াবাগান থানার কাশী দত্ত স্ট্রিটে ওই কারখানার খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। সেখান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে প্রায় ১২০০ কেজি ভেজাল মশলা এবং তা তৈরির বিভিন্ন উপকরণ। ভেজাল হলুদ, জিরে এবং ধনে গুঁড়ো তৈরির জন্য ওই কারখানায় মজুত ছিল বিভিন্ন রাসায়নিক, নিম্ন মানের চালের গুঁড়ো, চালের খোসা বা তুষ। এ ছাড়াও ধুলোর মতো কয়েক বস্তা গুঁড়ো উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওই মিশ্রণ ব্যবহার করে জিরের গুঁড়ো তৈরি করা হচ্ছিল। একই সঙ্গে নিম্ন মানের চালের গুঁড়োর সঙ্গে রাসায়নিক এবং হলুদ রং মিশিয়ে তৈরি করা হচ্ছিল হলুদের গুঁড়ো। তবে কারখানা থেকে উদ্ধার হওয়া কয়েকটি বস্তায় থাকা গুঁড়ো ‘ধুলো’ না কি অন্য উপকরণ, তা জানতে সেগুলি ফরেন্সিক পরীক্ষায় পাঠানো হচ্ছে।
ওই কারখানাটি থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে জোড়াবাগান থানা। তা সত্ত্বেও পুলিশ ওই কারখানার কথা কেন জানতে পারেনি, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সূত্রের খবর, মঙ্গলবার সকালে ওই কারখানায় হানা দিয়ে কলকাতা পুলিশের এনফোর্সমেন্ট শাখার (ইবি) গোয়েন্দারা এক জনকে গ্রেফতার করেছেন। ধৃতের নাম পঙ্কজকুমার সাউ। সে ওই কারখানার মালিক বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, সম্প্রতি তাঁরা বিভিন্ন মাধ্যম থেকে খবর পাচ্ছিলেন, পোস্তা-বড়বাজার সংলগ্ন এলাকায় ভেজাল রান্নার মশলা তৈরি করা হচ্ছে। যা শহরের বিভিন্ন দোকানে সরবরাহ করা হচ্ছে কম দামে। সেই মতো ইবি-র তদন্তকারীরা ওই সব এলাকায় নজরদারি শুরু করেন। তখনই তাঁরা জানতে পারেন, কাশী দত্ত স্ট্রিটের একটি বাড়ির একতলায় তৈরি হচ্ছে ভেজাল মশলা। এ দিন ওই কারখানায় যখন গোয়েন্দারা হানা দেন, তখনও সেখানে ভেজাল মশলা তৈরি করা হচ্ছিল। দু’টি যন্ত্রের সাহায্যে হলুদ, জিরে ও ধনে গুঁড়ো তৈরি করছিল ধৃত পঙ্কজ।
এক তদন্তকারী অফিসার জানান, ওই কারখানার সঙ্গে আরও অনেকে জড়িত। তাদের খোঁজ করা হচ্ছে। এর আগে পোস্তা এবং বড়বাজার অঞ্চলে ভেজাল দুধ ও ঘি তৈরির চক্রের সন্ধান মিলেছিল। তার সঙ্গে এ বার যোগ হল ভেজাল মশলা।