আগুনের গ্রাস। শুক্রবার। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
সকালে আগুন লেগেছিল স্টেশনের ফুডপ্লাজায়, সন্ধ্যায় ফের আগুন লাগল হাওড়া শহরেই। পুড়ে গেল জিটি রোডের উপরে এক বহুতল বাড়ির ভিতরে চলা প্লাস্টিকের খেলনা তৈরির কারখানা ও গুদাম। শুক্রবার এই ঘটনায় ওই বহুতলের বাসিন্দা দুই মহিলা অল্প জখম হয়েছেন। সকালে ফুডপ্লাজার রান্নাঘরে কেউ হতাহত না হলেও অগ্নিযুদ্ধ চলে ঘণ্টাখানেক।
গত কয়েক দিন ধরে শহর জুড়ে একের পর এক অগ্নিকাণ্ডে নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। হাওড়া শিল্পাঞ্চলে কতগুলি কারখানা ‘জতুগৃহ’ হয়ে রয়েছে সে বিষয়ে পুরসভার কাছ থেকে একটি তালিকাও চেয়ে পাঠিয়েছেন দমকলমন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়। এর মধ্যেই ঘিঞ্জি এলাকার বসত বাড়িতে চলা দাহ্য বস্তুর কারখানা ও গুদামে আগুন লাগায় ফের প্রশ্ন উঠল পুরসভার নজরদারি নিয়ে। এলাকার তৃণমূল কাউন্সিলর সৈকত চৌধুরী অবশ্য এত দিন বিষয়টি সম্পর্কে অবগত ছিলেন না বলেই দাবি করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘বসত বাড়ির মধ্যে এমন কারখানা, গুদাম রয়েছে বলে জানতাম না। খতিয়ে দেখতে হবে ট্রেড লাইসেন্স ছিল কি না। থাকলে কে দিয়েছিল, তার-ও তদন্ত হবে।’’
স্থানীয় সূত্রের খবর, শিবপুরে দীনবন্ধু কলেজের ঠিক উল্টো দিকেই ওই চারতলা বাড়ি। এর গা ঘেঁষেই রয়েছে আরও অনেক বহুতল। এ দিন সন্ধ্যায় স্থানীয়েরা দেখেন বাড়িটির দোতলা থেকে গলগল করে ধোঁয়া বেরোচ্ছে। কিছুক্ষণেই মহিলাদের চিৎকার শোনা যায়। তা শুনেই কয়েক জন যুবক বারান্দার রেলিং বেয়ে উপরে ওঠার চেষ্টা করেন। তাঁদেরই এক জন সিরাজ খান বলেন, ‘‘কিছুটা উঠতেই জানলা দিয়ে দেখলাম ভিতরে দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে। তাই নেমে আসি।’’
বহুতলের তিনতলায় আটকে ছিলেন দু’জন মহিলা ও এক শিশু। সিরাজ পাশের একটি নির্মীয়মাণ বাড়ির তিনতলায় গিয়ে তাঁদেরকে ছাদে আসতে বলেন। সেখান থেকেই তাঁদের নির্মীয়মাণ বাড়ির ছাদে আনা হয়। এ ভাবেই ওই বহুতল থেকে আরও চার মহিলাকে উদ্ধার করেন স্থানীয়েরা। ধোঁয়ায় দু’জন অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে দমকলের ৬টি ইঞ্জিন এসে প্রায় আড়াই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনার সময়ে অবশ্য প্লাস্টিকের খেলনা তৈরির কারখানা ও গুদামটি বন্ধ ছিল।