যেখানে ছিলেন, সেখানেই আছেন।
দুর্ভোগ, সমালোচনা, বিক্ষোভ— কিছুই তাঁকে টলাতে পারেনি। তিনি কলকাতার মেট্রো রেল ব্যবস্থা।
বিগত কয়েক দিন ধরেই অফিসযাত্রীদের দুর্ভোগের নতুন নাম মেট্রো রেল।
মঙ্গলবার সকাল ১০টা ২৯ মিনিটে যখন ট্রেন শ্যামবাজার স্টেশনে এসে দাঁড়াল, তখন দরজা খোলার আগেই স্কুলপড়ুয়া ও তাদের মায়েরা চিৎকার করতে শুরু করলেন, ‘আগে উঠবেন না। প্লিজ আমাদের নামতে দিন।’ এই ‘স্লোগান’ দিতে দিতেই কোনও রকমে এক দল সবে প্ল্যাটফর্মে ‘লাফ’ দিতে যাচ্ছেন, অপেক্ষমান অন্য দল ঝাঁপিয়ে পড়ল ট্রেনের কামরায়। এই ‘লম্ফঝম্প’র জেরে এক জনের হাতের গুঁতোয় চশমা পড়ে গেল এক যাত্রীর। সেই চশমা উদ্ধারে অবশ্য শেষমেশ ব্যর্থই হলেন ওই ‘মেট্রো যোদ্ধা’।
গিরিশ পার্কে ভিড় ঠেলে উঠতে গিয়ে এক যাত্রী ট্রেনের ‘মাটি’র স্পর্শ না পেয়ে পাশের যাত্রীর পায়ের উপরেই দাঁড়িয়ে পড়লেন। তৎক্ষণাৎ ওই যাত্রী ‘বাবা গো!’ বলে আরও এক যাত্রীকে ধাক্কা দিতেই বেধে গেল ‘খণ্ডযুদ্ধ’। এই ভাবেই কেউ চললেন চাঁদনি চক, কেউ আবার রবীন্দ্র সদনের দিকে।
দুর্গাপুজোর আর দিন দশেক বাকি। যার জেরে রাস্তায় বাস-ট্রাম-গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকছে দীর্ঘক্ষণ। যানজটে নাজেহাল হচ্ছেন শহরবাসী। ব্যস্ত সময়ে যানজট এড়াতে অনেকেই বেছে নেন পাতালযাত্রা। কিন্তু সে যাত্রাও কার্যত দু্র্বিষহ হয়ে উঠেছে। সপ্তাহ শুরুর দ্বিতীয় দিনেও মেট্রো যাত্রা মোটেও সুখকর হল না কলকাতাবাসীর। সকাল সাড়ে ন’টার পর থেকেই উত্তর বা দক্ষিণমুখী ট্রেনের ভিড় বাড়তে শুরু করে। যাত্রীদের অভিযোগ, এমন ব্যস্ত সময়ে কোনও রকম ঘোষণা ছাড়াই দমদম থেকে কবি সুভাষগামী একের পর এক ট্রেন বাতিল হতে শুরু করে। শ্যামবাজার স্টেশনের ঘড়িতে ভেসে উঠছে সকাল ১০:২৩ মিনিটে কবি সুভাষগামী ট্রেন আসবে। কিন্তু ২৩ পেরিয়ে ২৫ হয়ে গেলেও ট্রেনের দেখা মেলেনি। কয়েক সেকেন্ড পরে ফের স্টেশনের ঘড়িতে ভেসে ওঠে পরের ট্রেনের সময়, সকাল ১০:২৯ মিনিট। কিন্তু কেন সময় মতো ট্রেনের দেখা নেই? ট্রেন কি বাতিল হল? যদি হয়, তা হলে কেনই বা হল? — এমন অনেক প্রশ্ন উঠলেও জবাব মেলেনি কর্তৃপক্ষের কাছে।