বারবার ছাত্র সংঘর্ষের কারণে এর আগে একাধিক বার শিরোনামে এসেছে জয়পুরিয়া কলেজ। সম্প্রতি সেখানকার এক শিক্ষককে নিগ্রহ করার অভিযোগ উঠেছিল কয়েক জন যুবকের বিরুদ্ধে। এ বার নিগৃহীত হলেন কলেজের অধ্যক্ষ।
গত মাসেই রাতের অন্ধকারে জয়পুরিয়া কলেজের সান্ধ্য বিভাগের শিক্ষক অশ্বিনীকুমার রায়কে মারধর করার অভিযোগ উঠেছিল। আর সোমবার ভরদুপুরে রাস্তার মধ্যেই নিগৃহীত হলেন দিবা বিভাগের অধ্যক্ষ অশোক মুখোপাধ্যায়। এ ক্ষেত্রেও অভিযোগ সেই ‘অজ্ঞাতপরিচয়’-দের বিরুদ্ধে।
কী ঘটেছিল এ দিন? অশোকবাবু জানিয়েছেন, কলেজ যাওয়ার জন্য তিনি দুপুর দেড়টা নাগাদ ফুলবাগানের বাড়ি থেকে বেরোন। রাজা দীনেন্দ্র স্ট্রিটে সিগন্যালে তাঁর গাড়ি যখন দাঁড়িয়ে ছিল, সে সময়ে আচমকাই গাড়ির পাশে এসে দাঁড়ায় বছর বাইশের দুই যুবক। অশোকবাবুর অভিযোগ, আচমকাই তারা টেনে গাড়ির দরজা খুলে ফেলে। এর পরে তাঁকে এলোপাথাড়ি কিল-ঘুষি মারতে শুরু করে। হকচকিয়ে যান অশোকবাবু। তিনি জানিয়েছেন, ওই যুবকদের মুখ কাপড় দিয়ে ঢাকা ছিল। ঘটনার পরে অবশ্য ওই তল্লাটে দেখা যায়নি যুবকদের।
অধ্যক্ষ জানান, কলেজে গিয়ে অন্য শিক্ষকদের সঙ্গে পরামর্শ করে তিনি নারকেলডাঙা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু কারা কী উদ্দেশ্যে তাঁর উপরে চড়াও হল? অশোকবাবু বলেন, ‘‘আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। আমার সঙ্গে কারও ব্যক্তিগত শত্রুতা নেই।’’ এ দিন সন্ধ্যায় বাড়িতে বসেও তিনি বলেন, ‘‘আমার অধ্যাপনা জীবনে এমন ঘটনা ঘটেনি।’’
এর আগে কলেজের সান্ধ্য বিভাগের শিক্ষক অশ্বিনীকুমার রায়কে মারধরের ঘটনায় তিনি অভিযোগ করেছিলেন, তাঁকে যারা মারধর করেছিল, তাঁদের মুখ কালো কাপড়ে ঢাকা থাকায় তিনি শনাক্ত করতে পারেননি। সোমবারের ঘটনাতেও একই অভিযোগ করেছেন অশোকবাবু।
উল্লেখ্য, কলেজে ছাত্র সংঘর্ষের জেরে কয়েক সপ্তাহ আগেই পদত্যাগ করতে চেয়েছিলেন তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষা নন্দিতা চক্রবর্তী। সেই ঘটনার পরে শিক্ষা দফতরের হস্তক্ষেপে কলেজের পরিচালন সমিতি থেকে সরতে হয়েছে মন্ত্রী শশী পাঁজাকে। পুরনো ঘটনার জেরেই কি এ দিনের শিক্ষক-নিগ্রহ?
অশোকবাবু জানান, অসুস্থতার কারণে তিনি তিন মাস ছুটিতে ছিলেন। ফলে পুরনো ঘটনার সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্ক নেই। তবে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অধ্যক্ষ যদি কলেজের কারওর বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট অভিযোগ করতে পারেন, তা হলে অবিলম্বে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রশাসনকে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করব।’’