জোড়হস্ত: বিক্ষুব্ধ অভিভাবকদের মাঝখানে বিডি মেমোরিয়াল স্কুলের অধ্যক্ষা বিজয়া চৌধুরী। বুধবার কামালগাজিতে। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল
মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং স্কুলে হুটহাট ফি বৃদ্ধির রাশ টানতে চাইলেও তাতে যে বিশেষ কাজ হয়নি, বুধবার তার প্রমাণ মিলল কলকাতার উপকণ্ঠেই। ফি বৃদ্ধির জেরে তুলকালাম বেধে গেল গড়িয়ার কাছে কামালগাজির বিডি মেমোরিয়াল স্কুলে। তুমুল বিক্ষোভ দেখালেন অভিভাবকেরা। পথ অবরোধ করা হয় দফায় দফায়। শেষ পর্যন্ত স্কুল-কর্তৃপক্ষ বাড়তি ফি না-নেওয়ার আশ্বাস দেওয়ার পরে আন্দোলন প্রত্যাহার করা হয়।
অভিভাবকদের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেসরকারি স্কুলগুলিকে বেশি ফি নিতে বারণ করছেন। অথচ তাঁদের অতিরিক্ত হারে ফি দিতে বাধ্য করানো হচ্ছে। অভিযোগ, অভিভাবকেরা বাড়তি ফি নেওয়ার বিরুদ্ধে কথা বলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁদের সেই সুযোগ দেওয়া হয়নি। বহিরাগতদের নিয়ে অভিভাবকদের মারধর করা হয়েছে বলেও অভিযোগ। তার পরেই অভিভাবকেরা দফায় দফায় নেতাজি সুভাষ বোস রোড অবরোধ করেন। ব্যস্ত সময়ের অবরোধে দুর্ভোগে পড়েন মানুষ। মঙ্গলবারেও একই কারণে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান অভিভাবকেরা। স্কুলের অধ্যক্ষা অবশ্য অভিভাবকদের উপরে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেন।
ওই স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে জুয়েলি রায়ের সন্তান। জুয়েলিদেবী এ দিন জানান, স্কুল-কর্তৃপক্ষ আচমকাই পুজোর আগে ফি বাড়িয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘প্রতিবাদ করায় মারধর করা হয় অভিভাবকদের। ইটপাটকেল ছোড়া হয়।’’ অভিভাবক মহলের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রীও বেসরকারি স্কুলগুলিতে অস্বাভাবিক হারে ফি নেওয়ার বিরোধী। ইতিমধ্যেই বেশ কিছু বেসরকারি স্কুলকে নিয়ে বৈঠক করেছেন তিনি। অতিরিক্ত ফি নেওয়ার বিষয়টি দেখতে তৈরি করে দিয়েছেন ‘সেল্ফ রেগুলেটরি কমিশন’। তাঁর এই উদ্যোগ সত্ত্বেও ফি বৃদ্ধি করে চলেছে কিছু স্কুল।
স্কুল-কর্তৃপক্ষ শেষ পর্যন্ত ফি কমানোর আশ্বাস দেন। অধ্যক্ষা বিজয়া চৌধুরী বলেন, ‘‘সিবিএসই বোর্ডের নিয়ম অনুযায়ী বছরে ১০% ফি বাড়ানো যায়। ৫১ বছরের পুরনো স্কুলের পরিকাঠামোর কিছু সংস্কার করতে হয়েছে। তাই বছরে ১৬% ফি বাড়ানো হয়েছিল। কিন্তু অভিভাবকদের চাপে ফি কমাতে বাধ্য হলাম।’’ স্কুল-কর্তৃপক্ষ জানান, বর্ধিত ফি নেওয়া হবে না। অধ্যক্ষা জানান, যা পরিস্থিতি, তাতে গত বছরের তুলনায় পড়ুয়ারা কম ফি দেবে। কারণ অভিভাবকেরা সেশন চার্জ দিতে রাজি নন। দেবেন শুধু টিউশন ফি।