আরও পাঁচ অভিযুক্ত অধরা, দেহ আটকে বিক্ষোভ ধাপায়

বাড়ির কাছেই সোমবার সকালে দুষ্কৃতীদের হাতে খুন হয়েছিলেন ধাপার হাটগাছিয়ার যুবক তারক মণ্ডল (৩০)। ঘটনার পরে ২৪ ঘণ্টা কেটে গেলেও মাত্র এক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০১৯ ০০:২৩
Share:

জমায়েত: তারক মণ্ডলের খুনে অভিযুক্তদের মধ্যে গ্রেফতার হয়েছে এক জন। মঙ্গলবার বাকিদের দ্রুত ধরার দাবি তোলেন স্থানীয়েরা। (ইনসেটে) তারক মণ্ডল। ছবি: রণজিৎ নন্দী

বাড়ির কাছেই সোমবার সকালে দুষ্কৃতীদের হাতে খুন হয়েছিলেন ধাপার হাটগাছিয়ার যুবক তারক মণ্ডল (৩০)। ঘটনার পরে ২৪ ঘণ্টা কেটে গেলেও মাত্র এক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাকি অভিযুক্তেরা ধরা না পড়ায় মঙ্গলবার বাড়ির সামনে মৃতদেহ আটকে বিক্ষোভ দেখালেন স্থানীয় বাসিন্দারা। নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়না-তদন্তের পরে এ দিন বিকেলে তারকের দেহ পৌঁছয় হাটগাছিয়ার বাড়িতে। সেখানেই ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা দাবি তোলেন, অবিলম্বে সব অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তি দিতে হবে।

Advertisement

সোমবার দিনের আলোয় যে ভাবে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে নৃশংস ভাবে খুন করা হয়েছে তারককে, তা নিয়ে মঙ্গলবারও সারা দিন তপ্ত ছিল ধাপার হাটগাছিয়া। এ দিন বিকেলে ছেলের মৃতদেহ আঁকড়ে বারবার জ্ঞান হারাচ্ছিলেন বৃদ্ধা মা অবলা মণ্ডল। পরিবারের বাকি সদস্যদের সামলাচ্ছিলেন পাড়ার বাসিন্দারা। মৃতদেহ রাখা হয়েছিল তারকের বাড়ির কাছেই একটি উদ্যানে। তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে ইএম বাইপাস সংলগ্ন হাটগাছিয়া বস্তিতে উপচে পড়েছিল এলাকাবাসীর ভিড়়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, হাটগাছিয়া দু’নম্বর বস্তির তৃণমূল নেতা ছিলেন তারক। তাঁকে খুনের অভিযোগ উঠেছে যে ছ’জনের বিরুদ্ধে, সেই ভজা মণ্ডল, অনি মণ্ডল, ছোটু মণ্ডল, মিলন জানা, ভুলু মাইতি এবং নিবাস দাসও তৃণমূলের সমর্থক। স্থানীয় সূত্রের খবর, গত এক বছর ধরে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তারকের সঙ্গে ওই ছ’জনের দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। পাড়ার বিভিন্ন দলীয় কাজকর্মে একা তারককেই যাবতীয় সিদ্ধান্ত নিতে দেখে গত এক বছরে বিভিন্ন সময়ে তাঁর সঙ্গে ছয় অভিযুক্তের ঝামেলাও হয়েছিল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘তারকের দাদাগিরি ওরা পছন্দ করছিল না। এলাকা দখল করতে না পারায় ও পাওনা না পাওয়ায় খুন হতে হল তারককে।’’

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, তারকের বিরুদ্ধেও এক সময়ে প্রগতি ময়দান থানায় তোলাবাজি, মারধর থেকে শুরু করে একাধিক অসামাজিক কাজের অভিযোগ ছিল। এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘গত দু’বছর ধরে তারক নিজেকে অনেকটা শুধরে নিয়েছিল। গরিব মানুষদের সাহায্য করা থেকে শুরু করে এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সচেষ্ট ছিল। এ সব সহ্য করতে পারেনি ভজা, ভুলু, ছোটু, মিলনেরা। তার জন্যই তারককে এ ভাবে চলে যেতে হল।’’

এ দিন তারকের দেহ বাড়ি পৌঁছনোর পরে সেখানে আসেন স্থানীয় ব্লক তৃণমূল সভাপতি সুভাষ চক্রবর্তী। যদিও গোটা ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি। সন্ধ্যায় তৃণমূলের পতাকা মোড়া শববাহী গাড়িতে তারকের দেহ নিমতলা শ্মশানের উদ্দেশে রওনা হয়। এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে সোমবার রাতেই এক অভিযুক্ত ভুলু মাইতিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘বাকি দুষ্কৃতীদের খোঁজেও তল্লাশি চলছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন