বন্দিদের তুলিতে চিড়িয়াখানা রাঙানোর প্রস্তাব

শনি ও রবিবার প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার চত্বরে ‘উইন্টার কার্নিভাল’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বন্দিদের তৈরি নানা সামগ্রী ছাড়াও সেখানে প্রশংসা পেয়েছে সংশোধনাগারের আর্ট ফোরামের সদস্যদের আঁকা ১৫টি ক্যানভাস।

Advertisement

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ ও কুন্তক চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:৩৪
Share:

এক পক্ষের সুযোগ রয়েছে মনের ভাব রং-তুলিতে ফুটিয়ে তোলার। তাঁরা মানুষ। অন্য পক্ষের সে সুযোগ নেই। তারা চিড়িয়াখানার বাসিন্দা। কিন্তু দু’ পক্ষই বন্দি। লোহার গরাদের পিছনেই দিন-রাত্রি কাটে সবারই। এ বার সেই মানুষ বন্দিরা রং ও তুলি নিয়ে হাজির হতে পারেন চিড়়িয়াখানায়। মধুবনী চিত্রকলা কিংবা গৌতম বুদ্ধের মুর্তির পাশাপাশি তাঁদের ক্যানভাসে উঠে আসতে পারে অবলা পশুপাখিদের কথাও। রং-তুলির সূত্র ধরে নতুন সম্পর্কে বাঁধা পড়তে পারেন দুই ভিন্ন মেরুর বন্দিরা।

Advertisement

শনি ও রবিবার প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার চত্বরে ‘উইন্টার কার্নিভাল’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বন্দিদের তৈরি নানা সামগ্রী ছাড়াও সেখানে প্রশংসা পেয়েছে সংশোধনাগারের আর্ট ফোরামের সদস্যদের আঁকা ১৫টি ক্যানভাস। যার মধ্যে মধুবনী চিত্রকলা এবং প্লাস্টার অব প্যারিস ও দড়ি সহযোগে গৌতম বুদ্ধের মূর্তি প্রশংসা পেয়েছে। কারা দফতর সূত্রের খবর, সেখানে আলিপুর চিড়িয়াখানার ডেপুটি ডিরেক্টর পিয়ালি চট্টোপাধ্যায় প্রস্তাব দেন, বন্দিদের দিয়ে চিড়িয়াখানা চত্বরও রাঙিয়ে তোলার। তিনি নিজেও একটি ছবি কেনেন।

সরকারি নিয়মে বন্দিদের চিড়িয়াখানায় নিয়ে গিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে হলে নিরাপত্তার ছাড়পত্রের প্রয়োজন। তার জন্য কারা দফতর, পুলিশ ও চিড়িয়াখানার সমন্বয়ও দরকার। চিড়িয়াখানার একটি সূত্র জানাচ্ছে, ডেপুটি ডিরেক্টরের প্রস্তাব গিয়েছে। কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।

Advertisement

কিন্তু হঠাৎ এমন ভাবনা কেন?

বন্দিরা চিড়িয়াখানা রাঙিয়ে তুললে সামাজিক ভাবে বার্তাও দেওয়া যাবে। বছর তিনেক আগে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারের ভিতরেই এই ‘আর্ট ফোরাম’ বা আঁকার স্কুল তৈরি হয়েছিল। বর্তমানে ওই স্কুলে দশ-বারো জন শিক্ষার্থী রয়েছেন। তাঁদের কারও বিরুদ্ধে পুলিশকে গুলি, কারও বিরুদ্ধে খুন, ধর্ষণ কিংবা অপহরণের মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। শিক্ষক আশিস দাসের তত্ত্বাবধানে নিয়মিত ওই বন্দিরা কয়েক ঘন্টা করে আঁকার অনুশীলন করেন।

আশিসের কথায়, ‘‘অতীত আঁকড়ে কী হবে? আর্ট ফোরামের সদস্যদের কাজ এখন বাইরেও সমাদৃত। আবাসিকদের কাজ আরও বিস্তৃত হলে সেটাই শিক্ষক হিসাবে আমার বড় প্রাপ্তি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন