কলকাতার মেট্রো

সাম্য থাকুক সময়ে, বলে গেলেন কর্তা

ধীরেসুস্থে কার্ড পাঞ্চ করিয়ে প্ল্যাটফর্মের দিকে এগোচ্ছিলেন সুস্মিতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রবেশপথের ঘড়িতে দেখে নিয়েছেন মেট্রো ঢুকতে তখনও পাঁচ মিনিট দেরি। কিন্তু প্ল্যাটফর্মে ঢুকতে ঢুকতেই সাঁ করে বেরিয়ে গেল ট্রেন। শ্যামবাজারের সুস্মিতাদেবীর মতো একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে দমদমের বাসিন্দা অরুণাভ চক্রবর্তীর সঙ্গেও। ইদানীং মেট্রোর বেশ কয়েকটি স্টেশনে প্রবেশপথে ইলেকট্রনিক ঘড়িগুলোর সময়ের সঙ্গে প্ল্যাটফর্মের ঘড়িগুলোর সময়ের অনেক ফারাক হয়ে যাওয়ায় নিত্যযাত্রীরা দুর্ভোগে পড়ছিলেন।

Advertisement

অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০১৫ ০২:০০
Share:

ধীরেসুস্থে কার্ড পাঞ্চ করিয়ে প্ল্যাটফর্মের দিকে এগোচ্ছিলেন সুস্মিতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রবেশপথের ঘড়িতে দেখে নিয়েছেন মেট্রো ঢুকতে তখনও পাঁচ মিনিট দেরি। কিন্তু প্ল্যাটফর্মে ঢুকতে ঢুকতেই সাঁ করে বেরিয়ে গেল ট্রেন।

Advertisement

শ্যামবাজারের সুস্মিতাদেবীর মতো একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে দমদমের বাসিন্দা অরুণাভ চক্রবর্তীর সঙ্গেও। ইদানীং মেট্রোর বেশ কয়েকটি স্টেশনে প্রবেশপথে ইলেকট্রনিক ঘড়িগুলোর সময়ের সঙ্গে প্ল্যাটফর্মের ঘড়িগুলোর সময়ের অনেক ফারাক হয়ে যাওয়ায় নিত্যযাত্রীরা দুর্ভোগে পড়ছিলেন। স্টেশনের কর্মীদের কাছে এ ব্যাপারে অভিযোগ জানিয়েও লাভ হয়নি।

মঙ্গলবার দিল্লি থেকে কলকাতায় এক দিনের সফরে এসেই রেলবোর্ড সদস্য (ইলেকট্রিক্যাল) নবীন টন্ডন সেই সব অভিযোগকে মান্যতা দিয়ে অবিলম্বে মেট্রোর সব ঘড়ির সময় ঠিক করতে নির্দেশ দিলেন মেট্রো-কর্তাদের। যাত্রীদের কাছে সঠিক সময় তুলে ধরা রেলের প্রাথমিক শর্ত। তাই রেল বোর্ড-কর্তার নির্দেশ, ‘‘অবিলম্বে ঘড়িগুলির ত্রুটি সারিয়ে দিতে হবে।’’

Advertisement

দীর্ঘ দিন ধরেই একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটে চলেছে মেট্রোয়। সুড়ঙ্গে ট্রেন আটকানো থেকে শুরু করে রেকের দরজা খোলা-বন্ধ না হওয়া, কামরায় জল পড়া, মাঝপথে ট্রেনের তলায় আগুন ধরে ধোঁয়া বেরোনো ইত্যাদি নানা ধরনের ঘটনায় একাধিক বার বন্ধ হয়েছে ট্রেন চলাচল। তার পরে যাত্রী-স্বার্থে মেট্রো কী কী ব্যবস্থা নিচ্ছে, সে সব বিষয়ও এ দিন খতিয়ে দেখেন নবীন টন্ডন। বহু আলোচনার পরে ঠিক হয়, এ বার সুড়ঙ্গে ট্রেন আটকে গেলে সময় নষ্ট না করে রেকের দু’দিকের চালকের কেবিনের দরজা খুলেই যাত্রীদের নামানো হবে। এর জন্য বোর্ডের প্রয়োজনীয় অনুমতিও মিলেছে।

এর পরেই যে সমস্যাটি মেট্রোয় বারবার দেখা যাচ্ছে, সেটি হল রেকের দরজা খোলা-বন্ধ না হওয়া। এ ব্যাপারে মেট্রো-কর্তারা জানান, বাতানুকূল যন্ত্রের জন্য মেট্রোর সুড়ঙ্গে মাঝেমধ্যেই বাতাসের আর্দ্রতা ঠিক রাখা যাচ্ছে না। এর ফলে সাধারণ রেকগুলির ব্রেক ও দরজা খোলা-বন্ধ করার হাওয়া-যন্ত্রেও আর্দ্রতা বেড়ে যাচ্ছিল। বিপত্তি হচ্ছিল সেখান থেকেই। এখন মেট্রোর রেকে ওই হাওয়া-যন্ত্রের বাতাসে আর্দ্রতা ঠিক রাখার জন্য একটি ‘অটো ড্রেন ভাল্‌ভ’ লাগানো হচ্ছে। যাতে আর আর্দ্রতা বেড়ে মাঝপথে চাকার ব্রেক আটকে না যায়, বা দরজা আটকে না যায়।

মেট্রো সূত্রে খবর, এর মধ্যে পুরনো ১৭টি রেকের প্রায় বেশির ভাগ রেকেই ওই যন্ত্র লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। মেট্রো-কর্তাদের দাবি, ফলও মিলছে হাতে-নাতে। গত চার মাসে এমনকী পুজোর অত ভিড়েও মেট্রোর দরজা খোলা-বন্ধ করা নিয়ে কোনও সমস্যা দেখা দেয়নি।

বোর্ড সদস্য এ দিন মেট্রোর প্ল্যাটফর্মগুলি ঠাণ্ডা রাখার ব্যাপারেও নজর বাড়াতে বলেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘যাত্রী-স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য প্ল্যাটফর্মে তাপমাত্রার নিয়ন্ত্রণ খুব জরুরি।’’ নতুন রেক আসার প্রসঙ্গে তিনি জানান, ২০১৬-র শেষেই কলকাতা মেট্রোতে নতুন রেক আসতে শুরু করবে। চিনের একটি সংস্থা ওই রেক সরবরাহ করার বরাত পেয়েছে বলেও জানান তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement