বাইপাসের ধারের নয়ানজুলি বোজানো নিয়ে অভিযুক্ত কাউন্সিলর

পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর সূত্রের খবর, ঢালাই ব্রিজ থেকে কামালগাজি ব্রিজ পর্যন্ত ১.৮ কিলোমিটার দীর্ঘ বাইপাসের সম্প্রসারণ হচ্ছে। দু’ধারেই আরও এগারো মিটার করে চওড়া পিচের রাস্তা হবে। এর পরে হবে প্রায় দু’মিটার চওড়া ফুটপাথ। এই পর্যন্ত সম্প্রসারণ প্রকল্পের প্রস্তাবিত খরচ ১৯ কোটি টাকা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০২:৪১
Share:

অরাজকতা: এ ভাবেই বাইপাস সম্প্রসারণের কাজের পাশে বোজানো হচ্ছে নয়ানজুলি। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল

বাইপাস সম্প্রসারণের কাজের ফাঁক গলে এ বার অনিয়মের অভিযোগ খোদ স্থানীয় কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে। যদিও এমন অভিযোগের কথা অস্বীকার করছেন তিনি। তবে কারা বেআইনি ভাবে নয়ানজুলি ভরাট করছে? উত্তর জানা নেই তাঁর। তিনি নাকি থেকেও ঠুঁটো, এমনই দাবি কাউন্সিলরের।

Advertisement

পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর সূত্রের খবর, ঢালাই ব্রিজ থেকে কামালগাজি ব্রিজ পর্যন্ত ১.৮ কিলোমিটার দীর্ঘ বাইপাসের সম্প্রসারণ হচ্ছে। দু’ধারেই আরও এগারো মিটার করে চওড়া পিচের রাস্তা হবে। এর পরে হবে প্রায় দু’মিটার চওড়া ফুটপাথ। এই পর্যন্ত সম্প্রসারণ প্রকল্পের প্রস্তাবিত খরচ ১৯ কোটি টাকা।

নির্মাণকারী কেএমডিএ (রোডস)-এর এক আধিকারিক ইঞ্জিনিয়ার জানান, রাস্তা ও ফুটপাথ বাড়ানোর জন্য সংলগ্ন নয়ানজুলিতে শালবল্লা পুঁতে এলাকা চিহ্নিত করা হয়েছিল। অভিযোগ উঠছে, চিহ্নিত করা অংশ ছাড়িয়ে আবর্জনা ফেলা হচ্ছে নয়ানজুলির একাংশে। বাইপাস ধরে কামালগাজির দিকে কন্দর্পপুর ঢোকার আগে, নেশামুক্তি কেন্দ্রের সামনে চলছে এই অবৈধ কাজ। আরও অভিযোগ, রাস্তার ধারে পড়ে থাকা নির্মাণ সামগ্রী দেদার চুরি হয়ে যাচ্ছে। অথচ নজর নেই কেএমডিএ-র। কয়েক জন বাসিন্দা অভিযোগ করেন, গত দশ দিন ধরে রাতের অন্ধকারে এই সব অবৈধ কাজ হয়ে চলছে। রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের অধীন এই এলাকা। বাসিন্দাদের একাংশের মতে, এর পিছনে মদত আছে, স্থানীয় কাউন্সিলর নমিতা দাসের।

Advertisement

নয়ানজুলি বোজানোর অভিযোগ মানছেন অভিযুক্ত কাউন্সিলর। কিন্তু তাঁর দাবি, পুরো বিষয়টি তাঁকে অন্ধকারে রেখে হচ্ছে। দু’দিন আগেই তিনি এ বিষয়টি জানতে পেরেছেন। প্রশ্ন করা হয়, পুলিশ বা পুর প্রধানকে জানিয়েছেন? তাঁর সংক্ষিপ্ত উত্তর, ‘‘না। এ বার জানাব।’’

ঢালাই ব্রিজ থেকে কামালগাজি ব্রিজের দিকে শুক্রবার হেঁটে যাওয়ার পথে দেখা গেল, রাস্তার ধারে পড়ে রয়েছে স্টোনচিপস, বালি-সহ নির্মাণ সামগ্রী। শালবল্লা খুঁটির আগে ইটের গাঁথনিও করেছে কেএমডিএ। যে জায়গা নিয়ে অভিযোগ, সেখানে পৌঁছে নজরে পড়ল, গাঁথনি ভেঙে সংলগ্ন নয়ানজুলির অনেকটাই নির্মাণ বর্জ্য ফেলে বুজিয়ে দেওয়া হয়েছে। সাহাপাড়া, ফর্তাবাদ, কন্দর্পপুরের কয়েক জন বাসিন্দার কথায়, শোনা যাচ্ছে ওখানে ধাবা হবে।

সব শুনে বিস্মিত কেএমডিএ (রোডস)-এর আধিকারিক ইঞ্জিনিয়ার। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে তিনি পরে জানান, এমন হওয়ার কথা নয়। বাইপাসের ধারে পরবর্তী ধাপে সৌন্দর্যায়ন হওয়ার কথা আছে। বন দফতরকে সঙ্গে নিয়ে সে কাজ হবে। তবে তা কোনও ভাবেই বিক্ষিপ্ত ভাবে জেগে থাকা নয়ানজুলি ভরাট করে নয়। সেটা বাঁচিয়েই হবে। তাঁর দাবি, ‘‘কিছু দিন ওখানে কাজ বন্ধ ছিল। এর মধ্যেই সম্ভবত এ সব হয়েছে। নির্মাণ সামগ্রী চুরি এবং অবৈধ ভাবে নয়ানজুলি ভরাট নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনকে জানান হবে।’’ রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার চেয়ারম্যান পল্লবকান্তি দাস বলেন, ‘‘অভিযোগ প্রথম বার শুনছি। তবে কোনও অবৈধ কাজ বরদাস্ত করা হবে না। অভিযোগ প্রমাণিত হলে, প্রশাসনিক স্তরে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন