প্রতীকী ছবি।
মোটরবাইকে গাঁজা লুকনো আছে, এমনই দাবিতে পুলিশি তল্লাশির নামে এক বৃদ্ধকে হেনস্থার অভিযোগ ঘিরে বৃহস্পতিবার অশান্ত হয়ে উঠল শাসন। অভিযোগ, পুলিশকে তাড়া করে চলে মারধর। চলে পথ অবরোধও। স্থানীয়দের দাবি, মোটরবাইকের কাগজপত্র দেখার নাম করে প্রতিদিন হেনস্থা, তোলাবাজি চালায় পুলিশ। যার জেরে এ দিন অবরোধ তুলতে গিয়ে বেগ পেতে হয় পুলিশিকে। পরে বারাসতের এসডিপিও দুর্বার বন্দ্যোপাধ্যায় ও স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে অবরোধ ওঠে। দু’ঘণ্টা অবরোধের জেরে নাজেহাল হতে হয় অফিস যাত্রীদের।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, শাসনের খড়িবাড়ি চৌরাস্তা মোড়ে প্রতিদিনই গাড়ি থামিয়ে কাগজপত্র পরীক্ষা করেন খড়িবাড়ি ক্যাম্পের পুলিশকর্মীরা। এ দিন সকালে ষন্ডালিয়ার বাসিন্দা মহম্মদ কামালউদ্দিন নামে ওই বৃদ্ধ সাংবেড়িয়ায় আত্মীয়ের বাড়ি যাচ্ছিলেন। পথেই খড়িবাড়ি মোড়ে তাঁর মোটরবাইক আটকায় পুলিশ। স্থানীয়দের অভিযোগ, ষাটোর্ধ্ব ওই বৃদ্ধের কাছে গাঁজা আছে দাবি করে তল্লাশির নামে হেনস্থা করা হয়েছে। তবে মোটরসাইকেল থেকে কিছুই মেলেনি। এর পরেই প্রতিবাদে নামেন স্থানীয়েরা। স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সদস্য মহাসিন আলির অভিযোগ, ‘‘যে ভাবে পুলিশ প্রতিদিন ওই রাস্তার মোড়ে গাড়ি আটকে প্রকাশ্যে তোলা আদায় করে, তাতে মানুষ এমনিতেই ক্ষুব্ধ। আজও এমনই ঘটনা ঘটেছে। আমরা চাই, পুলিশ নিময় মেনে কাজ করুক।’’
এ ঘটনায় ক্ষোভ এতটাই ছড়ায় যে, ক্ষিপ্ত বাসিন্দারা খড়িবাড়ি-রাজারহাট রোডে লোহার বিম ফেলে অবরোধে নামেন। অভিযুক্ত পুলিশকর্মীকে তাঁদের হাতে তুলে দিতে হবে বলে পুলিশ ফাঁড়িতে গিয়ে বিক্ষোভও দেখান। অভিযোগ, ফাঁড়িতেও ভাঙচুর চালানো হয়। কয়েক জন পুলিশকর্মী জখম হন। অবরোধকারীদের অভিযোগ, পুলিশ তাঁদের উপরে লাঠি চালিয়েছে। আকবর আলি নামে এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘পুলিশ রাস্তায় দাঁড়িয়ে দাদাগিরি করে। এ দিন পুলিশ লাঠিও চালিয়েছে। আমরা অভিযুক্ত পুলিশকর্মীর শাস্তি চাই।’’
লাঠি চালানোর অভিযোগ অবশ্য মানতে চায়নি পুলিশ। পুলিশের দাবি, ওই এলাকা দিয়ে হেলমেট, লাইসেন্স ছাড়াই তিন-চার জনকে নিয়ে বিপজ্জনক ভাবে মোটরসাইকেল চলাচল করে। দুর্ঘটনা রুখতে সে সব ধরপাকড়ের ফলেই কিছু মানুষের এই ক্ষোভ বলে পাল্টা দাবি পুলিশের। তোলাবাজি ও হেনস্থার অভিযোগের তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। উত্তর ২৪ পরগনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন বলেন, ‘‘তদন্তে যদি কোনও পুলিশকর্মীর দোষ প্রমাণিত হয়, তা হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’