Kolkata Metro

সাতসকালে ‘অমৃতকথা’ শোনালেও কর্মে মন নেই মেট্রোরই! পরিষেবা নিয়ে অভিযোগ ক্ষুব্ধ যাত্রীদের

ব্যস্ত সময়ে রোজ ১৫-২০ মিনিট পর পর মেট্রো আসছে বলে যাত্রীদের দীর্ঘ দিনের অভিযোগ। নিয়ম করে ‘অমৃতকথা’ টুইট করা মেট্রোর বিরুদ্ধে তাই ক্ষোভ আরও বাড়ছে নিত্যযাত্রীদের।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০২৩ ১৭:০৮
Share:

মেট্রো পরিষেবা নিয়ে ক্ষুব্ধ যাত্রীরা। ফাইল চিত্র।

ঠিক সকাল ৭টা। এক মিনিট বেশিও না, কমও না। এই সময়েই রোজ কলকাতা মেট্রোর টুইটার হ্যান্ডলে ভেসে ওঠে রামকৃষ্ণ, বিবেকানন্দ বা মা সারদার বাণী সংবলিত ভিডিয়ো। যার পোশাকি নাম ‘অমৃতকথা’। এ ক্ষেত্রে সময়ের নড়চড় হয় না কোনও দিন। কিন্তু সঠিক সময়ে মেলে না কেবল পরিষেবাটাই! অফিসের ব্যস্ত সময়ে রোজ ১৫-২০ মিনিট পরে মেট্রো পাওয়া যাচ্ছে বলে যাত্রীদের দীর্ঘ দিনের অভিযোগ। এবং তাঁদের বক্তব্য, মেট্রোর কাজ ঠিক মতো পরিষেবা দেওয়া। ‘অমৃতকথা’ শোনানো নয়। এখন যা পরিস্থিতি, তাতে মেট্রোয় যদি ঠিক সময়ে ট্রেন আসার ঘোষণা হয়, তা হলে যাত্রীদের জন্য সেটাই ‘অমৃতকথা’ হয়ে দাঁড়াবে। আলাদা করে মহাপুরুষের বাণী শোনানোর প্রয়োজন হবে না।

Advertisement

তবে যাত্রীদের ক্ষোভ নিয়ে মেট্রো কর্তৃপক্ষ ‘সহানুভূতিশীল’। এই প্রসঙ্গে তাঁদের ‘বাণী’ হল— যা হচ্ছে, তা যাত্রীদের ভালর জন্যই হচ্ছে। অর্থাৎ, মেট্রোয় যে রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলছে, তার কাজ শেষ হলেই ‘সাময়িক মন্থরতা’ কাটিয়ে আরও দ্রুতগামী হয়ে উঠবে কলকাতা মেট্রো। পরিষেবার সঙ্গে যে প্রাত্যহিক টুইটের কোনও সম্পর্ক নেই, তা-ও স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে তাঁদের তরফে। মেট্রো সূত্রের খবর, ‘অমৃতকথা’ নিয়ম করে টুইট করা হয় মুখ্য জনসংযোগ দফতর থেকে। প্রথমে পরীক্ষামূলক ভাবে চালু করা হলেও যাত্রী এবং নেটাগরিকদের কাছে প্রশংসা পাওয়ায় সেটি নিয়মিত করা হয়েছে। শনিবারই যেমন মা সারদার বাণী উদ্ধৃত করে লেখা হয়েছে, ‘কর্ম হতেই সুখদুঃখ সব।’ ক্ষুব্ধ যাত্রীদের অবশ্য বক্তব্য, মেট্রোর কর্মে শুধু দুঃখই মিলছে, সুখ নয়!

Advertisement

মেট্রো কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, দক্ষিণেশ্বর থেকে কবি সুভাষ (নিউ গড়িয়া) স্টেশন পর্যন্ত একাধিক জায়গায় রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলছে। তাই দু’টি স্টেশনের মধ্যে কোনও কোনও কোনও সময় শ্লথ করে দেওয়া হচ্ছে মেট্রোর গতি। ফলে নির্ধারিত সময়ে স্টেশনে ঢুকতে পারছে না মেট্রো। যাত্রীদের বক্তব্য, অফিস টাইমে মেট্রো দেরিতে ঢোকায় কর্মস্থলে পৌঁছতে দেরি হচ্ছে। স্টেশনে ভিড় বাড়ছে। অত্যধিক ভিড়ের কারণে উঠতে না পেরে কোনও কোনও সময় পর পর অনেকগুলি মেট্রো ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা। শনিবারেই জনৈক যাত্রীর কথায়, “সকাল ৮টা থেকে গিরিশ পার্ক মেট্রো স্টেশনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। ৮টা ১৫ মিনিটে মেট্রো এল। সেটায় এত ভিড় যে, ওঠার মতো পরিস্থিতি ছিল না। তারও ২০ মিনিট পরে একটা মেট্রোয় কোনও ক্রমে উঠতে পারলাম। সকাল ৯টায় অফিসে পৌঁছনোর কথা। সেখানে মেট্রোয় উঠতেই পারলাম ৮টা ৪৫ মিনিটে!”

কলকাতা মেট্রোর বিরুদ্ধে সময়ানুবর্তী না হওয়ার অভিযোগ তো রয়েছেই, যাত্রীদের আরও অভিযোগ, বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে শনি এবং রবিবার কয়েক ঘণ্টার জন্য মহানায়ক উত্তমকুমার (টালিগঞ্জ) স্টেশন থেকে কবি সুভাষ পর্যন্ত মেট্রো পরিষেবা বন্ধ থাকছে। শনিবারও সকাল ৬টা ৫০ মিনিট থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত মোট ৩ ঘণ্টা ১০ মিনিট এবং রবিবার সকাল ৯টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত ১ ঘণ্টা এই দুই স্টেশনের মধ্যে বন্ধ থাকছে পরিষেবা। একটি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা থাকার জন্য পরীক্ষার্থীদের সুবিধার্থে এই রবিবার অবশ্য পরিষেবা চালু থাকবে বলে জানিয়েছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন