পোলিয়ো দিতে গিয়ে প্রহৃত আশা কর্মী

রবিবার এনায়েতনগরের মিরপুর গ্রামে পোলিয়ো টিকা দিতে গিয়েছিলেন আশা কর্মীরা। অভিযোগ, ওই গ্রামের অধিকাংশ পরিবার পোলিও টিকার বিরোধিতা করেন। বাড়ির শিশুদের ওষুধ খাওয়াতে রাজি হন না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৮ ০২:৩২
Share:

আহত নাসিমা বিবি। নিজস্ব চিত্র

শিশুদের পোলিয়োর টিকা দিতে গিয়ে প্রহৃত হলেন এক আশা কর্মী। পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার সকালে দক্ষিণ শহরতলির বিষ্ণুপুর থানার এনায়েতনগর এলাকার মিরপুর গ্রামের ওই ঘটনায় এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি।

Advertisement

কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকারের তরফে পোলিয়ো প্রতিষেধক কর্মসুচি চলে নিয়মিত। টিকারণের পাশাপাশি সচেতনতার প্রচারও চালান আশা কর্মীরা। তিন মাস অন্তর সপ্তাহে তিন দিন করে পোলিয়োর টিকা দেওয়ার কাজ করেন তাঁরা।

রবিবার এনায়েতনগরের মিরপুর গ্রামে পোলিয়ো টিকা দিতে গিয়েছিলেন আশা কর্মীরা। অভিযোগ, ওই গ্রামের অধিকাংশ পরিবার পোলিও টিকার বিরোধিতা করেন। বাড়ির শিশুদের ওষুধ খাওয়াতে রাজি হন না। ফলে রবিবার ওই এলাকার বেশির ভাগ বাড়িতেই টিকাকরণ হয়নি। সোমবার সকালে ফের ওই গ্রামে যান আশা কর্মীরা। ফের কাজে বাধা পান।

Advertisement

দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, টিকা দিতে বাধা পাওয়ার পরে ওই এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত আশা কর্মী নাসিমা বিবি বাসিন্দাদের বলেন, ‘‘যাঁরা পোলিয়ো খাওয়াতে বাধা দিচ্ছেন, তাঁদের লিখিত ভাবে নাম জানাতে হবে। বিষয়টি ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিককে জানাব।’’

অভিযোগ এর পরেই এলাকা মহিলারা নাসিমাকে ঘিরে ধরেন। তাঁর কানের দুল ধরে টানলে বাঁ কানের লতি ছিঁড়ে যায়। জখম নাসিমার সহকর্মীরা তাঁকে স্থানীয় চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যান। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে বিষ্ণুপুর থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন নাসিমা।

পুলিশ সূত্রের খবর, নাসিমার অভিযোগের তদন্ত চলছে। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, সোমবার সকালে মিরপুরের মিস্ত্রিপাড়ায় একের পর বাড়িতে গিয়ে, বাচ্চাদের পোলিয়ো খাওয়ানো হয়েছে কি না, তার খোঁজ নিচ্ছিলেন। তার পরেই গ্রামের মহিলারা হামলা চালান। অভিযোগ পাওয়ার পরে কয়েক জনকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছে।

দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আশা কর্মীরা শুধু পোলিয়ো টিকা দেন না, পতঙ্গবাহিত রোগ প্রতিরোধেও নানা প্রচার ও নজরদারি চালান তাঁরা। এ ছাড়াও এলাকাভিত্তিক প্রসূতিদের দেখভাল-সহ স্বাস্থ্য দফতরের নানা কর্মসূচি আশাকর্মীদের উপরে অনেকটাই নির্ভরশীল। সোমবারের ঘটনায় তাঁরা আতঙ্কিত।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ তরুণ রায় বলেন, ‘‘আমরা পুলিশের সঙ্গে কথা বলেছি। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন