অভিনব: মশারির ভিতরেই বসে আঁকো প্রতিযোগিতা। এ ভাবেই ডেঙ্গি-সচেতনতার বার্তা দিল খুদেরা। রবিবার, বাগুইআটিতে। ছবি: শৌভিক দে।
দু’টি হলঘরেই একাধিক মশারি। তার মধ্যে বসে রয়েছে কচিকাঁচারা। হলঘরের চার পাশে জ্বলছে মশার ধূপ, মশা মারার তেল।
কোনও শিশু হাসপাতাল নয়। ঘটনাস্থল বিধাননগর পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাগুইআটির বাগুইপাড়া। ওই খুদেরাও কেউ অসুখে আক্রান্ত নয়। তাদের হাতে রং-তুলি, পেন্সিল-রবার।
আদতে এটি একটি বসে আঁকো প্রতিযোগিতা। প্রতিযোগিতার দু’টি ভাগ। একটির বিষয় ‘ডেঙ্গির মশা মানুষের চেয়ে বড়।’। অন্যটির ‘মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে সচেতনতা।’ এমনই অভিনব উপায়ে রবিবার এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। সরকারি ভাবে মুখ না খুললেও শাসক দলের একাংশ যদিও বিষয়টিকে ভাল ভাবে দেখছেন না। তাঁদের অভিযোগ, বিরোধিতা নিশ্চয় কাম্য। কিন্তু তার মধ্যে কচিকাঁচাদের টেনে আনা বা প্রশাসনকে ব্যঙ্গ করা অনভিপ্রেত। অভিযোগ অস্বীকার করে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটির অন্যতম কর্তা সোমেশ্বর বাগুইয়ের দাবি, প্রতি বছরই বসে আঁকো প্রতিযোগিতা হয়। এ বছর ইন্দিরা গাঁধীর জন্মশতবর্ষে এমন আয়োজন করা হয়েছিল। মশাবাহিত রোগের প্রকোপ নিয়ে ছোটরাও যে ওয়াকিবহাল, তা তুলে ধরাই এর উদ্দেশ্য। এর মধ্যে রাজনীতির কোনও ব্যাপার নেই।
যদিও এ বার প্রতিযোগিতার বিষয় কেন মশা এবং মশাবাহিত রোগ নিয়ে করা হল, সেই প্রশ্নও তুলছেন অনেকে। এ ব্যাপারে উদ্যোক্তাদের একাংশের দাবি, সর্বত্র প্রতিযোগিতার প্রচার করা হয়েছিল। কিন্তু দিন এগিয়ে এলেও প্রতিযোগীদের নাম জমা পড়ছিল না। সন্দেহ হওয়ায় উদ্যোক্তারা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, বাগুইআটিতে মশার বাড়বাড়ন্ত এবং ডেঙ্গিতে মৃত্যুর ঘটনা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছিল। সেই খবর পেয়ে কেউ ওই এলাকায় যেতে রাজি হচ্ছে না।
প্রাথমিক ভাবে উদ্যোক্তারা রীতিমতো আশঙ্কিত হয়ে পড়েন। শেষে সমস্যা সমাধানের উপায় হিসেবে বেছে নেওয়া হয় মশারিকে। প্রতিযোগীদের পরিবারগুলিকে এই বলে আশ্বস্ত করা হয়, প্রতিযোগীদের মশারির মধ্যে রাখা হবে। প্রতিযোগিতার জায়গায় থাকবে মশার ধূপ, মশা মারার তেল-সহ যাবতীয় ব্যবস্থা। ওই সংস্থা সূত্রের খবর, শেষমেশ এ দিনের প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় প্রায় শ’খানেক ছেলেমেয়ে। সোমেশ্বরবাবু বলেন, ‘‘মশাবাহিত রোগের বাড়বাড়ন্ত নিয়ে ব্যঙ্গ করার অবস্থা নেই। বাস্তবটা সবাই জানেন।সচেতনতা বাড়াতেই এমন পরিকল্পনা।’’