POLICE

হোটেল ম্যানেজারের ভাইয়ের গাড়িতে পাচার হয়েছিল অর্চনা-বলরামের দেহ! ধৃত সেই চালক

পুলিশের চোখে ধুলো দিতেই অর্চনা এবং তাঁর প্রেমিক বলরাম কেশরীর দেহ ওই ক্যাবে করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তার পর...

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৮ ১৪:৪৫
Share:

গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।

উল্টোডাঙার গৃহবধূ অর্চনা পালংদার খুনে এ বার গ্রেফতার করা হল এক অ্যাপ-ক্যাব চালককে। পুলিশের চোখে ধুলো দিতে অর্চনা এবং তাঁর প্রেমিক বলরাম কেশরীর দেহ বিজয় যাদব নামে ওই চালকের গাড়িতেই পাচার করা হয়েছিল। ধর্মতলার যে হোটেল থেকে দেহ লোপাট করা হয়েছিল, বিজয় সেই হোটেলের ম্যানেজার হরিহর যাদবের ভাই। বিজয়কে গ্রেফতারের ফলে অর্চনা খুনে নয়া মোড় মিলল বলেই তদন্তকারীদের দাবি।

Advertisement

তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, রাতের অন্ধকারে ধর্মতলার হোটেল থেকে বস্তাবন্দি করে দেহ দু’টি তার ক্যাবে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় আনন্দপুরের খাল পাড়ে। এর পর এক এক করে খালের জলে ফেলে দেওয়া হয় দেহবন্দি বস্তা দুটো। অন্য কোনও গাড়িতে নিয়ে যাওয়া হলে পুলিশ আটকাতে পারে, সেই আশঙ্কাতেই ম্যানেজারের ভাইয়ের অ্যাপ ক্যাবে করেই দেহ নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করা হয়।

গত ১৭ অগস্ট নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন উল্টোডাঙার বাসিন্দা অর্চনা পালংদার। কয়েক দিন পর তাঁর দেহ পাওয়া যায় আনন্দপুরের খালে। তাঁর স্বামী পুলিশের কাছে জানিয়েছিলেন, বলরাম নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর স্ত্রী সম্পর্ক ছিল। এর পরে বলরাম এবং অর্চনার মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করে জানা যায়, ওই সময়টায় তাঁরা ধর্মতলার কাছে একটি হোটেলে ছিলেন।

Advertisement

আরও পড়ুন
দমদম স্টেশনে বেহাল পরিষেবাই দস্তুর

ওই হোটেলে তল্লাশি চালানোর পাশাপাশি সেখানকার কর্মীদের জেরা করেন তদন্তকারীরা। তদন্তে নেমে পুলিশ ঝাড়খণ্ড থেকে গ্রেফতার করে ওই হোটেলের এক অস্থায়ী কর্মী ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা আশিস যাদবকে। তাঁকে গ্রেফতারের পর জানা যায়, দু’জনের দেহ লোপাটের ঘটনায় জড়িত রয়েছেন হোটেলের ম্যানেজার হরিহর যাদব এবং আরও কয়েক জন কর্মী। আরও জানা যায়, দেহ নিয়ে যাওয়া হয়েছিল অ্যাপ-ক্যাবে করে। তার পরেই ম্যানেজার এবং তার ভাই বিজয় যাদবের খোঁজে তল্লাশি চালায় পুলিশ।

এই ঘটনায় হোটেলের মালিককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জানা যায়, মালিকদের না জানিয়েই দেহ দু’টি লোপাট করা হয়েছিল। গ্রেফতার হওয়ার পর আশিস দাবি করেছিল, গত ১৭ অগস্ট তাদের হোটেলে অর্চনা এবং বলরাম উঠেছিলেন। তাঁরা যে ঘরে ছিলেন, পর দিন সেই ঘরের দরজা না খোলায় সন্দেহ হয় তাদের। ডুপলিকেট চাবি দিয়ে দরজা খুলে দেখা যায়, দু’জনের দেহ পড়ে রয়েছে বিছানায়। তদন্তকারীদের কাছে আশিস দাবি করে, অর্চনাকে খুন করে নিজে আত্মঘাতী হয়েছিলেন বলরাম। পুলিশ এলে হোটেল বন্ধ করে দিতে পারে এই আশঙ্কায় তারা দেহ লোপাট করেছে। অস্থায়ী কর্মীরা হোটেল মালিকে না জানিয়ে কেন এত ঝুঁকি নিতে গেল, তা এখনও স্পষ্ট নয় পুলিশের কাছে। বিজয় গ্রেফতারের পর, তদন্তের জট খুলবে বলে মনে করছে পুলিশ।

আরও পড়ুন
তিলজলায় হেলে পড়ল বহুতল, তীব্র আতঙ্ক, বাড়ি খালি করে পরিদর্শনে পুলিশ-দমকল-পুরসভা

পুলিশ সূত্রে খবর, বিভিন্ন রাজ্য ঘুরে বেড়াচ্ছিল বিজয়। সোমবার পুলিশ গোপন সূত্রে খবর পায়, বালিতে বাড়ির লোকজনের সঙ্গে দেখা করতে আসছে বিজয়। আগে থেকেই ফাঁদ পেতে ছিল উল্টোডাঙা থানার পুলিশ। পরিবারের ফোনে আড়ি পাতা হচ্ছিল। অবশেষে জালে পড়ল সেই ক্যাব চালক বিজয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন