অঙ্কন: সুমন চৌধুরী।
সবাই যখন ভাবছে সে বাগানের পাঁচিলে, তখন সে সরসরিয়ে পাশের টিনের শেডে। লাঠি হাতে যতক্ষণে কাছাকাছি পৌঁছনো গিয়েছে, তখন সটান পেয়ারা গাছে। সেখানে হাত বাড়াতেই পাশের ফ্ল্যাটের জানলায় কুণ্ডলী। জানলায় খোঁচা মারতেই বাগানের গর্তে।
এমনই এক গেছোদাদা সাপ নাচিয়ে বেড়ালো মধ্য আড়িয়াদহর গোটা পাড়াকে। সোমবার সাতসকালে পাড়ার মাঝখানে একফালি বাগানের পাঁচিল থেকে উঁকি মেরেছিল প্রায় আট ফুটের মোটা, ধূসর চেহারাটা। নিমেষে খবর রটল। লাঠি নিয়ে তাড়া দিতে দিতে শেষমেশ সে বাগানের গর্তে ঢুকে পড়তেই স্বস্তি ফিরেছিল পাড়া জুড়ে।
কিন্তু কোথায় কী! বিকেল হতেই নরেন্দ্র কুমারের বাগান লাগোয়া একতলা বাড়িতে তার প্রত্যাবর্তন। এ বার মোটরবাইকে দিব্যি মৌরসীপাট্টা। ফের রে রে করে তেড়ে এলেন সকলে। সাপ রওনা দিল পাশের লেবুগাছে। পরে চেঁচামেচিতে আবার বাগানের গর্তে।
এই বার ভয়ে কাঁটা গোটা পাড়া। রাত নামছে। সাপ যদি কারও বাড়ি ঢোকে! থানায় খবর দেওয়া হয়েছিল। পুলিশ বলেছে, কিচ্ছু করার নেই। বন দফতরও আসেনি। বাড়িতে খিল এঁটে অগত্যা ফের পথে নামলেন বাসিন্দারাই। লাঠি-মশাল-টর্চ হাতে সৈকত চন্দ্র, তন্ময় মাজিরা পাঁচিলের উপরে পা ঝুলিয়ে বসে রইলেন রাতভর। চা খাওয়া হল, আড্ডা হল। শুধু সাপেরই দেখা নেই।
মা মনসা রুষ্ট, সেই ভয়ে মঙ্গলবার উপোস করে পুজো দিলেন পূর্ণিমা মাজি, কাকলী দাসেরা। সর্প বিশারদ, পাড়ারই ছেলে অঞ্জন দাস বেলা ১১টায় সাপ খুঁজতে নামলেন বাগানে।
শেষমেশ ক্লান্ত হয়ে যখন হাল ছেড়ে দিতে বসেছে গোটা পাড়া, তখনই দেখা মিলল তার। দেওয়ালের এক কোণে জড়োসড়ো হয়ে বসে।
সাপের ঠিকানা এখন বন দফতর।