Tala Bridge

শনিবারের ভোগান্তি দেখাল লকগেটের ‘ভুল’ ব্যবহার

পথে নেমে ভুক্তভোগীরা এ দিন সবচেয়ে বেশি প্রশ্ন তুললেন যে বিষয়টি নিয়ে সেটি হল, চিৎপুর লকগেট উড়ালপুল কেন দ্বিমুখী ভাবে ব্যবহার করা হবে না?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০১:৪৫
Share:

সিদ্ধান্ত: লকগেট উড়ালপুল দিয়ে অবশেষে শুরু হল উত্তরমুখী বাস চলাচল। শনিবার সকালে। নিজস্ব চিত্র

বিকল্প রাস্তা কতটা উপযোগী?

Advertisement

শনিবার টালা সেতু ভাঙার কাজ শুরু হওয়ার দিনেই উঠে এল প্রশ্নটা। পথে নেমে ভুক্তভোগীরা এ দিন সবচেয়ে বেশি প্রশ্ন তুললেন যে বিষয়টি নিয়ে সেটি হল, চিৎপুর লকগেট উড়ালপুল কেন দ্বিমুখী ভাবে ব্যবহার করা হবে না? কেনই বা গতি নিয়ন্ত্রণ বা অন্য পদ্ধতি মেনে উড়ালপুলের ব্যবহার বাড়িয়ে মানুষের ভোগান্তি কমানোর চেষ্টা করা হবে না? পুলিশ প্রশাসনের তরফে অবশ্য এ দিনও এর সদুত্তর মেলেনি। কলকাতা পুলিশ শুধুই জানিয়েছে, সব দিক খতিয়ে দেখে ‘আদর্শ ব্যবস্থা’ই রাখা হয়েছে। ডিসি ট্র্যাফিক রূপেশ কুমার বলেছেন, ‘‘সব দিক দেখেই চিৎপুর লকগেট উড়ালপুল একমুখী ভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে।’’ তবে এই ব্যবস্থা সম্পর্কে অনেক প্রশ্ন রয়েছে।

অনেকেরই বক্তব্য, প্রথম থেকেই চিৎপুর লকগেট উড়ালপুলের

Advertisement

ব্যবহার নিয়ে টালবাহানা হয়েছে। টালা সেতু ঘিরে চরম টানাপড়েনের মধ্যেও লকগেট উড়ালপুল দিয়ে বাস বা ভারী গাড়ি চালানোয় নিমরাজি ছিল পুলিশ-প্রশাসন। এক সময়ে এ-ও বলে দেওয়া হয়, ছোট গাড়ি সেখান দিয়ে চলতে পারে। কিন্তু ভারী গাড়ি চালানোর জন্য যে ধারণ-ক্ষমতা দরকার তা ওই উড়ালপুলের নেই। এ দিকে, টালা সেতু ভাঙার দিন

এগিয়ে আসা সত্ত্বেও বিকল্প পথের ব্যবস্থা না হওয়ায় পুরনো অবস্থান থেকে সরতে হয়েছে পুলিশকে। অনড় মনোভাব কাটিয়ে এখন তাই ছোট গাড়ির পাশাপাশি উত্তরমুখী বাস চিৎপুর লকগেট উড়ালপুল দিয়ে চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পুলিশের বড় কর্তারা।

এ নিয়ে প্রশ্ন তুলে উত্তর কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের এক কর্তা

বলেন, ‘‘বারবার বড় কর্তাদের বলেছিলাম, লকগেট উড়ালপুলকে ব্যবহার করার জন্য। এখন ব্যবহার করা হচ্ছে বটে। কিন্তু তাতেও ভুল রয়েছে।’’ তাঁর ব্যাখ্যা, সাধারণত বেশির ভাগ মানুষ সকালে একই সময়ে বিটি রোডের দিক থেকে কলকাতার স্কুল, কলেজ, অফিস, হাসপাতালে যান। ফলে ওই সময়েই চাপ বেশি। তাই চিৎপুর

লকগেট উড়ালপুলটি বিটি রোডের দিক থেকে কলকাতামুখী হিসেবে ব্যবহার করার দরকার ছিল। ফলে টালা সেতুতে উঠতে না পারলেও ওই উড়ালপুল দিয়েই সহজে কলকাতায় আসা যেত।

অথচ নতুন ব্যবস্থাতেও সেই বিটি রোড থেকে বাস ঘুরিয়ে ঘুরিয়েই চিড়িয়ামোড়, সেভেন ট্যাঙ্কস, নর্দার্ন অ্যাভিনিউ, আর জি কর রোড হয়ে শ্যামবাজারে পাঠানো হচ্ছে। এতেই লেগে যাচ্ছে অনেকটা সময়। অন্য দিকে, বিটি রোডে উত্তর দিকে ফেরার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে চিৎপুর লকগেট উড়ালপুল। তাঁর কথায়, ‘‘এখন যেমন ভাবে ব্যবহার হচ্ছে, তার উল্টো ব্যবস্থা জরুরি ছিল।’’

যদিও আরও বড় প্রশ্ন, লকগেট উড়ালপুলটি দ্বিমুখী ভাবে ব্যবহার করা হবে না কেন? কলকাতা পুলিশের বক্তব্য, ওই উড়ালপুল চওড়ায় কম। তাই পাশাপাশি দু’লেনে দ্বিমুখী বাস বা ছোট গাড়ি চালানো সম্ভব নয়। তা ছাড়া ওই

উড়ালপুলের ধারণ-ক্ষমতাও খুব বেশি নয়। চিৎপুর লকগেট উড়ালপুল হুগলি রিভার ব্রিজ কমিশনার্সের অধীন। সেখানকার এক কর্তার অবশ্য দাবি, ‘‘দ্বিমুখী গাড়ির ভার নিতে পারবে না, এ কথা ঠিক নয়। তবে চওড়ায় ওই উড়ালপুল সত্যিই কম।’’ বরাহনগরের বাসিন্দা কলেজ স্ট্রিটের সরকারি স্কুলের শিক্ষক স্নেহময় দত্তের অবশ্য মত, ‘‘আদতে সদিচ্ছার অভাব। গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণ করে বা বাড়তি পুলিশকর্মী মোতায়েন করে দ্বিমুখী গাড়ি চালানোই যায়।’’

এখন প্রশ্ন, শনিবারের ভোগান্তির চিত্র কি পুলিশ-প্রশাসনের বোধোদয় ঘটাবে? সামনে সোমবারের

‘বড় পরীক্ষা’।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন