fire

আকাশ থেকে কী পড়ছে, করোনার ওষুধ নাকি!

কিন্তু আকাশ থেকে কী নেমে এল?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০২০ ০৪:২২
Share:

এই ছাই-ই উড়ে এসে পড়ে বিভিন্ন এলাকায়। শনিবার। নিজস্ব চিত্র

দুপুরের খাওয়া সেরে সবেমাত্র উঠেছিলেন স্বেচ্ছায় গৃহবন্দি লোকজন। আচমকাই তাঁরা খেয়াল করলেন, বাড়ির ছাদে, উঠোনে উড়ে আসছে কালচে ধূসর রঙের কিছু!

Advertisement

এমনিতেই সারা দেশে এখন চলছে করোনা-আতঙ্ক। তার মধ্যে হঠাৎ আকাশ থেকে কী খসে পড়ছে, তা নিয়ে আতঙ্কেই শনিবার দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত তোলপাড় চলল বালি, বেলুড়, বরাহনগর, উত্তরপাড়া-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায়। কেউ ভাবলেন, কোথাও কোনও রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটে থাকতে পারে। এটা তারই জের। কেউ আবার কালচে ধূসর রঙের বস্তুটি বোতলে ভরে ছুটলেন থানায়। তাঁদের দাবি, সেটি পরীক্ষাগারে পাঠাতে হবে।

কিন্তু আকাশ থেকে কী নেমে এল? রহস্য ভেদ করতে গিয়ে হিমশিম খাওয়ার জোগাড় বিভিন্ন থানার পুলিশ আধিকারিকদের। কিছু কিছু এলাকায় আবার বিষয়টি জানতে পেরে সামাজিক দূরত্বের বিধি ভেঙেই রাস্তায় নেমে পড়েছিলেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। কোনও কোনও এলাকার বাসিন্দারা আবার লাগাতার ফোন করে গিয়েছেন সংবাদমাধ্যমের অফিসে। শেষমেশ এ দিন সন্ধ্যায় পুলিশ জানতে পারে, বালির ছ’নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে থাকা ঝোপ-জঙ্গলে দুপুর ২টো নাগাদ আগুন লেগে যায়। দাউদাউ করে জ্বলতে থাকে সেই জঙ্গল। কালো ধোঁয়ায় এলাকার আকাশ ভরে যায়। দমকলের দু’টি ইঞ্জিন গিয়ে ঘণ্টাখানেকের চেষ্টায় আগুন নেভায়। সন্ধ্যায় ফের সেখানে আগুন লাগলে আবার আসতে হয় দমকলকে।

Advertisement

প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, ওই আগুনের ছাই বাতাসে ভেসে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে। আর তা থেকেই ছড়িয়েছে আতঙ্ক। প্রথমে এই যুক্তি মানতে রাজি হননি অনেকেই। তাই কেউ কেউ এমন দাবিও করেন, ‘‘ওটা ছাই নয়। করোনা ঠেকাতে ওষুধ ছড়ানো হচ্ছে।’’ লোকজনের এই সব মন্তব্য শুনে পুলিশ আধিকারিকদের একাংশ বলছেন, ‘‘এমন অবান্তর কথা বলার অর্থ কী, বুঝতে পারছি না।’’

এ দিন দুপুর থেকে আচমকাই কালচে ধূসর রঙের বিভিন্ন আকারের ছাই উড়ে এসে পড়তে শুরু করে বালি, বেলুড়, বরাহনগর, উত্তরপাড়া-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায়। মুহূর্তের মধ্যে সেই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। শুরু হয়ে যায় আলোচনা। সকলের একটাই প্রশ্ন—‘বস্তুটি কী?’ প্রত্যেকেই নিজেদের মতো করে কিছু ভেবে নিয়ে সেটাই বলতে শুরু করেন। বাসিন্দাদের আতঙ্কিত হতে দেখে বরাহনগর পুরসভার চেয়ারম্যান পারিষদ (জঞ্জাল) দিলীপনারায়ণ বসু রাস্তা থেকে নমুনা তুলে বোতলে ভরতে থাকেন। তাঁর কথায়, ‘‘প্রথমে তো বুঝতেই পারছিলাম না, ওই পোড়া ছাই কোথা থেকে উড়ে আসছে? তবে পরে বিষয়টি জানতে পেরে লোকজনকে আশ্বস্ত করেছি।’’

বরাহনগরের বাসিন্দা অরিন্দম বসু বলেন, ‘‘বাড়ির লোকেরা প্রচণ্ড আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন। কী যে হল, কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। কেউ কেউ তো বলছিলেন, করোনার ‘অ্যান্টিডোট’ ছড়ানো হচ্ছে।’’ অধিকাংশ বাসিন্দা শেষ পর্যন্ত বস্তুটিকে ছাই বলে মেনে নিলেও কারও কারও অবশ্য প্রশ্ন, ‘সত্যিই কি তা-ই?’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন