নতুন আন্ডারপাসে শুরু চলাচল। সোমবার, মধ্যমগ্রামে। ছবি: সুদীপ ঘোষ
কলকাতা থেকে বাংলাদেশ কিংবা উত্তরবঙ্গে যাতায়াতের পথ এটি। সেই ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের বিমানবন্দর থেকে মধ্যমগ্রাম পর্যন্ত সম্প্রসারণ হলেও বড় বাধা ছিল মধ্যমগ্রাম চৌমাথার যানজট। সেই সমস্যা এড়াতে অবেশেষে সোমবার চালু হল মধ্যমগ্রাম আন্ডারপাস।
এ দিন আন্ডারপাস চালু করে বারাসতের সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী চেয়েছিলেন মধ্যমগ্রামে আন্ডারপাস হোক, চওড়া হোক রাস্তা। সেই কাজ আজ শেষ হল। এর ফলে, এই রাস্তায় আরও গতি আসবে।’’
কাকলিদেবীর সাংসদ কোটার ২ কোটি এবং রাজ্য পূর্ত দফতরের বাকি টাকায় মোট ৪ কোটি ২০ লক্ষ টাকায় তৈরি হয়েছে আন্ডারপাসটি। এ দিন রাজ্য পূর্ত দফতরের (৫ নম্বর জাতীয় সড়ক) এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার বিনোদকুমার সিংহ বলেন, ‘‘মধ্যমগ্রাম চৌমাথায় স্টেশনের দিক থেকে প্রায় ১০০ মিটার দীর্ঘ আন্ডারপাসটি বাদু রোডের দিকে গিয়েছে। এটি দিয়ে কেবলমাত্র পথচারীরাই যাতায়াত করতে পারবে।’’
বনগাঁ, বসিরহাট কিংবা বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে বারাসত হয়ে কলকাতা ঢুকতে গেলে সব চেয়ে আতঙ্কের পথ ছিল বারাসতের ডাকবাংলো মোড় এবং মধ্যমগ্রাম চৌমাথা। স্থানীয়দের অভিযোগ, চার দিক থেকে আসা যানবাহন আর পথচারীদের ‘দাপটে’ ওই দুই জায়গায় গাড়ির স্টার্ট বন্ধ করে দাঁড়িয়ে থাকতে হত দীর্ঘক্ষণ।
সোমবার ডিআইজি (উত্তর ২৪ পরগনা) তন্ময় রায়চৌধুরী জানান, শুধু পরিকাঠামোই নয়, ব্যস্ত ওই রাস্তায় ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণেও জোর দেওয়া হবে। এ দিন কাকলীদেবী বলেন, ‘‘মধ্যমগ্রাম চৌমাথা ও জাতীয় সড়ক যান চলাচলের পাশাপাশি স্থানীয়দের পুরসভা, হাসপাতাল, স্কুল, কলেজে যাতায়াতেরও একমাত্র পথ। আন্ডারপাস হওয়ায় দু’পক্ষেরই সমস্যা মিটল।’’
বিমানবন্দর থেকে বারাসত ডাকবাংলো মোড় পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তাটি ‘ওয়ান ওয়ে’ এবং চার লেন করার কাজ শেষের মুখে। ইতিমধ্যেই সে জন্য ৮০ কোটি টাকা মঞ্জুরও হয়েছে। মধ্যমগ্রামের বিধায়ক রথীন ঘোষ সোমবার জানান, রাস্তার তলা দিয়ে হাই ড্রেনের মাধ্যমে নিকাশির ব্যবস্থা হচ্ছে। মাঝখানে ডিভাইডার ছাড়াও যেখানে যেখানে সম্ভব (দোলতলা, মধ্যমগ্রাম চৌমাথার মতো সরু এলাকা বাদ দিয়ে) সার্ভিস লেন তৈরি করা হয়েছে।
এ দিন রাজ্য পূর্ত দফতরের সহকারী মুখ্য বাস্তুকার (জাতীয় সড়ক, সড়ক) রাজীব চট্টরাজ জানান, বনগাঁ, হাবরা (২ টি), অশোকনগর এবং বারাসতের কাজিপাড়ার রেলপথের উপরে পাঁচটি উড়ালপুল তৈরি হবে। বারাসত ১১ নম্বর রেলগেটেও একটি উড়ালপুলের পরিকল্পনা রয়েছে। এই কাজগুলো দ্রুত যাতে শেষ হয় সে ব্যাপারে উদ্যোগী হচ্ছে জেলা প্রশাসনও। এ দিন জেলাশাসক অন্তরা আচার্য বলেন, ‘‘যাতায়াতের সুবিধার জন্য চেষ্টা চলছে যত দ্রুত কাজগুলি শেষ করা যায়।’’ নিত্যযাত্রীদের কথায়, কাজ শেষ হলে যাত্রাপথের যন্ত্রণা যে অনেকটাই কমে যাবে তা বলাই বাহুল্য।