ফাইল চিত্র।
গাছের ডাল ধরে চোর ভিতরে চলে আসতে পারে! চুরি যেতে পারে দুষ্প্রাপ্য সামগ্রী। কে আর ঝুঁকি নেয়!
আর এই আশঙ্কাতেই জাদুঘরের সামনে গাছের ডাল ছাঁটার জন্য কলকাতা পুরসভার কাছে ‘মরিয়া’ আবেদন করেছেন ভারতীয় জাদুঘর কর্তৃপক্ষ! কর্তৃপক্ষ মনে করছেন, জাদুঘর সংলগ্ন এলাকায় গাছের ডালপালার যে ভাবে বাড়বাড়ন্ত হয়েছে, তাতে জাদুঘরের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে।
জাদুঘর সূত্রের খবর, পুরসভাকে গাছের ডাল ছাঁটার জন্য লিখিত ভাবে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কারণ, এতে সর্বাগ্রে জড়িত রয়েছে জাদুঘরের নিরাপত্তার বিষয়টি। জাদুঘরের অধিকর্তা রাজেশ পুরোহিত বলেন, ‘‘গাছের ডাল এমন ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে যে, তা ধরে যে কেউ ভিতরে চলে আসতে পারে। চুরি যেতে পারে দুষ্প্রাপ্য সামগ্রী। সে ঝুঁকি তো নিতে পারি না! তাই ডাল ছাঁটার আবেদন জানিয়েছি।’’ কর্তৃপক্ষের তরফে লিখিত ভাবে পুরসভাকে যে চিঠি দেওয়া হয়েছে, তাতে স্পষ্ট জানানো হয়েছে যে গাছের জন্য জাদুঘরের একাংশ ঢাকা পড়ে যাচ্ছে। এমনিতে গ্রেড ওয়ান হেরিটেজ স্থাপত্যের আলাদা নান্দনিক সৌন্দর্য রয়েছে। কিন্তু গাছের বিস্তারে বাধা পড়ে যাওয়ায় স্থাপত্যের ওই নান্দনিক অংশই সর্বসাধারণের চক্ষুগোচর হচ্ছে না। শুধু তাই নয়, জাদুঘর চত্বরে যে ঘাসের লন করা হচ্ছে, তাও পর্যাপ্ত সূর্যালোক পাচ্ছে না। ফলে ঘাসের বৃদ্ধিও বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে।
অধিকর্তা জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে পুরসভা এখনও উত্তর দেয়নি। জাদুঘর সূত্রে খবর, এমনিতে জাদুঘরের দু’ধরনের নিরাপত্তা বলয় রয়েছে। জাদুঘরের নিজস্ব স্থায়ী নিরাপত্তাকর্মী যাঁরা এমটিএস (মাল্টি সার্ভিস স্টাফ) নামে পরিচিত। তাঁদের সংখ্যা বর্তমানে ৩১জন। এ ছাড়াও এজেন্সির মাধ্যমে নিয়োগ করা নিরাপত্তাকর্মী রয়েছেন ৫১ জন। তবে জাদুঘরের নিরাপত্তার দায়িত্ব সিআইএসএফের হাতে দেওয়ার সিদ্ধান্ত ইতিমধ্যেই হয়েছে। আপাতত জওয়ানদের থাকার জায়গার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, জাদুঘর গ্রেড ওয়ান হেরিটেজ বলে সেখানে কোনও রকম কাজ করতে গেলেই আগে পুরসভার হেরিটেজ কমিটির অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে মূল ভবন সম্পর্কিত যে হেতু কোনও কাজ নয়, তাই উদ্যান দফতরের কাছে ওই ডাল ছাঁটার আবেদন জানানো হয়েছে। পুরসভা সূত্রে খবর, বছর দেড়েক আগে এক বার এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। তখন জাদুঘর কর্তৃপক্ষের আবেদন পেয়ে গাছের ডাল ছাঁটা হয়েছিল। এমনিতে নির্দিষ্ট সময় অন্তর শহরের গুরুত্বপূর্ণ ভবনগুলির সামনে গাছের ডাল ছেঁটে দেয় পুরসভা। এক পদস্থ পুরকর্তার কথায়, ‘‘নির্দিষ্ট সময় অন্তর আমরা ডালপালা ছেঁটে দিই। তবে কর্তৃপক্ষের আবেদন মতো ডাল ছাঁটার কাজ শীঘ্রই করে দেওয়া হবে।’’