সাতগাছির মোড়ে অটোর অপেক্ষায় যাত্রীরা। —নিজস্ব চিত্র
ব্রিগেডের প্রস্তুতি সভা উপলক্ষে এক নির্দেশেই বাগুইআটির সঙ্গে সংযোগকারী বিভিন্ন রুট থেকে একসঙ্গে উধাও হয়ে গেল অটো! যার জেরে বুধবার সন্ধ্যায় চূড়ান্ত দুর্ভোগের শিকার হলেন সাধারণ মানুষ।
আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অসুস্থ মাকে দেখিয়ে বিকেলে শ্যামনগর রোড এলাকার পাঁচমাথার মোড়ের বাড়িতে ফিরছিলেন রামরঞ্জন গুঁই। অভিযোগ, সেই পথে যেতে গিয়ে এ দিন শ্যামনগরের অটো স্ট্যান্ডে দীর্ঘ ক্ষণ অপেক্ষা করার পরেও অটো পাননি। অবশেষে ইউনিয়ন রুমে গিয়ে দুর্ভোগের কারণ জানতে পারেন তিনি। তৃণমূল সমর্থিত শ্রমিক সংগঠনের ইউনিয়ন রুমের বোর্ডে এ দিনের তারিখ দিয়ে লেখা, ‘আজ বিকাল ৫টা থেকে ৬টা পর্যন্ত রুট বন্ধ থাকবে এবং সকল চালক বাগুইআটি মোড়ে যাবে’। স্থানীয় তৃণমূল সূত্রের খবর, জমায়েতের এই নির্দেশ শ্যামনগর রুটের পাশাপাশি অলিখিত ভাবে বাগুইআটি থেকে সাতগাছি, উল্টোডাঙা, জগৎপুর, হাতিয়াড়া রুটেও ছিল। কিন্তু সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে বাগুইআটি-সাতগাছি এবং বাগুইআটি-শ্যামনগর রুটে।
কিন্তু বাগুইআটি মোড়ে জমায়েত হয়ে অটোচালকেরা গেলেন কোথায়? স্থানীয় তৃণমূল সূত্রের খবর, রাজারহাট-গোপালপুর ও রাজারহাট-নিউ টাউন বিধানসভার ডাকে বুধবার বিকেলে চিনার পার্কে ব্রিগেডের একটি প্রস্তুতি সভা ছিল। সেখানে মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী, বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক তথা মন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু, বিধায়ক ও বিধাননগর পুরসভার মেয়র সব্যসাচী দত্ত এবং সাংসদ দোলা সেন। ওই সভায় এ দিন হাজিরা দেন অটোচালকেরা।
শ্যামনগরে অটোর লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রী সঞ্জয় ঘোষ বলেন, ‘‘শুনছি, বাগুইআটিতে ব্রিগেডের জন্য সভায় গিয়েছেন অটোচালকেরা। কত মানুষের জরুরি কাজ রয়েছে। এ ভাবে অসুবিধায় ফেলে অটো বন্ধ রাখা ঠিক নয়।’’ বিকাল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ সাতগাছি মোড়ে দেখা যায়, অটোর অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে জনা ৭০। তাঁদেরই এক যাত্রী দীপঙ্কর সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘আধ ঘণ্টার বেশি দাঁড়িয়ে রয়েছি। রাজনৈতিক সভার জন্য অটো তুলে নেওয়া হল!’’ শ্যামনগর এবং সাতগাছি থেকে বাগুইআটি যেতে অটোই ভরসা। সুযোগ বুঝে এ দিন সাতগাছি মোড়ে রিকশচালকেরা ৭০-১০০ টাকা পর্যন্ত দর হেঁকেছেন বলে অভিযোগ। অন্য এক যাত্রী শর্মিষ্ঠা ভকত বলেন, ‘‘মেট্রো ধরে গড়িয়া যাওয়ার কথা ছিল। অটো না পেয়ে বাড়ি ফিরে আসি। রিকশা পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।’’ অবশেষে সন্ধ্যা ছ’টার পরে পরিষেবা আংশিক স্বাভাবিক হয়। তত ক্ষণে মানুষের ভোগান্তির খবর স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের কানেও পৌঁছেছে।
স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের কারিগরী শিক্ষামন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু বলেন, ‘‘কিছু কিছু জায়গায় মানুষের অসুবিধা হওয়ায় আমরা দুঃখিত। সাধারণ মানুষের কাছে ক্ষমা চেয়ে বলছি, এটা ব্যতিক্রমী ঘটনা হিসাবেই দেখুন। রোজ তো এমন হয় না!’’