রূপায়ণ: এখানেই গড়ে উঠবে অতিথিশালা। নিজস্ব চিত্র
দুর্গাপুজোর শতবর্ষে এলাকাতেই একটি বাড়ি কিনেছিল বাগবাজার সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি। এ বার সেই বাড়িতে পুণ্যার্থী ও পর্যটকদের থাকার জন্য একটি অতিথিশালা তৈরির পরিকল্পনাও করেছেন কমিটির সদস্যেরা। চলতি বছরের শেষে বা আগামী বছরের শুরুতে সেটি তৈরি শুরু হবে বলে কমিটির তরফে জানানো হয়েছে।
২/১ বাগবাজার স্ট্রিটে ২০১৭ সালে একটি দোতলা বাড়ি কিনেছিল বাগবাজার সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি। সেটি আপাতত ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এ বারে সেই জায়গায় অতিথিশালা এবং গরিবদের জন্য নিখরচায় চিকিৎসাকেন্দ্র তৈরিরও পরিকল্পনা করেছে পুজো কমিটি।
কমিটির সাধারণ সম্পাদক গৌতম নিয়োগীর কথায়, ‘‘বাগবাজারের সঙ্গে প্রাচীন কলকাতার ইতিহাস জড়িয়ে রয়েছে। বহু মনীষী বাগবাজারে পা রেখেছেন। অদূরেই গঙ্গা। সেখানে শান্তি-স্বস্ত্যয়নের কাজ করতে বাইরে থেকে অনেকেই আসেন। কিন্তু অনেক সময়ই তাঁরা থাকার জায়গা পান না। তাঁদের কথা ভেবেই এই পরিকল্পনা।’’
বাগবাজার চত্বরে রয়েছে মা সারদার বাড়ি, গৌড়ীয় মঠ, গিরিশ ঘোষের বাড়ি, বলরাম মন্দির। এই জায়গাগুলিতে ভক্তদের যাতায়াত সারা বছরই লেগে থাকে। কিন্তু বাইরে থেকে কলকাতায় এসে অনেককেই রাত্রিবাসের জন্য সমস্যায় পড়তে হয়।
পুজো কমিটির প্রাক্তন কর্মকর্তা সন্দীপ মুখোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘এটা মধ্যবিত্তদের পাড়া। অতিথিশালার চল নেই। যাঁরা আসেন তাঁদের বেশি ভাড়া দিয়ে হোটেলে উঠতে হয়। আমাদের লক্ষ্য ন্যায্য মূল্যে লোকজনকে থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়া।
পুজো কমিটির সদস্যেরা জানান, পুরনো বাড়িটি যে জমির ওপরে ছিল, সেখানে একটি পাঁচতলা বাড়ি তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। সেখানে ছয় থেকে সাতটি ঘর অতিথিশালার জন্য থাকবে। কমিটির সদস্যেরা জানান, অতিথিশালা তৈরির পরিকল্পনার পিছনে একটি ভাবনা প্রাথমিক ভাবে কাজ করেছে। সেটি হল, ওই জায়গায় কারও বাড়িতে কোনও অনুষ্ঠান হলে বাইরে থেকে আসা অতিথিদের রাত্রিবাসের জায়গার সমস্যা হয়। পুরনো আমলের বাড়িতে গৃহকর্তা সব সময়ে অতিথিদের নিজের বাড়িতে থাকার জায়গা দিতে পারেন না। এ ছাড়াও পুজোর সময়ে বাগবাজারের পুজোর সঙ্গে জড়িত প্রবাসী কোনও কোনও সদস্য কলকাতায় আসেন। তাঁরাও ওই অতিথিশালায় থাকতে পারবেন। এমন ভাবনা থেকেই এটি তৈরির পরিকল্পনা হয়েছে।
যে বাড়িটি পুজো কমিটি কিনেছিল সেটিতে কয়েক ঘর ভাড়াটেও ছিলেন। তাঁদের অন্যত্র থাকার ব্যবস্থাও করেছে পুজো কমিটি। প্রাক্তন কর্মকর্তা সন্দীপবাবুর কথায়, ‘‘আমরা সামাজিক কাজ করতেই উৎসাহী। ফলে ভাড়াটেদেরকেও পুনর্বাসন দেওয়া হবে। নতুন যে পাঁচতলা বাড়ি তৈরি হবে সেখানে তাঁদের জন্য ঘর বরাদ্দ করা হচ্ছে। কারণ তাঁদের অন্য কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই।’’