মাত্র সাত দিন। তার মধ্যেই ৭৬ জনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে গায়েব হয়ে গিয়েছে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা। প্রত্যেকেই কলকাতার বাসিন্দা। মাসের শেষে হঠাৎ এই বিপর্যয়ে মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়েছিল গ্রাহকদের। মঙ্গলবার অবশ্য সকলকেই আশ্বস্ত করল কলকাতা পুলিশ। জানাল, যাঁদের টাকা গায়েব হয়েছে, তাঁরা প্রত্যেকেই টাকা ফেরত পাবেন।
সাইবার অপরাধীরা দিল্লিতে বসে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে বলে কলকাতা পুলিশ এ দিন জানিয়েছে। এটিএম কার্ড ক্লোন করে এবং স্কিমিং পদ্ধতিতে লক্ষ লক্ষ টাকা অ্যাকাউন্ট থেকে হাতানো হয়েছে বলেও পুলিশ নিশ্চিত।
এ দিন কানাড়া ব্যাঙ্ক, পঞ্জাব ন্যাশেনাল ব্যাঙ্ক, কোটাক ব্যাঙ্ক এবং ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার পদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন পুলিশ কর্তারা। মূলত এই চারটি ব্যাঙ্কের গ্রাহকদের টাকাই গায়েব হয়েছে। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের তরফে পুলিশকে আশ্বস্ত করে বলা হয়েছে,গ্রাহকদের টাকা ফিরিয়ে দেওয়া হবে। আগামী সাত থেকে দশ দিনের মধ্যে টাকা ফেরত দেওয়া চেষ্টা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:কলকাতার বহু ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে দু’দিনে লক্ষ লক্ষ টাকা গায়েব!
আরও পড়ুন: ‘টাকার দাবি না মেটালে খুব কষ্ট দেবে’
ব্যাঙ্ক জালিয়াতির তদন্তের জন্য কলকাতা পুলিশের সাইবার ক্রাইম শাখার প্রধান সন্তোষ পান্ডের নেতৃত্বে ‘স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম’ (সিট) গঠন করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই পুলিশের হাতে বেশ কিছু তথ্য এসেছে। সেগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যে এটিএম গুলি থেকে টাকা গায়েব হয়েছে, সেগুলি পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, দিল্লি থেকেই এই জালিয়াতি চক্র নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে।
দক্ষিণ কলকাতা থেকেই এই এটিএম জালিয়াতির ঘটনার কথা প্রথমে সামনে আসে। গড়িয়াহাট, লেক গার্ডেন্স এলাকার বেশ কয়েক জন বাসিন্দার টাকা গায়েব হয়েছে বলে জানা যায়। প্রতারিত হয়ে থানায় অভিযোগ করেন ওই ব্যাঙ্ক গ্রাহকরা। পরে জানা যায়, কলকাতার অন্যত্রও একই ঘটনা ঘটেছে। একে একে কলকাতার বিভিন্ন থানায় অভিযোগ জমা পড়ছে। এখনও পর্যন্ত মোট ৭৬ জনের অভিযোগ এসেছে। যাঁদের টাকা খোওয়া গিয়েছে, তাঁদের দ্রুত ব্যাঙ্কের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় নথিপত্র জমা দিতে বলা হয়েছে। কানাড়া ব্যাঙ্ক সূত্রে খবর, যে এটিএম থেকে জালিয়াতি হয়েছে, ইতিমধ্যেই সেখানে ব্যবহৃত কয়েকশো কার্ড সাময়িক ভাবে ব্লক করা হয়েছে। যাতে ওই সব কার্ডের তথ্য দিয়ে আর টাকা হাতাতে না পারে জালিয়াতরা। এখনও নতুন নতুন অভিযোগ জমা পড়ছে। আরও কয়েকটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের গ্রাহকরাও একই রকম অভিযোগ করছেন বলে জানা যাচ্ছে।