Domestic Violence

নিজের বাড়িতেও তরুণীকে স্বামীর মার, চেষ্টা আত্মহত্যার

বছর সাতেক আগে নৈহাটির বাসিন্দা ওই যুবকের সঙ্গে বিয়ে হয় বেড়াচাঁপার বাসিন্দা এই তরুণীর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০২:১৫
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

শ্বশুরবাড়িতে স্বামীর অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে মেয়েকে নিয়ে নিজের মা-বাবার কাছে চলে এসেছিলেন তরুণী। তাঁদের সঙ্গে ঘর ছেড়ে শ্বশুরবাড়িতে থাকতে শুরু করে স্বামীও। অভিযোগ, সেখানেও সমানে চলত স্ত্রীর উপরে অত্যাচার। অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে গলায় কাপড়ের ফাঁস দিয়ে শুক্রবার আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন ওই তরুণী। কোনও মতে তাঁকে উদ্ধার করেন পরিবারের লোকজন। পরে সারা শরীরে মারের ক্ষতচিহ্ন দেখিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। এ দিন স্থানীয় চিকিৎসককে দেখানোর পরে দাদা ও মাকে নিয়ে দেগঙ্গা থানায় এসে পুরো ঘটনা জানান তিনি। স্বামীর বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগও দায়ের করেন। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্ত যুবক পলাতক। তার খোঁজে তল্লাশি চলছে।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রের খবর, বছর সাতেক আগে নৈহাটির বাসিন্দা ওই যুবকের সঙ্গে বিয়ে হয় বেড়াচাঁপার বাসিন্দা এই তরুণীর। তাঁদের ছ’বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। এ দিন তরুণীর দাদা জানান, বিয়ের কিছু দিন পর থেকেই কাজে যাওয়া বন্ধ করে দেয় তাঁর ভগ্নীপতি। নানা কারণে স্ত্রীকে মারধরও করতে থাকে। সেই অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে মা, দাদাকে সমস্ত ঘটনা জানান ওই মহিলা। ঘটনাটি নিয়ে নৈহাটিতে স্থানীয় বাসিন্দারা একটি সালিশি সভাও করেন। সেখানে ছেলেকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তাঁর

বাবা-মা। এ দিন মেয়েটির দাদা বলেন, ‘‘এমন পরিস্থিতিতে সভার সিদ্ধান্ত মতো বছর তিনেক আগে বোন, ভগ্নীপতি আর ভাগ্নিকে আমাদের বাড়িতে নিয়ে আসি। ভাগ্নিকে এ‌খানেই স্কুলে ভর্তি করি। ওদের থাকা-খাওয়ারও দায়িত্ব নিই। ভেবেছিলাম, আমাদের কাছে থাকলে হয়তো ধীরে ধীরে সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু তার পরেও কমেনি অত্যাচার।’’

Advertisement

জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে ঘরের দরজা বন্ধ করে গলায় কাপড়ের ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করতে যান তরুণী। তাঁর মেয়ের চিৎকার শুনে ছুটে আসেন বাড়ির লোকজন। কোনও মতে তরুণীকে উদ্ধার করা হয়। মেয়েটির দাদা আরও বলেন, ‘‘বোন এত দিন লজ্জায় কিছু বলতে চায়নি। আজ সব ঘটনা খুলে বলে। দেখি, মারের চোটে বোনের সারা শরীরে কালশিটে। তার পরেই পুলিশের কাছে যাই।’’

তরুণীর মা এ দিন বলেন, ‘‘এখানে এনে ছেলের দোকানে কাজে লাগিয়েছিলাম জামাইকে। ওর চাহিদা মেটাতে আমার মেয়ে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর থেকে ধার নিয়ে এক লক্ষ টাকা দিয়ে মোটরবাইক, ২৫ হাজার টাকা দিয়ে মোবাইল কিনে দিয়েছে। ওই ভাবে চাহিদা মেটানো যে ভুল ছিল, তা এখন বুঝতে পারছি। অনেক আগেই আমাদের রুখে দাঁড়ানো উচিত ছিল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন