Behala

Behala fight: তিন দিন পরেও কেন গ্রেফতার মুষ্টিমেয়, ফুঁসছে চড়কতলা

মঙ্গলবার রাতের দুষ্কৃতী-তাণ্ডবের পরে উভয় পক্ষই বেহালা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিল। তার ভিত্তিতে পুলিশ ১২ জনকে হেফাজতে নেয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২২ ০৭:১৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

বেহালার চড়কতলায় দুষ্কৃতী-তাণ্ডবের পরে কেটে গিয়েছে তিন দিন। এখনও অধরা মূল অভিযুক্ত সোমনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ওরফে বাপান। ওই ঘটনায় শুক্রবার আরও চার জন গ্রেফতার হলেও পুলিশ মূল অভিযুক্তের নাগাল না পাওয়ায় তাদের ভূমিকা নিয়ে ফের সরব হয়েছেন এলাকাবাসী। তাঁদের প্রশ্ন, ভাইরাল হওয়া একাধিক ভিডিয়োয় যেখানে কয়েকশো যুবককে তাণ্ডব চালাতে দেখা যাচ্ছে, সেখানে গ্রেফতারির সংখ্যা এত কম কেন? কেন ওই ভিডিয়ো খুঁটিয়ে দেখে বাকিদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করছে না পুলিশ?

Advertisement

তদন্তকারীদের অনুমান, এই ঘটনায় গ্রেফতারি এড়াতে একাধিক বার জায়গা বদল করেছেন মূল অভিযুক্ত বাপান। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখার পাশাপাশি তিনি তাঁর কোনও আত্মীয়ের বাড়িতে অথবা অন্য কোথাও গা-ঢাকা দিয়েছেন কি না, তা দেখছেন তদন্তকারীরা। তবে স্থানীয় বাসিন্দারা বাপানের পাশাপাশি তাঁর সঙ্গীদেরও গ্রেফতার করার দাবি তুলেছেন। তাঁদের আরও দাবি, এলাকায় সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য বন্ধে অবিলম্বে সক্রিয় হোক পুলিশ। এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘ঘটনার সময়ের ভিডিয়োয় কয়েকশো ছেলেকে দেখা গিয়েছে। যদি ধরেও নিই সোমনাথ পালিয়েছে, কিন্তু বাকিরা? তাদেরকেও কি পুলিশ খুঁজে পাচ্ছে না? অথচ, তাদের কয়েক জন তো এখনও এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে।’’ এই পরিপ্রেক্ষিতে এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘ইতিমধ্যেই সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে খতিয়ে দেখা হয়েছে। তাতে বেশ কয়েক জনকে চিহ্নিত করা গিয়েছে। নতুন করে গ্রেফতারিও হয়েছে। এই ঘটনায় যারা যুক্ত, তাদের কাউকেই ছাড়া হবে না। শীঘ্রই বাকি অভিযুক্তেরা ধরা পড়বে।’’

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার রাতের দুষ্কৃতী-তাণ্ডবের পরে উভয় পক্ষই বেহালা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিল। তার ভিত্তিতে পুলিশ ১২ জনকে গ্রেফতার করে হেফাজতে নেয়। বৃহস্পতিবার রাতে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয় আরও চার জনকে। শুক্রবার তাদের আদালতে তোলা হলে আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। এই নিয়ে ওই ঘটনায় গ্রেফতারির সংখ্যা দাঁড়াল ১৬। যদিও যাঁর নাম বার বার সামনে আসছে, সেই বাপান এখনও অধরা। বৃহস্পতিবার স্থানীয় বিধায়ক রত্না চট্টোপাধ্যায় বাপানের পরিবারের সদস্যদের বলেছিলেন, তিনি যেন শীঘ্রই পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। কিন্তু এ দিন রাত পর্যন্ত বিধায়কের সেই কথার কোনও প্রতিফলন দেখা যায়নি।

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, মঙ্গলবার রাত দশটা থেকে শুরু হয়েছিল তাণ্ডব। চড়কের মেলাকে সামনে রেখে গন্ডগোলের সূত্রপাত হলেও আসলে ওই ঘটনার পিছনে ছিল সিন্ডিকেটের ঝামেলা। সেই সঙ্গে ছিল এলাকা দখলে রাখার মরিয়া চেষ্টা। তার জেরেই বাঁশ, লাঠি, রড নিয়ে তাণ্ডব চলে। ভাঙচুর চালানো হয় রাস্তায় দাঁড় করিয়ে রাখা একের পর এক গাড়িতে। মারধর করা হয় একাধিক জনকে। বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি চলে বলেও জানিয়েছিলেন বাসিন্দারা।

বৃহস্পতিবার আদালতে পুলিশও একাধিক রাউন্ড গুলি চলার কথা জানিয়েছিল। পুলিশ আরও জানিয়েছিল, দু’জনকে মারধরের পাশাপাশি বন্দুকের বাঁট দিয়েও কয়েক জনকে পেটায় অভিযুক্তেরা। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে মূল অভিযুক্ত বাপান-সহ বাকিদের সন্ধান পেতে চাইছে পুলিশ। পুলিশ গ্রেফতারি ও যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হলেও আতঙ্ক কাটছে না বাসিন্দাদের। দল না দেখে দোষীদের গ্রেফতার করে কড়া শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন