আজও জলমুক্ত হল না বেলুড় আন্ডারপাস

সামান্য বৃষ্টিতেই জলমগ্ন হয়ে পড়ে বেলুড় স্টেশনের আন্ডারপাস। তখন পুরসভা ও পঞ্চায়েত এলাকার মধ্যে যাতায়াত করতে বিপজ্জনক ভাবে রেললাইন পারপার করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৭ ০১:১২
Share:

দুর্দশা: জলে ডোবা বেলুড় আন্ডারপাস।

প্রতি বছরই বেলুড়ের মানুষ আশায় থাকেন আর বোধ হয় জল জমবে না। কিন্তু ফি বছরই সেই আশায় ছাই পড়ে। সামান্য বৃষ্টিতেই জলমগ্ন হয়ে পড়ে বেলুড় স্টেশনের আন্ডারপাস। তখন পুরসভা ও পঞ্চায়েত এলাকার মধ্যে যাতায়াত করতে বিপজ্জনক ভাবে রেললাইন পারপার করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

Advertisement

এ বছরও সেই ছবির কোনও পরিবর্তন হয়নি। কয়েক দিনের বৃষ্টিতে বারবারই দেখা গিয়েছে জলমগ্ন আন্ডারপাস। বৃষ্টি হলেই আন্ডারপাসের নিচে প্রায় কোমর সমান জল জমে যাচ্ছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, অন্যান্য জায়গায় জল জমলেও তা বৃষ্টি থামার কিছু পরেই নেমে যায়। কিন্তু ওই আন্ডারপাসের জল সরাতে গেলে স্থানীয় বাসিন্দা ও জন প্রতিনিধিদের নিজেদের জলে নামতে হয়। ট্রেন যাত্রী থেকে শুরু করে বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রশাসনের সর্বস্তরে বারবার অভিযোগ জানিয়েও এই ‘রোগ’ এর ওষুধ মেলেনি।

কয়েক দিন আগেই এক কয়েক ঘণ্টার ভারী বৃষ্টিতে জল দাঁড়িয়ে যায় বেলুড় স্টেশন আন্ডারপাসে। আকাশ পরিষ্কার হওয়ায় একটু বেলার দিকে এলাকার অন্যত্র জমা জল নেমে যায়। কিন্তু বিকেলেও বেলুড়ের ওই আন্ডারপাসটি জলে ডুবে ছিল, বলছেন এলাকাবাসী।

Advertisement

বালি পুর এলাকা থেকে খাবার জলের জ্যারিকেন ভর্তি ভ্যান ঠেলে নিয়ে চালক সুশান্ত মোদক আনন্দনগরে যাচ্ছিলেন। আন্ডারপাসের সামনে এসে তিনি ঠাহর করতে পারলেন না ঠিক কতটা জল জমে রয়েছে। জলে নামতেই প্রায় ডুবে যাওয়ার অবস্থা। যাত্রীদের অভিযোগ, অতিরিক্ত ভাড়া দিলেও আন্ডারপাস পেরোতে রাজি হচ্ছেন না রিকশাচালকেরা। এক চালক বলেন, ‘‘টাকার লোভে ডুবে মরার কোনও ইচ্ছা নেই। ওখানে এত জল জমে যে, বেঁটে মানুষ হলে পুরো ডুবে যাবেন।’’

বাধ্য হয়ে রেললাইন টপকে পারাপার।

সাইকেল নিয়েও বিপজ্জনক ভাবে পাঁচটি রেললাইন পার করতে হয় আরোহীদের। এ দিকে, আন্ডারপাস থেকে স্টেশনে ওঠা-নামার সিঁড়ি জলের তলায় চলে যাওয়ায় ট্রেন যাত্রীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রেললাইন পারাপার করেই যাওয়া-আসা করছেন। অভিযোগ, জমা জল বের করার জন্য রেলের পাম্প চালানোর কথা থাকলেও তা ঠিক মতো চলে না। যদিও রেল কর্তৃপক্ষের দাবি, পাম্প ঠিকমতো চলে। কিন্তু পাম্প করে জল যে পাত-কুয়োয় ফেলা হয়, তার থেকে জল বেরিয়ে যাওয়ার নালার মুখটিই জমে গিয়েছে। ফলে পাতকুয়ো থেকে জল পচা খালে যাওয়ার বদলে ফের আন্ডারপাসেই ফিরে আসছে। তবে এ জন্য রেলের নিযুক্ত ঠিকাদার

সংস্থার উদাসীনতাকেই দায়ী করছেন স্টেশন কর্তৃপক্ষ।

স্থানীয় কাউন্সিলর প্রাণকৃষ্ণ মজুমদার বলেন, ‘‘রেলের গয়ংগচ্ছ মনোভাবের জন্যই এই সমস্যা মিটল না। বৃষ্টি হলেই জল জমার আতঙ্ক দেখা দেয়। সে দিনও দু’টি অতিরিক্ত পাম্পের ব্যবস্থা করে জল বের করতে হয়েছে।’’ পূর্ব রেলের এক কর্তা বলেন, ‘‘বেলুড় স্টেশনের সমস্যাটি দীর্ঘদিনের। কেন সমস্যা মিটছে না তা দেখতে রেলের ইঞ্জিনিয়ারেরা কিছু দুন আগে ওই আন্ডারপাসটি পরিদর্শন করে এসেছেন। আশা করা যায় দ্রুত কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

নিজস্ব চিত্র

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন