কোপের আশঙ্কায় ‘বহিরাগত’ ডাক্তারের হাসপাতাল

সম্প্রতি জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনে তাঁদের এক চিকিৎসককে দেখা গিয়েছে। যাঁকে ‘বহিরাগত’ তকমা দিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৯ ০১:৪৭
Share:

ক্যালকাটা হার্ট ক্লিনিক ও হসপিটাল

‘বহিরাগত’ তকমা পাওয়া এক চিকিৎসক তাঁদের হাসপাতালে কর্মরত। ফলে কোপ আসতে পারে হাসপাতালের উপরেও। রবিবার থেকে এমনই আশঙ্কায় ভুগছেন সল্টলেকের ‘ক্যালকাটা হার্ট ক্লিনিক ও হসপিটাল’ কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

সম্প্রতি জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনে তাঁদের এক চিকিৎসককে দেখা গিয়েছে। যাঁকে ‘বহিরাগত’ তকমা দিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই মুহূর্তে গায়ক প্রতুল মুখোপাধ্যায় ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁকে দেখতে আসা সরকারি আধিকারিকদের অনেকেই হাসপাতাল সম্পর্কে বিস্তারিত খোঁজ নিচ্ছেন। ইতিমধ্যেই এক গোয়েন্দা অফিসার গিয়ে হাসপাতাল সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে এসেছেন। এতেই আশঙ্কা ছড়িয়েছে হাসপাতালের অন্দরে।

‘সল্টলেকের আরক্ষা ভবন থেকে আসছি’, বলে এক গোয়েন্দা অফিসার শুক্রবার হাসপাতালে পৌঁছন। কর্তৃপক্ষ জানান, এর আগে কোনও দিন পুলিশ গিয়ে হাসপাতাল সম্পর্কে খোঁজ নেয়নি। হাসপাতালে কত শয্যা রয়েছে, কত রোগী ভর্তি রয়েছেন, ক’জন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মী আছেন প্রভৃতি প্রশ্ন করেন ওই অফিসার। এমনকি, বহির্বিভাগ খোলা কি না, তা-ও জানতে চান তিনি। সরকারি হাসপাতালগুলিতে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের সমর্থনে বহির্বিভাগ বন্ধ রয়েছে, অফিসার জানতে চান, হার্ট ক্লিনিকেও তেমন কিছু হচ্ছে কি না।

Advertisement

হাসপাতালের চিকিৎসক ও কর্মীদের প্রশ্ন, অন্য বেসরকারি হাসপাতালেও কি গোয়েন্দারা গিয়ে এই সব তথ্য আনছেন? বিধাননগরের পুলিশ কমিশনার এল এন মীনা এ দিন বলেন, ‘‘এ রকম কিছু জানা নেই। আমি কাউকে পাঠাইনি। অন্য কেউ পাঠালে জানি না।’’ গত মঙ্গলবার এন আর এস কাণ্ডে জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি শুরু হয়। তারই প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার এসএসকেএমে যান মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই তিনি অভিযোগ করেন, জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনে বহিরাগতরা আছেন। পরে তৃণমূলের তরফে ‘বহিরাগত’ হিসেবে হার্ট ক্লিনিকের চিকিৎসক দীপক গিরির ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। শুক্রবার নবান্নেও সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী সল্টলেকের ওই হাসপাতালের নাম উল্লেখ করেন।

নিজস্ব মহলে দীপক গিরি জানিয়েছেন, তিনি দন্ত চিকিৎসক। অন্য চিকিৎসকদের আন্দোলনকে সমর্থন করে সেখানে গিয়েছিলেন। এর মধ্যে কোনও অন্যায় দেখছেন না। এ প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘সিঙ্গুরে চাষিদের পাশে দাঁড়িয়ে মমতা যখন আন্দোলন করেছিলেন, তখন তিনিও সেখানে বহিরাগতই ছিলেন।’’

হাসপাতালের সাম্মানিক সেক্রেটারি চিকিৎসক কিষাণ প্রধানের কথায়, ‘‘হাসপাতালে দুশো ডাক্তার-সহ প্রায় তিনশো নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী যুক্ত। কর্মীদের মধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক চিন্তার মানুষ রয়েছেন। ডিউটির বাইরে কর্মীরা কে কোথায় যাচ্ছেন, তা কর্তৃপক্ষের দেখা বা জানার কথা নয়। আমাদের কাজ পরিষেবা দেওয়ার।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন