প্রতীকী ছবি।
খেলায় কোন দল জিতবে এবং কে হারবে, তা নিয়ে বেটিং তো চলতই। এ বার আবার প্রতি বলের সঙ্গেই বদলে যাচ্ছিল জুয়ার দর। ওভারের প্রথম বলের সময়ে জুয়ার দর যা হচ্ছিল, পরপর চার-ছয় কিংবা উইকেট পড়লেই তা বদলে যাচ্ছিল। বুধবার রাতে ভবানীপুরের রমেশ মিত্র রোডের একটি গেস্ট হাউস থেকে গ্রেফতার হওয়া তিন যুবককে জেরা করার পরে ওই তথ্য জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। উত্তরপ্রদেশের বারাণসীর বাসিন্দা ওই তিন যুবককে ক্রিকেট বেটিংয়ের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করেছিল ভবানীপুর থানা।
তদন্তকারীদের দাবি, ধৃত কৃষ্ণকুমার জ্যোতি, সুনীলকুমার সাউ এবং সুভান কুমার নামে যুবকেরা বেটিং চক্রের ‘পান্টার’। বেটিংয়ে অংশ নিতে চাইলে তাঁরাই বুকিদের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেন। মুম্বইতে থাকা বুকিদের হয়ে এঁরা কলকাতায় কাজ করতে এসেছিলেন। তাঁদের নির্দেশ মতোই আইপিএলের বেটিংয়ের অঙ্কের পরিমাণ ঠিক করা হচ্ছিল। পুলিশের দাবি, ধৃতেরা জানিয়েছেন, খেলা শুরু হওয়ার আগে টস থেকেই ওই জুয়া শুরু হয়। কোন দল টসে জিতবে এবং বোলিং বা ব্যাটিং আগে নেবে, তা নিয়েই শুরু হয়ে যায় বেটিং। পিচ ব্যাটসম্যানদের পক্ষে না বিপক্ষে এবং তা কী রকম আচারণ করবে, ওভারে কত রান উঠবে বা উইকেট পড়বে কি না, সে সব নিয়েও চলে টাকার খেলা।
পুলিশ জেনেছে, প্রথমে একটি অ্যাপে নাম নথিভুক্ত করতে হয় ওই জুয়ায় অংশ নেওয়ার জন্য। এর পরে পান্টারেরা কথা বলে তাঁদের সঙ্গে বুকিদের যোগাযোগ করিয়ে দেন। অনলাইনে টাকার লেনদেন হলেও পান্টারেরাই জানিয়ে দেন, কত রেট যাচ্ছে। সেটাই চিরকুটে লিখে রাখা হয়। হোটেলের ঘর থেকে তেমনই চিরকুট উদ্ধার করেছিল পুলিশ। পুলিশের দাবি, এ বার আইপিএল চলাকালীন গিরিশ পার্কের হোটেল এবং ইডেন গার্ডেন্স থেকে যে দশ জনকে ক্রিকেট বেটিংয়ের জন্য গ্রেফতার করা হয়েছিল, তাঁদের সঙ্গে এই পান্টারদের যোগসূত্র মেলেনি। তবে ধৃতেরা কলকাতার আগে উত্তরপ্রদেশেও দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় ছিলেন। ধৃতদের কাছ থেকে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, বল পিছু বেটিংয়ে দর ছিল কম করে আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা। সময় বিশেষে তা অবশ্য পাল্টে যায়।