গাছের স্বাস্থ্য পরীক্ষার উপায় নেই বিধাননগরে

শুক্রবার ফণীর প্রভাবে ঝিরঝিরে বৃষ্টির সঙ্গে দমকা হাওয়া চলেছিল সল্টলেকে। সে দিন সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে আটটি গাছ পড়ে যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০১৯ ০২:০৮
Share:

সল্টলেকের ফুটপাতে পড়ে রয়েছে গাছের ডাল। নিজস্ব চিত্র

রোগীর জন্য ওষুধ প্রয়োজন। কিন্তু কে দেবে ওষুধ? আর তা কোথায় পাওয়া যাবে— তা পরিষ্কার নয়।

Advertisement

এমনই অবস্থা বিধাননগর পুরসভার। ফণী না এলেও তার প্রভাবে চলা দমকা হাওয়াতেই ১৫টি গাছ পড়েছে। ফলে পরিকল্পনা করা হচ্ছে গাছের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানোর। কিন্তু সেই সংক্রান্ত পরিকাঠামো কার্যত নেই বিধাননগরের। তা স্বীকারও করে নিয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ। তবে তাঁদের দাবি, সীমিত ক্ষমতা নিয়েও কিন্তু তাঁরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

শুক্রবার ফণীর প্রভাবে ঝিরঝিরে বৃষ্টির সঙ্গে দমকা হাওয়া চলেছিল সল্টলেকে। সে দিন সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে আটটি গাছ পড়ে যায়। রাতে ফের সল্টলেকের সাই কমপ্লেক্স, মেলা প্রাঙ্গণ এলাকা মিলিয়ে আরও তিনটি গাছ পড়ে। অন্যান্য বিভিন্ন জায়গা মিলিয়ে আরও চারটি গাছ পড়ে। তবে বিপদের আশঙ্কা করে বৃহস্পতিবার রাতে গোড়া আলগা হয়ে যাওয়া কয়েকটি গাছ এবং গাছের ডাল কেটে দেয় পুরসভা।

Advertisement

পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, তাঁরা ভাবছেন গাছের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে গাছের পরিচর্যা করতে।

কিন্তু মাত্র চার বছরের কর্পোরেশনের পক্ষে সম্পূর্ণ রূপে শুধুমাত্র গাছের রক্ষণাবেক্ষণ সংক্রান্ত পরিকাঠামো এখনও গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি। এক পুরকর্তার কথায়, মাত্র চার বছর আগে কর্পোরেশন তৈরি হয়েছে। পর্যায়ক্রমে পরিকাঠামো তৈরি হচ্ছে। কর্মী সংখ্যা থেকে যন্ত্রসামগ্রীর ক্ষেত্রে সীমিত ক্ষমতা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে।’’ তিনি জানান, গাছের সুরক্ষা নিয়ে অনেক দিন ধরেই চিন্তাভাবনা চলছে। বেশ কিছু গাছ হয় হেলে রয়েছে না হয় বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কতায় কয়েকটি গাছ কাটা হয়েছে। কয়েকটি গাছের ডাল ছাঁটা হয়েছে। কিন্তু সেটাই স্থায়ী সমাধান নয়। তাই কী ভাবে গাছপালার সুরক্ষা দেওয়া যায় তাই নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে।

গাছ ভেঙে দুর্ঘটনা এড়াতে পুরসভার পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানিয়েছেন বিধাননগরের বাসিন্দাদের অনেকেই। তবে বাসিন্দাদের একাংশ মনে করেন বিধাননগর এলাকায় পরিকল্পিত বনসৃজনের প্রয়োজন। এক সময় সল্টলেকের বিভিন্ন আইল্যান্ডে গাছ ছিল। সৌন্দর্যায়নের নামে সেই সব আইল্যান্ডে গাছের বদলে কংক্রিটের স্থাপত্য প্রাধান্য পাচ্ছে। সেই সব জায়গায় পরিকল্পিত ভাবে গাছ লাগিয়ে সৌন্দর্যায়ন করা যেতে পারে। কারণ এক সময় অপরিকল্পিত ভাবেই সল্টলেকের বিভিন্ন জায়গায় গাছ লাগানো হয়েছিল। সেই সব গাছ এখন পরিণত হয়ে গিয়েছে। সেগুলির শিকড় কতটা মজবুত তা কেউ জানেন না।

বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, ঝড়ের সময়ে সল্টলেকে রাস্তায় হেঁটে যাওয়া তো বটেই, এমনকি গাড়িতে যাওয়াও নিরাপদ নয়। ফলে পরিকল্পিত উপায়ে এলাকা বেছে বৃক্ষরোপণ করাই শ্রেয় বলে মনে করেন নাগরিকেরা। সম্প্রতি পিএনবি মোড়ের কাছে একটি চলন্ত অটোর উপরে একটি গাছের বড় ডাল ভেঙে পড়ে। অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পান চালক ও তিন যাত্রী।

বিধাননগরের মেয়র পারিষদ (পরিবেশ) রহিমা বিবি (মণ্ডল) বলেন, ‘‘একটি সুসংহত পরিকল্পনার প্রয়োজন। সেই রূপরেখা করার জন্য বন দফতর থেকে শুরু করে বিশেষজ্ঞদেরও পরামর্শ নেওয়া হবে। নির্বাচনের পরে এই বিষয়ে বিস্তারিত পর্যালোচনা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন