পুরোদমে চলছে মশা নিয়ন্ত্রণের কাজ। একই সঙ্গে চলছে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ ও মশাবাহিত রোগ নিয়ে সচেতনতার প্রচার। বর্ষার আগেই হাসপাতালগুলিতেও আগাম প্রস্তুতি নিয়েছে বিধাননগর পুরসভা। কিন্তু এই প্রস্তুতিতেও কি বিধাননগর এলাকার ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণের ছবিটা বদলাবে?
বিধাননগর পুরসভার দাবি, এলাকার সর্বত্রই চলছে জোর কদমে ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণের কাজ। কিন্তু বেশ কিছু ক্ষেত্রে বাস্তবিক সমস্যা থেকেই যাচ্ছে। বাড়ি বাড়ি প্রচারে আবাসিকদের কাছ থেকে সাড়া মিললেও ঝুপড়ি এলাকা ও ভাড়া দেওয়া বেসরকারি অফিসে সেই সচেতনতা বেশ কম বলেই স্থানীয় সূত্রের খবর। বর্ষার আগেই পুরসভার নানা এলাকায় পরিস্রুত পানীয় জল সরবরাহের জন্য পাইপলাইন পাতার কাজ চলছে। ফলে খোঁড়া রাস্তায় জল জমার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। ফাঁকা জমি, নির্মীয়মাণ বাড়ি কিংবা অফিস, বস্তি এলাকাতেও মশা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সংশয় রয়েছে স্থানীয়দের।
গত বছর দেখা গিয়েছিল, ঝুপড়ি বা বস্তির প্রায় প্রতিটি ঘরেই বালতিতে জল জমিয়ে রাখা হয়। সব ক্ষেত্রে সেই বালতিও ঢাকা দেওয়া থাকে না। বহু বার পরিদর্শনে গিয়ে ওই এলাকার একাধিক ঘরে বালতির জলে লার্ভা পেয়েছিলেন পুরকর্মীরা। এ ছাড়াও, সল্টলেক থেকে রাজারহাটের ফাঁকা জমিতে পড়ে থাকে আবর্জনা। সেখানে পরিত্যক্ত থার্মোকলের বাক্স, ডাবের খোলা, টায়ার, টব ইত্যাদি থেকেও পাওয়া গিয়েছিল মশাবাহিত রোগের জীবাণু। সবচেয়ে বেশি সমস্যা দেখা দিয়েছে নির্মীয়মাণ বাড়িগুলির একাংশ ঘিরে। গত কয়েক বছর ধরে বারবার সতর্ক করে, সচেতনতার প্রচার চালিয়েও এই ক্ষেত্রে খুব একটা সাফল্য আসেনি বলেই দাবি বাসিন্দাদের। নির্মীয়মাণ অঞ্চলের বিভিন্ন ক্ষেত্রে জমা জলে ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়ার লার্ভা জন্মানোর আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।
পুরোদমে মশা নিয়ন্ত্রণের কাজ শুরু হলেও তাই এ রকম কয়েকটি ক্ষেত্র নিয়ে রীতিমতো চিন্তায় রয়েছে প্রশাসন।
এ প্রসঙ্গে মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) প্রণয় রায় জানান, ইতিমধ্যেই বস্তি-ঝুপড়ি এলাকা, নির্মীয়মাণ অফিস-বাড়ি, ফাঁকা জমি চিহ্নিত করে মশা নিয়ন্ত্রণের কাজে বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। আরও বলেন, ‘‘কয়েকটি ক্ষেত্রে গত বছরও সমস্যা দেখা দিয়েছিল। এ বার বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে। সরকারি প্রকল্পের কাজের জন্য রাস্তা খোঁড়া হয়েছে। সেখানে জল জমলে দ্রুত তা সরানো, মশার তেল স্প্রে করার ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা চলছে।’’ পাশাপাশি, তিনি জানান, ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে সচেতনতামূলক প্রচারে সাড়া না দিলে, কিংবা সতর্কতামূলক ব্যবস্থা না নিলে আইন মোতাবেক কড়া পদক্ষেপ করতে পিছপা হবে না পুরসভা।