একেই বলে ঠেকে শেখা!
বাড়ি বাড়ি গিয়ে মশার আঁতুড়ঘর চিহ্নিত করা এবং তা ধ্বংস করা, নিয়মিত মশার তেল স্প্রে করাই ছিল কাজ। কিন্তু তা হয়নি। ফলে মশা বাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণে সাফল্য আসেনি। বরং গত কয়েক বছরে বিধাননগরবাসীদের আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে মশা।
এ বার তাই চাপে পড়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে মশার আঁতুড়ঘর চিহ্নিতকরণ এবং ধ্বংসের কাজ করবে বিধাননগর পুরসভা। সম্প্রতি এমন সিদ্ধান্তই নিয়েছে পুরপ্রশাসন।
বাসিন্দাদের কথায়, দেরিতে হলেও হুঁশ ফিরেছে পুরসভার। কলকাতাতে দীর্ঘ দিন ধরে বাড়ি বাড়ি পুরকর্মীরা মশা নিয়ন্ত্রণের কাজ করেন। কিন্তু বিধাননগরে তা দেখা যায়নি।
পুরপ্রশাসনের একটি অংশের দাবি, এত দিন রাজ্য প্রশাসন ও পুরপ্রশাসনের কর্মীরা বাড়ি বাড়ি ঘুরে তথ্য সংগ্রহ করতেন, বাসিন্দাদের সচেতন করতেন। তাঁদের তথ্যের ভিত্তিতে বেশ কিছু বাড়িতে গিয়ে মশার আঁতুড়ঘরেরও সন্ধান মিলেছিল। কিন্তু তাতে মশা বাহিত রোগের প্রকোপ কমানোর কাজে সাফল্য সে ভাবে আসেনি।
গত কয়েক বছরে মশা বাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণে বিধাননগর পুরসভার ব্যর্থতা নিয়ে লাগাতার প্রশ্নও তুলেছিলেন বাসিন্দারা। কার্যতে সেই অভিজ্ঞতার চাপে পড়ে এ বার তাই পুরনো পদ্ধতির পাশাপাশি পুরকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে মশার আঁতুড়ঘরের সন্ধান করবেন। সন্ধান পেলে তা ধ্বংসও করা হবে।
পুরকর্মীদের একটি অংশের অবশ্য অভিযোগ, অনেক সময়ে বাড়িতে ঢোকার ক্ষেত্রে বাধা আসে। পুরকর্তারা অবশ্য বলছেন, মশা নিয়ন্ত্রণের কাজে বাধা পেলে পুরকর্মীরা পুরপ্রশাসনকে জানাতে পারেন। প্রয়োজনে সে সব বাড়িতে পুরপ্রশাসন নোটিসও পাঠাতে পারে।
এর পাশাপাশি, কোনও ফাঁকা জমিতে মশার আঁতুড়ঘর তৈরি হলে প্রথমে জমির মালিককে নোটিস পাঠানো হবে। মালিকের সন্ধান না পাওয়া গেলে পুরপ্রশাসনই সেই ফাঁকা জমি মশা তাড়ানোর কাজ করবে।
এই পরিকল্পনা কার্যকর করতে রাজ্য প্রশাসনের কর্মীদের পাশাপাশি পুরকর্মীদের বরোভিত্তিক দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি সচেতনতার প্রচারেও জোর দিয়েছে পুরসভা।
পুরসভা সূত্রের খবর, প্রতিটি ওয়ার্ডে হোর্ডিং, ফ্লেক্স ও ব্যানার লাগানোর পাশাপাশি রিকশা ও অটোর পিছনেও মশা নিয়ন্ত্রণে নির্দেশিকা সম্বলিত ব্যানার লাগানো হবে। তা ছাড়াও বাড়ি বাড়ি লিফলেট ছড়ানোর কাজ শুরু করেছে পুরসভা।
বাসিন্দাদের অবশ্য সাফ কথা, শুধু পরিকল্পনা করলেই হবে না, কাজে দেখাতে হবে। মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) প্রণয় রায় বলেন, ‘‘পর্যাপ্ত পরিকাঠামোর অভাব ছিল। ফলে পরিকল্পনা পুরোপুরি কার্যকর করা সম্ভব হয়নি। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে বর্তমান পুরবোর্ড তাই পরিকাঠামো সংস্কারে জোর দিচ্ছে। গত বছরগুলির অভিজ্ঞতার নিরিখে এ বার শুরু থেকেই পরিকল্পনা কার্যকর করতে জোর দেওয়া হচ্ছে।’’