Death

Murder: নির্মীয়মাণ বহুতল চত্বরে কিশোরের দেহ, খুনের অভিযোগ

প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জেনেছে, নির্মীয়মাণ বহুতলটির যেখানে আয়ানের দেহ পড়ে ছিল, সোমবার সন্ধ্যা থেকে সেই জায়গাটি অন্ধকার ছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০২২ ০৭:১৭
Share:

আরশাদ আলম।

বছর বারোর এক কিশোরের অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে রহস্য তৈরি হয়েছে। সোমবার ঘটনাটি ঘটেছে গার্ডেনরিচ থানার গোলাম আব্বাস লেনে। মৃতের নাম আরশাদ আলম ওরফে আয়ান। পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার গভীর রাতে বাড়ির পাশে একটি নির্মীয়মাণ পাঁচতলা বহুতলের নীচ থেকে ওই কিশোরের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীদের অনুমান, নির্মীয়মাণ বহুতলটির ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যু হয়েছে ওই কিশোরের। যদিও এই ঘটনায় তার পরিজনেরা খুনের অভিযোগ তুলেছেন। আপাতত একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, গোলাম আব্বাস লেনে মা, বাবা ও দিদির সঙ্গে থাকত আয়ান। স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ত সে। তাদের বাড়ির পাশেই পাঁচতলা ওই নির্মীয়মাণ বহুতলটি। এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ওই বহুতলের ছাদে বন্ধুদের সঙ্গে খেলত আয়ান। সোমবার দুপুরেও সেখানে পাড়ার ছেলেদের সঙ্গে খেলছিল সে। আয়ানের কাকা মহম্মদ আশিক বলেন, ‘‘ওই দিন দুপুরে খেলার সময়ে বন্ধুদের সঙ্গে ঝামেলা হয়েছিল আয়ানের। তখন আমি ওকে ডেকে বাড়িতে নিয়ে আসি। পরে বিকেলে ফের বেরোয় আয়ান। কিন্তু রাত হয়ে গেলেও না ফেরায় আমরা থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করি। গভীর রাতে ওই বহুতলের নীচ থেকে ভাইপোর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়।’’ খবর পেয়ে পুলিশ এসে ওই কিশোরকে এসএসকেএমে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।

ওই কিশোরের পিসি নিখাদ পরভিন বলেন, ‘‘সোমবার বিকেল পাঁচটা নাগাদ আমার থেকে টাকা নিয়ে ঠান্ডা পানীয় কিনে আনল আয়ান। তার পর থেকেই ওর খোঁজ মেলেনি।’’ নিখাদের অভিযোগ, তাঁর ভাইপোকে খুন করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘ওই নির্মীয়মাণ বহুতলটির ছাদে প্রায়ই নেশার আসর বসে। সোমবার রাতে ভাইপো সেখানে নিশ্চয়ই এমন কিছু দেখে ফেলেছিল, যার জন্য ওকে ছাদ থেকে ঠেলে ফেলে খুন করা হয়েছে। পুলিশ ঠিক মতো তদন্ত করুক।’’

Advertisement

মঙ্গলবার ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, ওই নির্মীয়মাণ বহুতলটির পাঁচতলার ছাদে কোনও পাঁচিল নেই। সিঁড়িগুলিও ধারেও নেই রেলিং। আয়ানের বাড়ির লোকেরা জানান, সোমবার রাত ১২টা নাগাদ ওই বহুতলের আশপাশে তন্নতন্ন করে খুঁজেও তার সন্ধান মেলেনি। অথচ, এর ঘণ্টা দুয়েক পরে রাত আড়াইটে নাগাদ এক যুবক আয়ানকে ওই বহুতলের নীচে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। মৃতের পরিজনেদের অভিযোগ, ‘‘রাত ১২টা নাগাদ যাকে খুঁজে পাওয়া গেল না, রাত আড়াইটে নাগাদ সেখান থেকেই উদ্ধার হল তার দেহ। এটা খুন ছাড়া আর কী হতে পারে?’’ ওই কিশোরের এমন আকস্মিক মৃত্যু কিছুতেই মানতে পারছেন না তাঁরা। এ দিন আয়ানের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, তার মা মাঝেমধ্যেই জ্ঞান হারাচ্ছেন। তাঁকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন প্রতিবেশীরা।

এ দিন ঘটনাস্থলে এসে তদন্ত শুরু করেন গার্ডেনরিচ থানার তদন্তকারী দল-সহ লালবাজারের হোমিসাইড শাখার গোয়েন্দারা। আসেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরাও। লালবাজারের এক আধিকারিক জানান, মৃতদেহ ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে। সেই রিপোর্ট এলেই মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে।

প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জেনেছে, নির্মীয়মাণ বহুতলটির যেখানে আয়ানের দেহ পড়ে ছিল, সোমবার সন্ধ্যা থেকে সেই জায়গাটি অন্ধকার ছিল। যার জন্য প্রথমে বিষয়টি কারও নজরে আসেনি। তদন্তকারীদের অনুমান, নেড়া ছাদে বন্ধুদের সঙ্গে খেলার সময়ে কোনও ভাবে পড়ে গিয়েছে ওই কিশোর। সোমবার সে কাদের সঙ্গে খেলাধুলো করছিল, প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে সেই খোঁজ শুরু করেছে পুলিশ।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তেফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement