ছড়া-ছন্দে স্পর্শের মানে বইমেলায়

বইমেলায় মজাদার কার্টুন চরিত্রের ছবিওয়ালা স্টলে চিলতে ছড়ার বইখানা ঘুরছে খুদেদের হাতে।

Advertisement

ঋজু বসু

শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০১:৪৭
Share:

যৌন নির্যাতন নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে বই। নিজস্ব চিত্র

এক যুগ আগে লেখা ছড়াগুলো হঠাৎই ফের প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে।

Advertisement

বইমেলায় মজাদার কার্টুন চরিত্রের ছবিওয়ালা স্টলে চিলতে ছড়ার বইখানা ঘুরছে খুদেদের হাতে।
আর কিছুটা অন্য রকম বার্তা ছড়িয়ে পড়ছে যা সচরাচর ছবি-ছড়ার জগতে শোনা যায় না। পশ্চিমবঙ্গ শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘স্কুলে, পাড়ায় বা বাড়িতে শিশুদের যৌন নির্যাতনের বিপদ বোঝাতে বা সাবধান করতে ছড়াও হাতিয়ার হতে পারে।’’ ছোটদের স্বাভাবিক ছোঁয়া বা গোলমেলে ছোঁয়ার ফারাক বোঝাতে হিন্দিতে কার্টুন ভিডিও ছবির মাধ্যম আগেও কাজে এসেছে। সহজ বাংলায় লেখা একটি ছড়ার বই এ বার নতুন করে তৈরি করেছে কমিশন।

ঘটনাচক্রে, দক্ষিণ কলকাতার দেশপ্রিয় পার্কের একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীকে নাচের শিক্ষকের যৌন নিগ্রহের অভিযোগটি যে দিন চাউর হয়, তার আগের দিন, মানে বৃহস্পতিবারই কমিশনের তরফে বইমেলায় বইটি প্রকাশ করা হয়েছিল। একটি স্বেচ্ছাসেবী
সংস্থার তরফে উদ্যোগে ছড়াগুলির জন্ম অবশ্য আরও আগে। তখনও স্কুলে স্কুলে ‘গুড টাচ,
ব্যাড টাচ’-এর মতো দিকগুলি নিয়ে শিক্ষক, পড়ুয়া, অভিভাবকদের সে ভাবে চোখ খোলেনি। অনন্যাদেবী বলছিলেন, ‘‘পকসো আইন তৈরি হওয়ার ঢের আগেই সমাজের নানা স্তরে শিশুদের যৌন নিগ্রহের দিকটা কেউ কেউ বুঝতে পারছিলেন। ছোটদের আগেভাবে সম্ভাব্য নির্যাতনকারী বা নির্যাতন নিয়ে সচেতন করার থেকে জরুরি আর কিছুই হতে পারে না।’’

Advertisement

‘চেঁচিয়ে পাড়া মাত করো’ নামে পাতলা বইটির ছড়া শিশুকে স্পষ্ট বলছে, ‘খারাপ ভাবে তোমায় যদি কেউ স্পর্শ করে, বিশ্রীরকম আদর করে খুব— / জানবে সেটা গোপন রাখতে নেই, এ সব কাজ অন্যায় যে, তাই / তোমার মা, তোমার বাবা তোমার দিদিকে এ সব কথা বলে দেওয়াই চাই।’ দুষ্টু লোকেদের মোকাবিলাতেও বাচ্চাদের ছড়ার মাধ্যমে চিৎকার করতে শেখানো হয়েছে কারণ, ‘খারাপ লোকে জেনো আসলে খুব ভীতু হয়, তাই / বিপদে পড়লে বাঁচার উপায় যে চিৎকারটাই।’

ঠিক কী ভাবে সচেতনতার এই ছড়াগুলি জনে জনে ছড়িয়ে দেওয়ার কথা ভাবছে কমিশন?

অনন্যা বলেন, ‘‘কমিশনের নিজেদের অফিস থেকে তো বটেই, স্কুলে স্কুলেও ছড়ার বইগুলো পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা আছে আমাদের। তার আগে বইমেলায় এত লোকের ভিড়কেও এই প্রচারের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।’’ করুণাময়ী বাসস্ট্যান্ডের দিকে বইমেলার গেটে ঢুকলেই কমিশনের স্টলটায় নিখরচায় বিলি করা হচ্ছে খুদে ছড়ার বই। স্পর্শের মানে পড়তে ছড়ার ছন্দই যেখানে সচেতনতাকারীদের হাতিয়ার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন