উত্তম দ্বিবেদী। দুর্গার যকৃৎ সফল ভাবে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে উত্তমের শরীরে। নিজস্ব চিত্র।
পুজোর সময় শহরে সফল অঙ্গ প্রতিস্থাপন। সপ্তমীতে দুর্গা সাধুর যকৃৎ ও কিডনি পেলেন তিন গ্রহীতা। পুজোর সময় এসএসকেএম হাসপাতালে এই সফল অঙ্গ প্রতিস্থাপনের ঘটনা ওই তিন জনের জীবনে ‘আশীর্বাদ’ বলেই মনে করছেন তাঁদের পরিবার এবং আত্মীয় স্বজনেরা।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, তিন জনেই এখন ভাল আছেন। আপাতত তাঁদের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। বাগুইআটির বাসিন্দা দুর্গা সাধুর ব্রেন ডেথ হওয়ার পরই অঙ্গ দানের সিদ্ধান্ত নেন ছেলে দেবাশিস। মা অন্য কারও দেহে বেঁচে থাকুক, চেয়েছিলেন তিনি।
বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন বছর আটষট্টির দুর্গা। সপ্তমীর ভোরে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি।
চিকিৎসা চলাকালীন ব্রেন ডেথ হয়। চিকিৎসকদের পরামর্শে মায়ের অঙ্গদানে সম্মতি দিলেন ছেলে। সপ্তমীতেই রাজ্যের প্রথমসারির সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল এসএসকেএমে যুদ্ধকালীন তৎপরতার সঙ্গে গ্রহীতাদের শরীরের অঙ্গ প্রতিস্থাপন শুরু হয়। গ্রিন করিডরের মাধ্যমে নিয়ে আসা হয় দুটি কিডনি এবং যকৃৎ।
আরও পড়ুন: গড়িয়ায় বহুতলের ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা যুগলের!
হলদিয়ার বাসিন্দা উত্তম দ্বিবেদী দীর্ঘদিন ধরেই যকৃতের সমস্যায় ভুগছিলেন। দুর্গার যকৃৎ সফল ভাবে প্রতিস্থাপন করা হয় উত্তমের শরীরে। অষ্টমীর সকালে তাঁকে ভেন্টিলেশনের বাইরেও আনা হয়। একই ভাবে আরও দু’জনের দেহে কিডনি প্রতিস্থাপিত করা হয়। তাঁরাও ভাল আছেন বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর।
এসএসকেএম-এর যকৃৎ রোগ বিষয়ক বিভাগের প্রধান অভিজিৎ চৌধুরি বলেন, “এ নিয়ে সাত জনের শরীরে সফলভাবে যকৃৎ প্রতিস্থাপন করা হল। অপারেশনের পক্রিয়া খুবই জটিল ছিল। প্রায় ৮ ঘণ্টা ধরে অপারেশন চলেছে।”
আরও পড়ুন: যানজট কেন জিজ্ঞাসায় পুলিশের ‘মারধর’
রবিবার রাতে অর্থাৎ পঞ্চমীর দিন পর্যন্ত ভালই ছিলেন দুর্গা সাধু। ষষ্ঠীর দিন অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। তার পরেই তাঁকে ওই বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন দেবাশিসবাবু। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের ফলে ব্রেন ডেথ হয়ে যায় দুর্গার। এর পরই সপ্তমীর সকালে তিন জনের শরীরে সফল ভাবে অঙ্গ প্রতিস্থাপন হয়।
অভিজিৎ চৌধুরি বলেন, “মানুষের মধ্যে অঙ্গদানের সচেতনতা বাড়ছে। পুজোর সময়ও তাই অঙ্গদানে এগিয়ে এসেছেন দুর্গা সাউয়ের ছেলে।”