ভস্মীভূত: এ ভাবেই পুড়ে গিয়েছে ঘর। বুধবার, কাঁকুলিয়ায়। নিজস্ব চিত্র
পরিবারের সদস্যেরা কেউ বাড়িতে ছিলেন না। ঘরে একাই ছিলেন পক্ষাঘাতগ্রস্ত বৃদ্ধ রবি মাইতি (৬৮)। গোলপার্কের এক নম্বর কাঁকুলিয়া রোডে আগুন লাগলে আর বেরোতে পারেননি তিনি। বুধবার সন্ধ্যার এই অগ্নিকাণ্ডে বিছানার উপর থেকে বৃদ্ধের ঝলসানো দেহ উদ্ধার করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
এ দিন সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টা নাগাদ আচমকা রবিবাবুর বাড়ির পিছনের দিক থেকে ধোঁয়া বেরোতে দেখা যায়। মুহূর্তের মধ্যে আগুনের গ্রাসে চলে যায় বাড়িটি। এক সময়ে গড়িয়াহাটে একটি দোকান ছিল ওই ব্যক্তির। কয়েক বছর আগে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হলে হাঁটাচলার শক্তি হারিয়ে ফেলেন তিনি। সেই থেকে কার্যত ঘরবন্দি ছিলেন রবি। অগ্নিকাণ্ডের সময়ে বাড়িতে ছিলেন না স্ত্রী ঝর্না। বড় ছেলে মানস পার্কিং লটে কাজ করেন এবং ছোট ছেলে বিকাশ মাইতি রেস্তোরাঁর কর্মী। মেয়ে স্বাতী বিবাহিতা। মৃতের ভাগ্নী সৌমিতা সামন্তের অভিযোগ, ‘‘দমকলে ফোন করলে বলে, কাঁকুলিয়া রো়ড কী ভাবে চিনব! ৪০ মিনিট পরে দমকলের দু’টি ইঞ্জিন যখন এল, তখন আগুন নিভিয়ে ফেলেছি।’’ এই অভিযোগ প্রসঙ্গে অবশ্য দমকলের প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
তুষার সিংহ এবং বিশ্বনাথ দাস নামে দুই স্থানীয় বাসিন্দা রবিবাবুর দেহ উদ্ধার করেন। তাঁরা জানান, দরজা খুলতেই আগুনের হল্কা ধেয়ে আসে। ঘরের ভিতরে প্রচণ্ড ধোঁয়ায় দমবন্ধ হয়ে আসছিল। পরিস্থিতি এমনই ছিল যে, রবিবাবু কোথায় রয়েছেন, বোঝা যাচ্ছিল না। শেষ পর্যন্ত বিছানার উপরে পড়া দরমার চাল সরাতেই ঝলসে যাওয়া দেহটি দেখতে পান তাঁরা। স্থানীয় বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে রবিকে মৃত ঘোষণা করা হয়। আগুন কী ভাবে লেগেছে, তা এখনও জানা যায়নি। আগুন নেভাতে গিয়ে জখম হন তিন জন। আর একটি ঘরের কিছুটা অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, তবু সময়মতো গ্যাস সিলিন্ডারটি বার করা না গেলে ঘটনাটি আরও বড় আকার নিত।