ছুটছে বাস, চাকায় ছেঁচড়ে মৃত যুবক

বাসের সামনের চাকায় আটকে রয়েছে স্কুটি আরোহীর দেহ। জানলা থেকে বছর পঁয়ত্রিশের সেই যুবকের দু’টি পা দেখতে পাচ্ছেন যাত্রীরা। ওই অবস্থাতেই যুবকের দেহ নিয়ে ছুটে চলেছে বাস।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০১৮ ০০:০৫
Share:

বাসের সামনের চাকায় আটকে রয়েছে স্কুটি আরোহীর দেহ। জানলা থেকে বছর পঁয়ত্রিশের সেই যুবকের দু’টি পা দেখতে পাচ্ছেন যাত্রীরা। ওই অবস্থাতেই যুবকের দেহ নিয়ে ছুটে চলেছে বাস। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দমদম পার্কের এই ঘটনায় যখন চালক বাস থামান, তখন অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। লেকটাউনে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় নিউ ব্যারাকপুরের বাসিন্দা ইন্দ্রজিৎ বসু (৩৫) নামে ওই যুবকের।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, ভিআইপি রোডের বিমানবন্দরগামী রাস্তায় দমদম পার্ক সিগন্যালে দু’টি বাসের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন স্কুটিচালক ইন্দ্রজিৎ। সিগন্যাল খোলার পরে কোনও ভাবে ইন্দ্রজিৎ দু’টি বাসের মধ্যে পড়ে যান। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ৪৬বি রুটের একটি বাসের ধাক্কায় ইন্দ্রজিৎ স্কুটি থেকে বাসের সামনের চাকার তলায় পড়ে যান। ওই দৃশ্য দেখে তৎক্ষণাৎ চালকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন বাসের যাত্রীরা। কিন্তু চালক কোনও কথাই শোনেননি বলে অভিযোগ যাত্রীদের। ৪৬বি রুটের বাসের এক যাত্রী অরুন্ধতী চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘আমরা সামনের সিটে বসেছিলাম। জানলা দিয়ে দেখতে পাচ্ছি, ভদ্রলোকের পা দু’টো বাইরে বেরিয়ে আছে। উনি ছটফট করছেন। কিন্তু চালককে গাড়ি থামাতে বললেও উনি তা শুনলেন না।’’ যাত্রীদের দাবি, বাসের সামনের চাকায় ইন্দ্রজিতের দেহ ঘষটাতে ঘষটাতে প্রায় ১০০ মিটার পথ অতিক্রম করে। চালক কোনও ভ্রূক্ষেপ করছেন না দেখে বাসের সকল যাত্রীরা চিৎকার করে ওঠেন। শেষ পর্যন্ত কেষ্টপুরের ভূগর্ভস্থ পথের খানিকটা আগে বাস থামিয়ে চম্পট দেন চালক।

এর পরে যাত্রীরা বিধাননগর কমিশনারেটের ট্র্যাফিক পুলিশকে ঘটনার কথা জানালে তাঁদের সাহায্যে তড়িঘড়ি ইন্দ্রজিৎকে উদ্ধার করে লেকটাউনের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, পথেই মৃত্যু হয়েছিল ইন্দ্রজিতের। ৪৬বি রুটের বাসের যাত্রী অরুন্ধতী বলেন, ‘‘আমরা এত জন যাত্রী আর্তনাদ করছি, অথচ চালক গাড়ি থামালেন না! কন্ডাক্টরও কিছু বলেননি। পরে কন্ডাক্টর বললেন, আমরা কেন চিৎকার করছি উনি নাকি বুঝতে পারেননি। স্কুটি আরোহীকে চাকার সঙ্গে জড়াতে দেখেই যখন চিৎকার করলাম তখনই যদি চালক বাস থামাতেন, তা হলে হয়তো ওই যুবক প্রাণে বেঁচে যেতেন।’’

Advertisement

বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশ কর্তাদের বক্তব্য, ‘‘যাত্রীরা চিৎকার করে চালককে বাস থামানোর জন্য বললেও তিনি কেন বাসটি থামালেন না, তা বোধগম্য হচ্ছে না। ওই বাসটি আটক করা হয়েছে। ওই চালকের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। অন্য বাসটির সঙ্গে রেষারেষি চলছিল কি না, খতিয়ে দেখা হবে তা-ও।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন