এই প্রোমোটারের বিরুদ্ধেই নিগ্রহের অভিয়োগ ব্যবসায়ী মণীশ পাণ্ডের। নিজস্ব চিত্র
ফের পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ। এ বার পুলিশের সামনেই এক ব্যাবসায়ীকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল প্রোমোটারের বিরুদ্ধে। মণীশ পাণ্ডে নামে এক ব্যবসায়ীর দাবি, ওই প্রোমোটার কলকাতা পুরসভার ৯৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দেবব্রত মজুমদারের অনুগামী বলে এলাকায় পরিচিত। সে কারণেই পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এমনকি, বিষয়টি লিখিত ভাবে জানাতে গেলে পুলিশ ওই কাউন্সিলরের নাম বাদ দিতে বাধ্য করে বলেও অভিযোগ মণীশের।
বিজয়গড় এলাকায় বিনোদবিহারী সাহা নামে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ২০১৪ সালে দোকান ভাড়া নিয়ে ব্যবসা করছেন মণীশ। তাঁর দাবি, পাঁচ বছর আগে ২৫ বছরের লিজে ওই দোকানটি ভাড়া নেওয়া হয়েছিল। চুক্তিতে যা যা বলা ছিল, সব মেনেই দোকান চালাচ্ছিলেন তিনি। কয়েক মাস আগে জল দেওয়া বন্ধ করে দেন বিনোদবিহারী। একই সঙ্গে তাঁকে ওই দোকান খালি করার হুমকিও দিতে শুরু করেন স্থানীয় কয়েক জন। মণীশ শুক্রবার বলেন, ‘‘এর পর ভাড়া নিতে অস্বীকার করেন মালিক। আমি মানি অর্ডার করে টাকা পাঠাতে থাকি। সম্প্রতি স্থানীয় কয়েক জনের সঙ্গে মিলে উনি আমাকে উৎখাতের চেষ্টা চালাচ্ছেন। আশ্চর্যের বিষয়, স্থানীয় কাউন্সিলর দেবব্রত মজুমদার এতে মদত দিচ্ছেন।’’
যদিও স্থানীয় কাউন্সিলর তথা কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ দেবব্রতবাবু এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
তিনি বলেন, “ওই ব্যক্তি দীর্ঘ দিন ধরে ভাড়া দিচ্ছেন না। স্থানীয় ক্লাবে বিষয়টি জানান দোকান-মালিক। তিনি শারীরিক ভাবে অসুস্থ। হাঁটাচলা করতে পারেন না। সে কারণেই এলাকার লোকজন কথা বলতে গিয়েছিল। মণীশবাবু মিথ্যা অভিযোগ করছেন। পুলিশ তদন্ত করে দেখুক, কী হয়েছিল।”
এফআইআর-এর কপি । নিজস্ব চিত্র
কিন্তু মণীশের অভিযোগ, গত ৬ এবং ১২ জুন একদল লোক তাঁর দোকানে ঢুকে হামলা চালায়। তাঁর স্ত্রী অর্পিতা পাণ্ডেকে নিগ্রহ করে। তারা হুমকিও দেয়। মণীশের দাবি, গোটা ঘটনার নেতৃত্বে ছিলেন এলাকার প্রোমোটার বুদ্ধ চৌধুরী। এর পরই বিষয়টি পুলিশকে জানান মণীশ। কিন্তু লিখিত অভিযোগ পেয়েও যাদবপুর থানা কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে মণীশের অভিযোগ। এর পরেই স্ত্রী অর্পিতাকে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের বাড়িতে গিয়েছিলেন তিনি। তাঁর দাবি, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে প্রশাসনিক কর্তারা আমাদের কথা শোনেন। তার পর যাদবপুর থানাকে দ্রুত পদক্ষেপ করতে বলা হয়। কিন্তু তার পরেও যে কে সেই অবস্থা।’’ মণীশের অভিযোগ, অনেক টালবাহানার পর কাউন্সিলরের নাম বাদ দিলে তবেই এফআইআর নেয় যাদবপুর থানার পুলিশ।
আরও পড়ুন: আঙুলের কাটা অংশ হারাল হাসপাতাল
হাঁটা বন্ধ মুখ্যমন্ত্রীর! পার্ক সাপমুক্ত করতে চিঠি
বিষয়টি খতিয়ে দেখতে দুই পুলিশকর্মী মণীশের দোকানে যান। অভিযোগ, তখন অভিযুক্তরা চড়াও হন সেখানে। এমনকি পুলিশের সামনে হুমকি, ধাক্কা দেওয়া হয় মণীশকে। কিন্তু পুলিশ কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি বলে দাবি করেছেন তিনি। হামলাকারীরা দাবি করেছেন, ওই ব্যবসায়ী ভাড়া দিচ্ছেন না। মণীশের প্রশ্ন, ‘‘আমি ভাড়া না দেওয়ার অভিযোগ উঠলে আইন, প্রশাসন আছে। আমার কাছে সব রকম নথিপত্র রয়েছে। পুলিশকেও সে সব দিয়েছি। কিন্তু বহিরাগতরা কেন এ ভাবে চড়াও হচ্ছে। পুলিশের সামনে হুমকি দেওয়া হলেও, কেন ব্যবস্থা নেওয়া হল না?’’