জখম: হাতের আঘাত দেখাচ্ছেন প্রেমাঙ্কর। নিজস্ব চিত্র
গাড়িটা রাস্তার ও পারে নিয়ে গিয়ে দাঁড়াতে বলেছিলেন যাত্রী। কিন্তু অ্যাপ-ক্যাবের চালক তাতে রাজি হননি। তা নিয়েই দু’জনের মধ্যে শুরু হয় বচসা। সেই সময়েই হঠাৎ ক্যাবচালক যাত্রীর হাতে কামড়ে দিয়ে পালিয়ে যান বলে অভিযোগ। সোমবার রাতে এমনই অভিযোগ দায়ের হয়েছে একবালপুর থানায়। অভিযুক্ত ক্যাবচালক এখনও ধরা প়ড়েননি।
পুলিশ সূত্রের খবর, সোমবার রাত দশটা নাগাদ রাসবিহারী মোড় এলাকা থেকে ওই অ্যাপ-ক্যাবে উঠেছিলেন বেসরকারি সংস্থার কর্মী, প্রেমাঙ্কর ঘোষ নামে এক যুবক। যাবেন খিদিরপুরে। অভিযুক্ত চালকের নাম শ্রীবাস। প্রেমাঙ্করের দাবি, খিদিরপুর মোড়ের কাছে এসে তিনি চালককে বলেন, গাড়িটি রাস্তার অন্য পাশে নিয়ে দাঁড় করাতে। অভিযোগ, তাতে আপত্তি জানান শ্রীবাস। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, রাস্তার অপর প্রান্তে যাওয়া সম্ভব নয়। কারণ, যে গন্তব্যে যাওয়ার জন্য প্রেমাঙ্কর ক্যাব ভাড়া করেছেন, তা এসে গিয়েছে। তাই সেখানেই তাঁকে নামতে হবে। এ নিয়ে দু’জনের বচসা শুরু হয়। তার মধ্যেই শ্রীবাস গাড়ি নিয়ে মোমিনপুর মোড়ে চলে আসেন বলে অভিযোগ। প্রেমাঙ্করের কথায়, ‘‘আমি গাড়ি থামাতে বলি। কিন্তু তা সত্ত্বেও গাড়ি নিয়ে চালক অনেকটা চলে আসেন। মোমিনপুরে এসে আমাকে নামান। সেখানে নামিয়ে আমার কাছ থেকে ভাড়া চান। কিন্তু আমি বলি, যেখানে আমাকে নামানোর কথা, সেখানে নিয়ে চলুন। অবশ্যই ভাড়া দেব।’’ তখন শ্রীবাস তাঁকে গালিগালাজ শুরু করেন বলে অভিযোগ। প্রেমাঙ্কর জানাচ্ছেন, ওই এলাকায় তাঁর বেশ কয়েক জন বন্ধুবান্ধব রয়েছেন। বচসার মধ্যেই প্রেমাঙ্কর তাঁদের ফোন করেন। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে শ্রীবাস তখন পালানোর চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। প্রেমাঙ্কর গাড়ি দাঁড় করানোর চেষ্টা করলে তাঁর পায়ে চোট লাগে। সেই অবস্থাতেই প্রেমাঙ্কর যখন চালককে গাড়ি থেকে নামানোর চেষ্টা করেন, তখনই তাঁর হাত কামড়ে অভিযুক্ত চালক পালিয়ে যান।
তত ক্ষণে প্রেমাঙ্করের বন্ধুরা ঘটনাস্থলে চলে আসেন। কামড়ে জখম প্রেমাঙ্করকে তাঁরাই এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে একবালপুর থানায় এসে প্রেমাঙ্কর অভিযোগ দায়ের করেন। পুরো ঘটনায় হতবাক প্রেমাঙ্কর বলেন, ‘‘নিয়মিত ক্যাবে যাতায়াত করি। এ রকম অভিজ্ঞতা কখনও হয়নি। এত দিন এ রকম ঘটনার কথা শুধু শুনতাম, কিন্তু এ বার সেটা আমার সঙ্গেও ঘটল!’’
সংশ্লিষ্ট ক্যাব সংস্থার মুখপাত্র জানিয়েছেন, যে ঘটনা ঘটেছে, তা কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। ওই চালকের সঙ্গে সংস্থার সম্পর্ক ছিন্ন করা হয়েছে। সূত্রের খবর, এ রকম ঘটনা ঘটলে ক্যাব সংস্থাই যাত্রীদের পুলিশে অভিযোগ দায়ের করতে বলে, যাতে দ্রুত পদক্ষেপ করা যায়। এ ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি।