দুই নাবালিকাকে নিয়ে চম্পট ক্যাবচালকের, পরে উদ্ধার

অভিযোগ, দুই প্রৌঢ়া গাড়ি থেকে নামতেই চালক দুই নাবালিকাকে নিয়ে গাড়ি চালিয়ে পালান। বেগতিক দেখে রাস্তাতেই কান্নাকাটি জুড়ে দেন প্রৌঢ়ারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০১৮ ০১:২১
Share:

প্রতীকী চিত্র।

রাস্তায় দাঁড়িয়ে দুই প্রৌঢ়াকে কাঁদতে দেখে সন্দেহ হয়েছিল সেখানে কর্তব্যরত ট্র্যাফিক সার্জেন্টের। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে তিনি জানতে পারেন, একটি অ্যাপ-ক্যাবের চালক তাঁদের দুই নাবালিকা মেয়েকে নিয়ে চম্পট দিয়েছে। এর পরেই ওই গাড়ির নম্বরের শেষ চারটি সংখ্যা ও চালকের মোবাইল ফোনের নম্বর নিয়ে খোঁজ শুরু করে পুলিশ। সূত্রের খবর, কিছু ক্ষণ পরে ক্যানাল ওয়েস্ট রোড থেকে উদ্ধার করা হয় বছর সতেরো ও বছর দশেকের ওই দুই নাবালিকাকে। তবে ওই চালকের খোঁজ মেলেনি।

Advertisement

বুধবার সন্ধ্যায় আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনে এই ঘটনা ঘটে। তবে ওই নাবালিকাদের অভিভাবকেরা পুলিশে অভিযোগ নথিবদ্ধ করতে না চাইলেও শ্যামবাজার ট্র্যাফিক গার্ডে পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে ঘটনাটি নথিবদ্ধ করে তদন্ত শুরু করেছে।

পুলিশ সূত্রের খবর, ওই মহিলারা আদতে রাজস্থানের বাসিন্দা। সে দিন সন্ধ্যায় তাঁরা শ্যামবাজার থেকে বড়বাজারে যাওয়ার জন্য একটি অ্যাপ-ক্যাব ভাড়া করেছিলেন। কিন্তু গাড়িতে ওঠার পরে সেটি বেলগাছিয়ার দিকে যেতে থাকে। ওই মহিলারা চেঁচামেচি শুরু করলে আর জি কর রোড এবং রাজা দীনেন্দ্র স্ট্রিটের মোড়ে গাড়ি দাঁড় করিয়ে তাঁদের গাড়ি থেকে নেমে যেতে বলেন চালক। অভিযোগ, দুই প্রৌঢ়া গাড়ি থেকে নামতেই চালক দুই নাবালিকাকে নিয়ে গাড়ি চালিয়ে পালান। বেগতিক দেখে রাস্তাতেই কান্নাকাটি জুড়ে দেন প্রৌঢ়ারা। তখনই তা নজরে আসে সেখানে কর্তব্যরত সার্জেন্ট কাজল দাসের। এর পরে কাজলবাবু ওই ক্যাবের নম্বর এবং চালকের ফোন নম্বর জানিয়ে দেন গার্ডের ওসি দেবাশিস গঙ্গোপাধ্যায় এবং অন্য সহকর্মীদের।

Advertisement

কাজলবাবু প্রথমে মোবাইল থেকে ওই চালককে ফোন করেন। পুলিশ সূত্রের খবর, প্রথমে চালক ফোন কেটে দেন। পরে শ্যামবাজার গার্ড থেকেও ফোন যায় চালকের কাছে। সুদীপ্ত বন্দ্যোপাধ্যায় নামে আর এক সার্জেন্ট দীনেন্দ্র স্ট্রিট, আর জি কর রোড এবং কলকাতা স্টেশন লাগোয়া এলাকায় টহলদারিতে বেরিয়েছিলেন। কিছু ক্ষণ পর তিনিই ক্যানাল ওয়েস্ট রোডে ওই দুই নাবালিকাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন। ভয়ে, আতঙ্কে দিশেহারা দুই নাবালিকা প্রথমে কিছু বলতে পারেনি। পরে হোয়াটসঅ্যাপে তাদের ছবি দেখানো হয় ওই প্রৌঢ়াদের। এর পরে ওই দু’জনকে অভিভাবকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

ভিন্‌ রাজ্য থেকে আসা ওই মহিলারা কেউই শহরের রাস্তা ভাল করে চেনেন না। ফলে ঘটনায় আরও বেশি আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। সূত্রের দাবি, বৃহস্পতিবার রাজস্থানে ফিরে গিয়েছেন ওই মহিলারা।

নিরাপদে যাতায়াতের জন্য বেশি ভাড়া দিয়ে অ্যাপ-ক্যাবে যাতায়াত করেন অনেকে। রাতে বাড়ি ফিরতেও অনেক মহিলা অ্যাপ-ক্যাবেই ভরসা রাখেন। সেখানে এমন ঘটনায় নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। বিভিন্ন অ্যাপ-ক্যাব সংস্থার তরফে বারবারই চালকদের সচেতন করার দাবি করা হয়েছে। কিন্তু তা আদৌ কার্যকরী হয়েছে কি না, উঠছে সেই প্রশ্নও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন