calcutta medical college

Calcutta Medical College: নির্মল-কাণ্ডে কার্যনির্বাহীর দায়িত্ব অন্য চিকিৎসককে, বিতর্ক মেডিক্যালে

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, বেশ কয়েক দিন ধরেই কোমরের যন্ত্রণায় ভুগছেন ভবানীপ্রসাদবাবু।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০২২ ০৭:০৫
Share:

ফাইল চিত্র।

নির্মল মাজির বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে পদত্যাগেরই ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের হৃদ্‌রোগ বিভাগের প্রধান। মঙ্গলবার সেই চিঠি প্রকাশ্যে আসতেই তোলপাড় শুরু হয় চিকিৎসক মহলে। বুধবার ওই চিকিৎসক ভবানীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়ের জায়গায় কার্যনির্বাহী প্রধান হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে হৃদ্‌রোগ চিকিৎসক প্রকাশ বাগচীকে।

Advertisement

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, বেশ কয়েক দিন ধরেই কোমরের যন্ত্রণায় ভুগছেন ভবানীপ্রসাদবাবু। হাসপাতালেও আসছেন না। তাই প্রকাশবাবুকে কাজ চালাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যদিও বিভিন্ন চিকিৎসক সংগঠনের প্রশ্ন, অনেক দিন ধরেই যদি ভবানীপ্রসাদবাবু অসুস্থ হয়ে থাকেন, তা হলে তো আগেই অন্য জনকে দায়িত্ব দেওয়া যেত। শাসকদলের বিধায়ক-চিকিৎসক তথা কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান নির্মলের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতেই এমন সিদ্ধান্ত কেন?

হাসপাতালের অধ্যক্ষ রঘুনাথ মিশ্র বললেন, ‘‘বেশ কয়েক দিন আগে চিঠি দিয়ে ওই চিকিৎসক নিজের শারীরিক সমস্যার কথা জানিয়েছিলেন। তাঁকে ছুটি নিতে বলি। পরে জানতে পারি, তিনি হাসপাতালে ভর্তি। মঙ্গলবারের পর থেকে ওঁর ফোনও বন্ধ। তিনি কেমন আছেন, তা-ও জানি না। তাই অন্য জনকে কাজ চালাতে বলা হয়েছে।’’

Advertisement

কিন্তু ইনজেকশন উধাও থেকে এমডি, এমএস পরীক্ষায় ফেল করা পড়ুয়াদের পাশ করানোর জন্য পরীক্ষককে চাপ দেওয়া-সহ কলকাতা মেডিক্যালের একের পর এক ঘটনায় যে ভাবে অভিযোগের কেন্দ্রে নির্মলের নাম উঠে আসছে, তাতে এই নির্দেশিকা নিছকই সাধারণ নয় বলেই দাবি চিকিৎসকদের একাংশের।

‘অ্যাসোসিয়েশন অব হেল্‌থ সার্ভিস ডক্টর্স’-এর সাধারণ সম্পাদক মানস গুমটা বলেন, ‘‘ঘটনাক্রম এবং দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার মাধ্যমে এই বার্তাই দেওয়া হল যে, যত অন্যায়ই হোক, মুখ বুজে কাজ করে যেতে হবে। বরিষ্ঠ চিকিৎসকের গুরুতর অভিযোগের পরে তদন্তের পরিবর্তে এই সিদ্ধান্ত চিকিৎসক সমাজ মেনে নেবে না।’’

২০১৯ সালে ২০২টি স্টেন্টের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়া সত্ত্বেও তা ব্যবহারের জন্য বিভাগীয় প্রধানকে চাপ দেওয়ার ঘটনার প্রতিবাদে এ দিন স্বাস্থ্যসচিবকে অনলাইনে স্মারকলিপি জমা দেয় ‘সার্ভিস ডক্টর্স ফোরাম’। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সজল বিশ্বাস বলেন, ‘‘স্টেন্টের অভাবে যেখানে কলকাতা মেডিক্যালে জীবনদায়ী অস্ত্রোপচার ভীষণ ভাবে ব্যাহত হচ্ছে, সেখানে এতগুলি স্টেন্ট কী ভাবে মেয়াদ-উত্তীর্ণ হয়ে গেল? সেগুলির ব্যবহারে ঝুঁকি আছে জেনেও নির্মলবাবু যে ভাবে বিভাগীয় প্রধানের উপরে চাপ সৃষ্টি করেছেন, তা চিকিৎসা ক্ষেত্রের নীতি-নৈতিকতার পরিপন্থী।’’ অধ্যক্ষের ঘরের সামনে বিক্ষোভ দেখান মেডিক্যাল সার্ভিস সেন্টারের প্রতিনিধিরা।

নির্মলের দাবি, ‘‘চক্রান্ত করে নানা রকম কুৎসা রটানো হচ্ছে। চিঠিতে উনি যা লিখেছেন, তার সঙ্গে আমার কোনও যোগ নেই। রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকের পরে ওই চিকিৎসকের সঙ্গে কোনও কথাই হয়নি।’’ ওই বিধায়ক যে ‘প্রোগ্রেসিভ ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সভাপতি, সেই সংগঠনের মুখপাত্র বিরূপাক্ষ বিশ্বাসের দাবি, ‘‘ভবানীপ্রসাদবাবু বিভিন্ন অজুহাতে বিভাগে অনুপস্থিত থাকতেন। রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকে চেয়ারম্যান হিসেবে ওই চিকিৎসককে জনস্বার্থে ঠিক ভাবে কাজ করার কথাই শুধু বলা হয়েছিল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন