টাটা ক্যানসারে ৫ লক্ষ, অ্যাপোলো নিচ্ছে ৮

মুম্বইয়ে যে চিকিৎসা হয় ৫ লক্ষ টাকায়, এ শহরের বেসরকারি হাসপাতালে তার খরচই ন্যূনতম ৮ লক্ষ!

Advertisement

তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:২২
Share:

মুম্বইয়ে যে চিকিৎসা হয় ৫ লক্ষ টাকায়, এ শহরের বেসরকারি হাসপাতালে তার খরচই ন্যূনতম ৮ লক্ষ!

Advertisement

চিকিৎসা পদ্ধতি এক হওয়া সত্ত্বেও খরচে এত ফারাক কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ভুক্তভোগীদের একাংশ। জমা পড়েছে অভিযোগও। হাসপাতালের তরফে অবশ্য এর কারণ হিসেবে স্পষ্ট কোনও উত্তরই মেলেনি।

কলকাতায় অভিযুক্ত অ্যাপোলো হাসপাতালের দাবি, পূর্ব ভারতে একমাত্র তাদেরই হাইপেক কেমোথেরাপির জন্য অত্যাধুনিক যন্ত্র আছে। ওভারি, কোলন ক্যানসারে যার সাহায্যে অস্ত্রোপচারের পরে কেমোথেরাপি হয়। তবে এই চিকিৎসা ৮ লক্ষ টাকার কমে করা সম্ভব নয় বলেই দাবি তাদের। হাসপাতালের ডাক্তাররা জানাচ্ছেন, রোগীর অবস্থার অবনতি হলে খরচ বাড়তেও পারে।

Advertisement

বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছে, কয়েক বছর আগে মুম্বই ও বেঙ্গালুরুতে এই কেমোথেরাপি শুরু হয়েছে। মুম্বইয়ের টাটা মেমোরিয়ালের চিকিৎসক অবনীশ সাকলানি জানান, তাঁদের হাসপাতালে এই কেমোথেরাপির খরচ আনুমানিক পাঁচ লক্ষ টাকা। উভয় হাসপাতালের হিসেব অনুযায়ী, মুম্বইয়ের থেকে কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে এই চিকিৎসায় অতিরিক্ত খরচ তিন লক্ষ।

কলকাতার অ্যাপোলোর ক্যানসার কেয়ারের চিকিৎসকেরা শুধু জানাচ্ছেন, ওভারি, কোলন ক্যানসারের ক্ষেত্রে এই কেমোথেরাপিতে সম্পূর্ণ রোগ মুক্তির সম্ভাবনা অনেক বেশি। সাত ঘণ্টার অস্ত্রোপচার, পাঁচ দিন আইসিসিইউ-তে থাকা ও তার পরের ২১ দিন হাসপাতালের পর্যবেক্ষণে থাকতে হবে। তাই চিকিৎসা খরচ সাপেক্ষ।

গত বুধবারই টাউন হলের বৈঠকে অ্যাপোলো সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন করেন, ‘‘কত মেশিন কেনেন, যে এত বিল হয়?’’ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিলেন, ‘‘আন্তর্জাতিক হাসপাতাল, তাই নিয়ম মেনে অত্যাধুনিক যন্ত্র কিনতে হয়।’’ মুখ্যমন্ত্রী বারবার তাঁদের মনে করান, অতিরিক্ত বিলের কারণে সাধারণ মানুষের হয়রানির শিকার হওয়ার অভিযোগ নিয়মিত আসে।

হাসপাতাল সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রীর ধমকের পরে ক্যানসার কেয়ারের নয়া প্রযুক্তি নিয়ে নতুন ভাবে ভাবনা শুরু করেছেন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু একই চিকিৎসায় মুম্বই, বেঙ্গালুরু থেকে কলকাতার এই হাসপাতাল অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছে কেন? সদুত্তর দেননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

হাসপাতালের এক কর্তা জানান, সব বিষয় নিয়েই নতুন করে আলোচনা হবে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো খরচের দিকটিও ভাবা হবে। তাই এই যন্ত্রের ব্যবহার কী ভাবে হবে, তা নিয়েও ভাবনা চলছে। চিকিৎসক সৈকত গুপ্ত বলেন, ‘‘যে কোনও অস্ত্রোপচারের আগে রোগীর আত্মীয়দের খরচ সম্পর্কে ধারণা দিই। কিন্তু নির্ভুল হিসেব আগে থেকে দেওয়া সম্ভব নয়। রোগীর অবস্থার অবনতি হলে আরও উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। খরচও কিছু বাড়ে।’’ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, খরচ সম্পর্কে রোগীর পরিজনকে আগেই জানানো হয়। তাঁরা রাজি থাকলে তবেই চিকিৎসা শুরু হয়। তবে চিকিৎসা শুরুর আগে খরচের নির্দিষ্ট হিসেব রোগীর পরিবারকে জানানো যায় কি না, তা নিয়ে আলোচনা করা হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement