বেপরোয়া: তীব্র গতির মাসুল। নিজস্ব চিত্র
একটি গাড়িকে ধাক্কা দিয়ে পালাতে গিয়ে বিপত্তি ঘটালেন চালক। পালানোর সময়ে গাড়ির গতি এত বেশি ছিল যে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাড়িটি ধাক্কা দেয় একটি বাতিস্তম্ভে। তার পরে সেটি শূন্যে উঠে রাস্তায় আছড়ে পড়ে। গুরুতর আহত হন চালক-সহ আরোহীরা।
রবিবার রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে পাটুলি থানা এলাকার বেণুবনছায়ার কাছে। আহত গাড়িচালক, গৌতম পোদ্দার হাসপাতালে ভর্তি। এ ছাড়াও ওই গাড়িতে ছিলেন নরেন্দ্রপুরের বাসিন্দা রতন সাহা, ভাস্বতী সাহা এবং তাঁদের ছেলে বছর সতেরোর শুভ্রদীপ সাহা। প্রত্যেকেই স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ঘটনার সময়ে রাস্তার পাশেই ছিলেন কলকাতা পুরসভার ১০১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্ত। তিনি জানান, ওই দিন
রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ ই এম বাইপাস ধরে সল্টলেকের দিক থেকে পাটুলির দিকে তীব্র গতিতে আসছিল গাড়িটি। বেণুবনছায়ার কাছে আচমকাই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেটি সোজা ধাক্কা মারে একটি বাতিস্তম্ভে। গাড়ির গতি এতটাই বেশি ছিল যে ধাক্কা দেওয়ার পরে সেটি শূন্যে উঠে যায়। এর পরে সম্পূর্ণ উল্টে গিয়ে রাস্তায় আছড়ে পড়ে সেটি। বাতিস্তম্ভটিও রাস্তা থেকে উপড়ে যায়। আগুন লেগে যায় গাড়ির একাংশে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, কাউন্সিলর এবং এক দল যুবক ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন রক্তাক্ত অবস্থায় কাতরাচ্ছেন ওই চার জন। গাড়ির একাংশে আগুন লেগে গিয়েছে। দ্রুত খবর দেওয়া হয় দমকলকে। একটু পরে ঘটনাস্থলে চলে আসে পুলিশও। স্থানীয় সূত্রে খবর, প্রথমে গাড়িটি সোজা করে রাস্তায় দাঁড় করান সকলে মিলে। তার পরে দরজা ভেঙে একে একে উদ্ধার করা হয় আহতদের।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, ই এম বাইপাসের ধারে একটি রোস্তোরাঁয় খাওয়া-দাওয়া সেরে বাড়ি ফিরছিল ওই পরিবার। তখন একটি গাড়িতে ধাক্কা মারে রতনবাবুর গাড়ি। এর পরেই গাড়ি না থামিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন চালক গৌতমবাবু। তীব্র গতিতে বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালাতে গিয়ে ঘটে যায় দুর্ঘটনা।
রাস্তার পাশে কেন রয়েছে ওই সব বাতিস্তম্ভ, এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়ে। কাউন্সিলরের দাবি, রাস্তার ওই অংশে আগে রেলিং ছিল না। বাতিস্তম্ভ দিয়েই রাস্তা ভাগ করা থাকত। রেলিং হয়ে যাওয়ার পরে একটিই বাতিস্তম্ভ ছিল রাস্তায়, যেখানে স্পিডোমিটার বসিয়েছিল পুলিশ। গাড়িটি সেখানেই ধাক্কা দেয়। সেটি না থাকলে গাড়িটি সোজা রেলিংয়ে গিয়ে ধাক্কা দিত। তাতে আরও বড় কোনও দুর্ঘটনা ঘটতে পারত বলে আশঙ্কা পুলিশের।
গত শনিবার, ই এম বাইপাসে প্রগতি ময়দান থানা এলাকায় বেপরোয়া ভাবে মোটরবাইক চালিয়ে দুর্ঘটনায় মারা যায় এক কিশোর। শহরের বুকে একের পর এক পথ দুর্ঘটনা অবিরাম ঘটে চলেছে। তার পরেও সাধারণ মানুষের সচেতনতা
ও পুলিশের নজরদারিতে খামতি রয়েছে বলে মনে করছেন ওই এলাকার বাসিন্দারা।