নাড়িনক্ষত্র জেনেই কার্ডে জালিয়াতি

গল্ফ ক্লাবের বাসিন্দা মনীষা ভট্টাচার্য এক দিন মধ্যরাতে জানতে পারেন, তাঁর ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে কেউ বা কারা পরপর কেনাকাটা করে চলেছে। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই কার্ডটি ‘ব্লক’ করে দেন তিনি।

Advertisement

সুনন্দ ঘোষ

শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০১৭ ১২:৩০
Share:

প্রতীকী ছবি।

গল্ফ ক্লাবের বাসিন্দা মনীষা ভট্টাচার্য এক দিন মধ্যরাতে জানতে পারেন, তাঁর ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে কেউ বা কারা পরপর কেনাকাটা করে চলেছে। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই কার্ডটি ‘ব্লক’ করে দেন তিনি।

Advertisement

গত ৫ মে রাতের ওই ঘটনার পরে প্রায় প্রতি দিনই যে তাঁর কার্ড ব্যবহার করার চেষ্টা হয়েছে, তা-ও বুঝতে পারেন মনীষা। ব্লক করে দেওয়া কার্ডের জন্য প্রতি দিন ওটিপি (ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড)-ও এসেছে মনীষার মোবাইলে। কার্ড ব্লক ছিল বলেই নিশ্চিন্তে ছিলেন তিনি। কিন্তু, ১৩ মে রাতে সৌদি আরবের একটি মোবাইল নম্বর থেকে তাঁর স্বামী দেবাশিস ভট্টাচার্য একটি হোয়াটসঅ্যাপ বার্তা পাওয়ার পরে শঙ্কিত মনীষা সোমবার যাদবপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।

মনীষা বলেন, ‘‘ওই ঘটনার পর থেকে লাগাতার আমার কার্ডটি ব্যবহার করার চেষ্টা হয়েছে। না পেরে শেষে আমার স্বামীর হোয়াটসঅ্যাপে আমার কার্ডের বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে রসিকতা করে লিখে পাঠানো হয়েছে, ‘স্যার। প্লিজ সেভ ইওর কার্ড।’ সেখানে আমার নাম, মোবাইল নম্বর, ঠিকানা, কার্ড নম্বর ছাড়াও কার্ডের সিভিভি নম্বরও রয়েছে। এই সিভিভি নম্বরটি খুব গোপনীয় বলেই জানতাম। কী করে সেই নম্বর বাইরে চলে গেল, তা-ও বুঝতে পারছি না।’’

Advertisement

দেবাশিসও পুরোপুরি অন্ধকারে। তাঁর কথায়, ‘‘মনীষার কার্ড ব্যবহার করে যে জালিয়াতি হয়েছে, তা নতুন নয়। কিন্তু যারা এটা করছে, তারা এটাও জানে যে, মনীষা আমার স্ত্রী। যার অর্থ, শুধু মনীষা নয়, আমার পরিবারের যাবতীয় তথ্য তাদের কাছে রয়েছে। এটা তো আশঙ্কার কথা।’’

এই মুহূর্তে দেশ জুড়ে সাইবার হানার আশঙ্কার কাঁটা হয়ে রয়েছে সবাই। মনীষার ঘটনা তার আগেই ঘটেছে। প্রায় সাড়ে ছ’হাজার টাকায় বিদেশের বিভিন্ন সাইট থেকে কেনাকাটা করা হয়। মনীষার কথায়, ‘‘ওই রাতে দু’বার এসএমএস পেয়ে ভাগ্যিস ঘুম ভেঙে গিয়েছিল। দেখি, দু’টি সাইট থেকে কেনাকাটা হয়েছে। ব্লক করতে যেটুকু সময় লেগেছিল, তার মধ্যে আরও চার বার কেনাকাটা হয়ে যায়। ঘুম না ভাঙলে তো তিন লক্ষ টাকার কেনাকাটা করে নিত!’’ ওই টাকা কি পুলিশ তাঁকে ফিরিয়ে দিতে পারবে? এটা ভেবেই মনীষা তখন আর পুলিশের কাছে যাননি। সোমবার যাদবপুর থানার পুলিশ তাঁর সামনে থেকে সৌদি আরবের ওই নম্বরে ফোন করলেও তা বেজে যায়।

সাইবার অপরাধ বিশেষজ্ঞ রাজর্ষি রায়চৌধুরীর মতে, একটি সম্ভাবনা হল, মনীষা-দেবাশিসের অনেক তথ্য সম্ভবত সোশ্যাল মিডিয়ায় রয়েছে। সেখান থেকেই হ্যাকারেরা তা পেয়েছে। মনীষা যে দেবাশিসের স্ত্রী, তা বুঝে নিতে সে ক্ষেত্রে সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
দ্বিতীয় সম্ভাবনা হল, ওঁদের অতি পরিচিত এমন কেউ এই ঘটনায় যুক্ত, যিনি সৌদি আরবের নম্বর ব্যবহার করছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন