শারদোৎসবের বর্ণময় পরিসমাপ্তি। রেড রোডে, মঙ্গলবার। —নিজস্ব চিত্র।
বন্দোবস্ত ছিল ২০ হাজার দর্শকের জন্য। সংখ্যাটা ঠিক কোথায় পৌঁছলো বলা কঠিন। কিন্তু রেড রোডের দু’ধারে তৈরি হওয়া অস্থায়ী ছাউনিগুলোর তলায় চেয়ার যত জন পেলেন, তার দ্বিগুণ মানুষকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেল। তার পরেও ধর্মতলা চত্বর থেকে রেড রোডে পৌঁছনোর সব রাস্তার মুখে উপচে পড়া ভিড় উৎসাহীদের। রেড রোডে আর জায়গা নেই, ঢুকতে দেওয়া যাবে না— বোঝাতে হিমশিম পুলিশ।
বিসর্জন কার্নিভালকে ঘিরে উৎসাহ-উদ্দীপনার ছবিটা এই রকমই ছিল মঙ্গলবার। বিকেল পাঁচটায় শোভাযাত্রা শুরু হওয়ার কথা ছিল। দর্শকাসনে পৌঁছনোর শেষ সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল সাড়ে চারটেয়। তার পরে আর কাউকে ঢুকতে দেওয়া হবে না রেড রোডে, জানিয়েছিল পুলিশ। মুখ্যমন্ত্রী নিজেও পৌঁছে গিয়েছিলেন ৪টে ৫০ নাগাদ। কিন্তু ডেডলাইন বহাল রাখা গেল না। ভিড়ের চাপে সন্ধে ছ’টার পরও ঢুকতে দিতে হল অনেককেই। তাঁদের কেউ শেষ পর্যন্ত উৎসবের রাস্তার কিনারায় পৌঁছতে পারলেন, কেউ মাঝপথেই আটকে পড়লেন, কেউ গজগজ করতে করতে ফিরলেন।
কেমন জমজমাট ছিল এ বারের কার্নিভাল, দেখে নিন:
মোট ৬৮টি পুজো কমিটি অংশ নিল এ বারের কার্নিভালে। বর্ণময় মিছিল, সুসজ্জিত ট্যাবলো, চোখ জুড়নো প্রতিমা আর রেড রোড ঘিরে সুশৃঙ্খল ব্যবস্থাপনা— এর মধ্যে দিয়েই উদ্যাপিত হল এ বারের কার্নিভাল। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে চলল শোভাযাত্রা। গতবারের মতোই এ বারও রেড রোড থেকে বেরিয়েই বাবুঘাটের দিকে নিরঞ্জনের পথে চলে গেল প্রতিমা।
আনন্দবাজার ওয়েবসাইটের তরফে বেশ কিছুক্ষণ ফেসবুকে লাইভ সম্প্রচার হল এ বারের কার্নিভালের। রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে তো বটেই, রাজ্যের বাইরে থেকে বং বিদেশ থেকেও দর্শকদের সাড়া মিলল লাইভ চলাকালীন।
আরও পড়ুন: রেড রোডে বিসর্জনের কার্নিভাল
সরকারি উদ্যোগেও ফেসবুক লাইভ হয়েছে এ বারের কার্নিভালের। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, সেই লাইভ সম্প্রচার ঘিরেও উৎসাহ দেখা গিয়েছে প্রবল।
আরও দেখুন: রেড রোড থেকে আমাদের ফেসবুক লাইভ
টুকরো টুকরো ছবি আর ডিজিটাল সম্প্রচারে দর্শকদের এই সাড়া দেওয়ার বহর প্রমাণ করছে, ২০১৬ সালে প্রথম বিসর্জন কার্নিভাল দেখার পর থেকে দ্বিতীয় সংস্করণটার জন্য মুখিয়ে ছিলেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। কলকাতা এবং শহরতলির নানা প্রান্ত থেকে তো বটেই, বিভিন্ন জেলা থেকেও অনেকে এ দিন কলকাতায় এসেছিলেন কার্নিভালের সাক্ষী থাকতে। পুজোর ক’দিনে ভিড় ঠেলে গোটা কলকাতায় প্যান্ডেল হপিং সম্ভব হয়নি যাঁদের পক্ষে, রেড রোডের ধারে দাঁড়িয়েই তাঁদের অনেকে এ দিন মিটিয়ে নিলেন আফসোস।