দূষণ ছড়াচ্ছে পুলিশের গাড়িই, মামলা

গাড়ির ধোঁয়া মহানগরে দূষণ ছড়াচ্ছে কি না, তা দেখার দায়িত্ব কলকাতা পুলিশের। কিন্তু সেই লালবাজারের বিরুদ্ধেই দূষণ ছড়ানোর অভিযোগে মামলা হল কলকাতার জাতীয় পরিবেশ আদালতে।

Advertisement

শিবাজী দে সরকার ও কুন্তক চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০১:১০
Share:

গাড়ির ধোঁয়া মহানগরে দূষণ ছড়াচ্ছে কি না, তা দেখার দায়িত্ব কলকাতা পুলিশের। কিন্তু সেই লালবাজারের বিরুদ্ধেই দূষণ ছড়ানোর অভিযোগে মামলা হল কলকাতার জাতীয় পরিবেশ আদালতে। বিপ্লব চৌধুরী নামে এক ব্যক্তির অভিযোগ, কলকাতায় নথিভুক্ত করতে হলে গাড়িতে ভারত স্টেজ (বিএস)-৪ ইঞ্জিন থাকতে হয়। কিন্তু লালবাজার বিএস-৩ ইঞ্জিনের গাড়ি বর্ধমানে নথিভুক্ত করিয়ে কলকাতায় ব্যবহার করছে। বিপ্লববাবুর দাবি, কয়েক বছর আগে কয়েক কোটি টাকা খরচ করে বিএস-৩ গাড়ি কেনে লালবাজার। তিনি তথ্য জানার অধিকার আইনের সাহায্যে এ কথা জেনেছেন। মামলার প্রেক্ষিতে মুখ্যসচিব, দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ, কলকাতা পুলিশ, বর্ধমানের আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিক ও বর্ধমানের জেলাশাসকের থেকে রিপোর্ট চেয়েছে পরিবেশ আদালতের বিচারপতি প্রতাপ রায় এবং বিশেষজ্ঞ-সদস্য পি সি মিশ্রের ডিভিশন বেঞ্চ। আগামী মঙ্গলবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি।

Advertisement

বিপ্লববাবুর আইনজীবী সুকান্ত চক্রবর্তী এবং শকাব্দ রায় জানান, কলকাতায় বিএস-৪ গাড়ি বাধ্যতামূলক করা নিয়ে সরকারি নির্দেশ রয়েছে। লালবাজারের কর্তারা তা মানছেন না।

দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ সূত্রে খবর, কলকাতার বায়ুদূষণের মাত্রা লাগামছাড়া। মাত্রাতিরিক্ত দূষণে হাঁপানি, শ্বাসরোগ, ফুসফুসের ক্যানসারের আশঙ্কা বাড়ছে। দূষণের সব থেকে বড় কারণ যানবাহনের ধোঁয়া। যানদূষণ বিশেষজ্ঞ সৌমেন্দ্রমোহন ঘোষ বলেন, ‘‘বিএস-৩ থেকে অনেক বেশি দূষণ ছড়ায়। পুলিশ এমন গাড়ি ব্যবহার করে আইনকে বুড়ো আঙুল দেখাচ্ছে।’’

Advertisement

কলকাতার রাস্তায় অনেকেরই অভিজ্ঞতা, দিনে-রাতে সবুজ-সাদা ডোরাকাটা গাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন পুলিশকর্মীরা। ট্রাক, লরি কিংবা অন্যান্য গাড়ির ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণ ও পরিবেশ ছাড়পত্র রয়েছে কি না, তা পরীক্ষা করেন তাঁরা। নথিপত্র ঠিক না থাকলে জরিমানাও করেন। এক পরিবেশকর্মীর প্রশ্ন, ‘‘পুলিশ যদি নিজেই দূষণ ছড়ায়, তা হলে তার অন্যকে ধরার নৈতিক অধিকার থাকে কি?’’ পুলিশের একাংশই বলছেন, এ শহরের বহু থানার ওসি-র গাড়িই বর্ধমানে নথিভুক্ত করানো।

লালবাজারের কর্তাদের একাংশের দাবি, এ কাজ বেআইনি নয়। অবশ্য এটা যে অনৈতিক এবং ওই গাড়ি যে বাড়তি দূষণ ছড়ায়, তা স্বীকার করেছেন তাঁরা। তাঁদের ব্যাখ্যা, এর আগে গাড়ির যে বরাদ্দ এসেছিল, তা দিয়ে বিএস-৪ গাড়ি কেনা সম্ভব ছিল না। তবে বছর দুয়েক ধরে কলকাতা পুলিশ সব বিএস-৪ ইঞ্জিনের গাড়ি কিনছে বলে লালবাজারের একাংশের দাবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন