CBSE

CBSE: সিবিএসই-র বহু পাঠ্যবই অমিল, ক্লাস শুরুর মুখে সঙ্কটে ছাত্রছাত্রীরা

এই যুক্তি মানতে নারাজ অনেক অভিভাবক। তাঁদের বক্তব্য, আইসিএসই বা আইএসসি-র পড়ুয়ারা তো সব বই-ই ঠিক মতো পাচ্ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০২২ ০৪:৪৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হতে চলেছে সিবিএসই এবং সিআইএসসিই বোর্ডের অনুমোদিত স্কুলগুলিতে। কিন্তু অভিযোগ, সিবিএসই বোর্ডের বিভিন্ন শ্রেণির বহু পাঠ্যবই বাজারে অমিল। ফলে, নতুন ক্লাসে উঠে তালিকা মিলিয়ে বই কিনতে গিয়ে সব বই পাচ্ছে না পড়ুয়ারা।

Advertisement

সিবিএসই পাঠক্রমের বই তৈরির দায়িত্বে রয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ প্রতিষ্ঠান ‘ন্যাশনাল কাউন্সিল অব এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং’ (এনসিইআরটি)। কলেজ স্ট্রিটের যে বিক্রেতারা সিবিএসই পাঠক্রমের বই রাখেন তাঁরা জানাচ্ছেন, দিল্লি থেকে এনসিইআরটি-র বই খুব কম আসছে। ১০০টি বইয়ের বরাত দিলে আসছে হয়তো ৩০টি। কিছু বই আবার পাওয়াই যাচ্ছে না। বিক্রেতাদের একাংশ এ-ও জানাচ্ছেন, কোনও কোনও শ্রেণির সব পাঠ্যবই এনসিইআরটি এখনও ছাপিয়ে উঠতে পারেননি বলেই তাঁরা জানতে পেরেছেন।

আর এই জাঁতাকলে পড়ে সব চেয়ে বেশি ভুগতে হচ্ছে পড়ুয়াদের। অভিযোগ, সিবিএসই অনুমোদিত শহরের একটি স্কুলের নবম শ্রেণির পড়ুয়ারা বুক লিস্ট পেলেও সেখানে ইংরেজি বইয়ের নামই এখনও ঠিক হয়নি! ফলে বিভ্রান্তিতে ওই পড়ুয়ারা। এ দিকে, এপ্রিলের প্রথম থেকে শুরু হয়ে যাচ্ছে তাদের ক্লাস। কিছু ছাত্রী জানাচ্ছে, গত বছর যে ইংরেজি বইটি তাদের পাঠ্য ছিল, এ বারও সেই বইটিই কিনতে হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষকেরা। আবার কিছু শিক্ষক তাঁদের ছাত্রছাত্রীদের বলেছেন আরও কিছু দিন অপেক্ষা করে ইংরেজি পাঠ্যবই কিনতে। কারণ, ইংরেজির নতুন পাঠ্যবই আনতে চলেছে এনসিইআরটি। স্বভাবতই পড়ুয়াদের প্রশ্ন, তারা কোন বই কিনবে? কিছু স্কুলের পড়ুয়াদের আবার সরাসরি স্কুল থেকেই বই কিনতে হয়। সেই বইও সব সময়ে পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ।

Advertisement

কলেজ স্ট্রিটে প্রায় ৩০ বছর ধরে পাঠ্যপুস্তকের ব্যবসা করছেন সুরেন্দ্র আগরওয়াল। তিনি বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত সিবিএসই-র পাঠ্যবই সত্যিই কম। এই বইগুলি দিল্লি থেকে প্রথমে পানিহাটি ডিপোয় আসে। সেখান থেকে বিভিন্ন এজেন্টরা ওই সব বই দোকানে দোকানে সরবরাহ করেন। কিন্তু এ বার পানিহাটিতেই এখনও পর্যন্ত পাঠ্যবই এসেছে খুব কম। আরও শুনছি, ইতিহাস, ভূগোলের মত কিছু বিষয়ে নতুন করে পাঠ্যক্রম তৈরি করছে এনসিইআরটি। এর ফলে সব বই এখনও পাওয়া যাচ্ছে না।’’ বইপাড়ার কয়েক জন পাঠ্যপুস্তক বিক্রেতা আবার জানালেন, গত দু’বছর করোনা পরিস্থিতি থাকায় সে ভাবে বই ছাপায়নি এনসিইআরটি। পাঠ্যবই ছাড়াই অনেকে অনলাইনে পড়াশোনা করেছে। এখন আবার নতুন করে পাঠ্যবই ছাপার কাজ শুরু হয়েছে। অর্ডারও আসছে অনেক বেশি। ফলে, সব বই বাজারে আসতে সময় লাগছে।

যদিও এই যুক্তি মানতে নারাজ অনেক অভিভাবক। তাঁদের বক্তব্য, আইসিএসই বা আইএসসি-র পড়ুয়ারা তো সব বই-ই ঠিক মতো পাচ্ছে। তা হলে এনসিইআরটি-র পাঠ্যবই নিয়ে এত সমস্যা কেন?

তবে এই মুহূর্তে সব পাঠ্যবই না পাওয়ার সমস্যার সমাধান করেছেন কিছু শিক্ষক। তাঁরা জানিয়েছেন, এনসিইআরটি-র সমস্ত বই তাদের ওয়েবসাইটে গিয়ে বিনামূল্যে ডাউনলোড করা যায়। পাঠ্যবই বাজারে আসা পর্যন্ত সেই ভাবে বই ডাউনলোড করে পড়তে পারবে ছাত্রছাত্রীরা। কিন্তু সেখানেও প্রশ্ন তুলেছে অনেক পড়ুয়া। তাদের মতে, বই ডাউনলোড করে তার প্রিন্ট নিতে খরচ অনেক। অত খরচ তারা করবে কেন? সব চেয়ে বড় কথা, দু’দিন বাদে যেখানে অফলাইন ক্লাস শুরু হতে চলেছে, সেখানে কেন তারা দোকানে গিয়ে পাঠ্যবই পাবে না?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন