উড়াল-বিপর্যয়ে কয়েক দিনের মধ্যেই চার্জশিট

বিবেকানন্দ রোড উড়ালপুল ভেঙে পড়ার মামলায় চলতি সপ্তাহেই চার্জশিট পেশ করতে চলেছে পুলিশ। নিয়ম অনুযায়ী, ৯০ দিনের মধ্যে প্রথম চার্জশিট জমা দেওয়ার কথা তদন্তকারীদের। কাল, বুধবার ঘটনার ৯০ দিন পূর্ণ হচ্ছে।

Advertisement

শিবাজী দে সরকার

শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৬ ০২:৪৩
Share:

বিবেকানন্দ রোড উড়ালপুল ভেঙে পড়ার মামলায় চলতি সপ্তাহেই চার্জশিট পেশ করতে চলেছে পুলিশ। নিয়ম অনুযায়ী, ৯০ দিনের মধ্যে প্রথম চার্জশিট জমা দেওয়ার কথা তদন্তকারীদের। কাল, বুধবার ঘটনার ৯০ দিন পূর্ণ হচ্ছে। লালবাজার সূত্রের খবর, ওই চার্জশিটে উড়ালপুলের নির্মাতা সংস্থা আইভিআরসিএল-এর অভিযুক্ত কর্তাদের নাম থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। সঙ্গে আর কার কার নাম যুক্ত হবে, তা চূড়ান্ত হবে রেল ইন্ডিয়া টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকনমিক সার্ভিস (রাইটস) এবং হায়দরাবাদের ন্যাশনাল টেস্ট হাউসের রিপোর্ট পাওয়ার পরে। তদন্তকারীদের আশা, কিছু দিনেই ওই দুই সংস্থার রিপোর্ট পেয়ে যাবেন তাঁরা। প্রাথমিক তদন্তে কেএমডিএ-র গাফিলতি পেয়েছে পুলিশ। তবে কেএমডিএ-র যে আধিকারিকেরা নজরদারিতে ছিলেন, তাঁদের নাম চার্জশিটে থাকবে কি না, সিদ্ধান্ত হবে রিপোর্ট এলে। পুলিশ জানায়, আপাতত তাঁদের নাম রাখা হচ্ছে না। থাকছে না নকশাকারের নামও। তা ছাড়া, চার্জশিটে এই ঘটনাকে খুন নয়, অনিচ্ছাকৃত খুন বলে দেখানো হতে পারে।

Advertisement

দ্রুত ওই দুই সংস্থার রিপোর্ট চেয়ে আগেই আদালতে আবেদন করেছিলেন তদন্তকারীরা। আদালত তাদের যত দ্রুত সম্ভব রিপোর্ট দিতে বলেছিল। সেই রিপোর্ট এলে অতিরিক্ত চার্জশিট দেওয়া হবে। লালবাজার জানাচ্ছে, কী কারণে ওই উড়ালপুল ভেঙে পড়েছিল, তা জানতে চাওয়া হয়েছিল রাইটসের কাছে। রাইটসের পাঁচ সদস্যের বিশেষজ্ঞ দল ঘটনাস্থল পরির্দশন করে। ভেঙে পড়া উড়ালপুলের বিভিন্ন অংশ পাঠানো হয়েছিল ন্যাশনাল টেস্ট হাউসে।

লালবাজার সূত্রের খবর, চার্জশিটে দুই সংস্থার ব্যর্থতা এবং গাফিলতির কথাই বলা হচ্ছে। উড়ালপুল তৈরিতে ব্যবহৃত ইস্পাত যে নিম্ন মানের ছিল, তা ব্যবহারের আগেই পরীক্ষায় ধরা পড়েছিল। তা সত্ত্বেও সেই ইস্পাত দিয়েই তৈরি হয়েছিল উড়ালপুলের ৪০ নম্বর স্তম্ভ। ওই ইস্পাতের মান পরীক্ষার রিপোর্ট দেখেও আইভিআরসিএল এবং কেএমডিএ কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় তাদের নজরদারির অভাব স্পষ্ট ছিল বলে দাবি তদন্তকারীদের।

Advertisement

গত ৩১ মার্চ বিবেকানন্দ উড়ালপুল ভেঙে ২৬ জনের মৃত্যু হয়। পুলিশের তদন্তকারী দল নির্মাণকারী সংস্থার (আইভিআরসিএল) চার ইঞ্জিনিয়ারকে গ্রেফতার করে। পরে গ্রেফতার হন ওই সংস্থার আরও ছ’জন।

জঞ্জাল সরাতে আর্জি। বিবেকানন্দ উড়ালপুলের ভবিষ্যৎ নিয়ে এখনও স্পষ্ট দিশা নেই রাজ্যের। কবে কী ভাবে উড়ালপুল মেরামত হবে, সিদ্ধান্ত হয়নি। বিপর্যয়ের তিন মাসের মাথায় সবে ভেঙে পড়া অংশের ধ্বংসস্তূপ সরানোর তোড়জোড় শুরু হল সরকারি স্তরে।

দুর্ঘটনার পর থেকে রাস্তার ধারেই পড়ে আছে ভাঙা উড়ালপুলের জঞ্জাল। যার জন্য স্থানীয় ব্যবসায়ীরা দোকান খুলতে পারছেন না। এ বার ব্যবসায়ীরা দ্বারস্থ হয়েছেন কেএমডিএ-র। উড়ালপুলের ধ্বংসস্তূপ সরাতে অনুরোধ করেন তাঁরা। কিন্তু ওই জঞ্জাল সরানোর মতো পরিকাঠামো নেই পুর-নগরোন্নয়ন দফতরের। রাজ্যের মুখ্যসচিবকে সে কথা জানান পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। সোমবার তিনি বলেন, ‘‘ওই ধ্বংসস্তূপ সরানোর মতো লোক আমার দফতরে নেই। পুরসভাকে দিয়ে কাজটা করাতে মুখ্যসচিবকে তাই অনুরোধ করেছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন