মা কই, হোমের ঘরে কেঁদেই চলেছে শিশু

পুলিশ জানিয়েছে, রিয়াজ ওড়িশাতে রাজ মিস্ত্রির কাজ করছেন। এ দিকে পুলিশ জানিয়েছে, আত্মঘাতী সোনালির বাপেরবাড়ি বহরমপুরে। সেখানেও খবর দেওয়া হয়েছে। তদন্তে নেমে প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জেনেছে, রিয়াজ বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে টাকা ধার করেছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:২৬
Share:

রাতভর মায়ের জন্য কান্নাকাটি করেছে বছর চারেকের শিশুটি। হোমের সুপার তাকে সামলানোর চেষ্টা করেছেন বিভিন্ন ভাবে। কিন্তু সে কান্না থামেনি। পরদিন সকালে তাই হোমের আরও শিশুদের মাঝে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল তাকে। একাধিক বাচ্চা আর খেলনা পেয়ে কান্না থেমেছে ঠিকই, কিন্তু সে আর কতক্ষণের জন্য! খেলা তো থামবেই একটা সময়ে। তখন ফের মায়ের জন্য কেঁদে উঠবে সে। তবে আপাতত তাকে ভোলানোর যাবতীয় চেষ্টা করে চলেছেন ওই হোম কর্তৃপক্ষ। আজ, রবিবার কলকাতা শিশু কল্যাণ সমিতির কাছে ওই শিশুকে হাজির করাবে কলকাতা চাইল্ডলাইন।

Advertisement

শুক্রবার গার্ডেনরিচ থানার পাহাড়পুর রোডে মাকে চোখের সামনে আত্মঘাতী হতে দেখেছিল বছর চারেকের এই শিশুটিই। প্রথমে মা কী করছেন, বোঝার ক্ষমতা না থাকলেও পরে কান্না শুরু করে দিয়েছিল শিশুটি। পড়শিরা এসে ওই ঘরে শিশুটির মা সোনালি হালদারের (২৪) ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান। পরে পুলিশ এসে উদ্ধার করে ওই তরুণীর দেহ। কিন্তু সোনালির স্বামী রিয়াজ নিখোঁজ থাকায় দুধের শিশুকে পুলিশ কলকাতা চাইল্ডলাইনের হাতে তুলে দেয়। পরে কলকাতা শিশু কল্যাণ সমিতির নির্দেশে রাতেই ইলিয়ট রোডের একটি হোমে রাখার ব্যবস্থা করা হয় শিশুটিকে। পুলিশ খোঁজ শুরু করে সোনালির স্বামী রিয়াজের। তাঁর সন্ধান মেলে শুক্রবার রাতেই।

পুলিশ জানিয়েছে, রিয়াজ ওড়িশাতে রাজ মিস্ত্রির কাজ করছেন। এ দিকে পুলিশ জানিয়েছে, আত্মঘাতী সোনালির বাপেরবাড়ি বহরমপুরে। সেখানেও খবর দেওয়া হয়েছে। তদন্তে নেমে প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জেনেছে, রিয়াজ বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে টাকা ধার করেছিলেন। সেই টাকা না মিটিয়েই বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান অন্যত্র কাজের নামে। যাওয়ার আগে মোবাইলটিও স্ত্রীর কাছে রেখে গিয়েছিলেন। পুলিশের অনুমান, পাওনাদারেরা ওই মোবাইলে ফোন করে টাকার জন্য তাগাদা দিতেন সোনালিকে। সেই অপমান সহ্য করতে না পেরেই সোনালি চরম পথ বেছে নেন বলে অনুমান পুলিশের। রিয়াজকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই সব পরিষ্কার হবে বলে দাবি তদন্তকারীদের। পুলিশের দাবি, শুক্রবার রাতে রিয়াজের নম্বর পেয়ে তাঁকে ফোন করা হয়েছিল। তখন রিয়াজ ফোনে ছেলের খবর নেন এবং স্ত্রীর মৃতদেহ সংরক্ষণ করে রাখার কথাও বলেন। কিন্তু তার পরে আর তাঁকে ফোনে পাওয়া যায়নি বলে পুলিশের দাবি। ওড়িশার কোথায় রয়েছেন তিনি, সে ব্যাপারেও অন্ধকারে পুলিশ। এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘শুক্রবার রাতের পর থেকেই রিয়াজের ফোন বন্ধ। না এলে ফোনের সূত্র ধরে ফের খোঁজ শুরু হবে।’’

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন